Advertisement
E-Paper

সমকামী সম্পর্কে রাজি নন, রাগে যুবককে গলা টিপে খুনের অভিযোগ তান্ত্রিকের বিরুদ্ধে, বর্ধমানে গ্রেফতার

সূত্রের খবর, মিলনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, জিতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিলেন মিলন। কিন্তু জিৎ সেই সম্পর্ক চালিয়ে যেতে রাজি না থাকার কারণেই মিলন তাঁকে খুন করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪ ১৭:১০
(বাঁ দিকে) নিহত যুবক জিৎ দানা। অভিযুক্ত তান্ত্রিক মিলন নাইয়া (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) নিহত যুবক জিৎ দানা। অভিযুক্ত তান্ত্রিক মিলন নাইয়া (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

সমকামী সম্পর্ক চালিয়ে যেতে রাজি না হওয়ায় যুবককে খুনের অভিযোগ উঠল এক তান্ত্রিকের বিরুদ্ধে। পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে ঘটনাটি ঘটেছে। পেশায় রাজমিস্ত্রি মৃত যুবকের নাম জিৎ দানা (১৯)। তাঁর বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের গলসির খেতুড়া গ্রামে। অভিযুক্ত তান্ত্রিকের নাম মিলন নাইয়া। বাড়ি গলসি বাজারের ল্যাওলাপুল এলাকায়। অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে গলসি থানার পুলিশ। সোমবার তাঁকে বর্ধমান আদালতে তোলা হয়।

সূত্রের খবর, মিলনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, জিতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিলেন মিলন। কিন্তু জিৎ সেই সম্পর্ক চালিয়ে যেতে রাজি না থাকার কারণেই মিলন তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন। এ প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের জেলা পুলিশ সুপার আমন দীপ জানিয়েছেন, ধৃত তান্ত্রিকের সঙ্গে সমকামী সম্পর্ক ছিল নিহত যুবক জিতের। শনিবার রাত থেকেই নিখোঁজ ছিলেন জিৎ। রবিবার সকালে জিতের বাড়ির লোকজন অভিযুক্তকে জেরা করে জানতে পারেন, তাঁর দেহ সামনের একটি জমিতে পড়ে রয়েছে। জিতের দেহ উদ্ধার করে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন পরিবারের সদস্যরা। জিতের কপালে, বুকে এবং পেটে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। গলায় ফাঁসের চিহ্নও ছিল। এর পরেই অভিযুক্ত তান্ত্রিক মিলনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশের অনুমান, শনিবার রাতে দু’জনের মধ্যে অশান্তির জেরেই জিৎকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন মিলন। পুলিশ ইতিমধ্যেই জিতের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ধৃত তান্ত্রিক মিলন নিজেকে মা কালীর সাধক বলে দাবি করতেন। পরিচয় দিতেন তান্ত্রিক হিসাবে। মিলন বিভিন্ন ধরনের তন্ত্রসাধনা এবং ঝাড়ফুঁক করতেন বলেও স্থানীয়দের দাবি। রবিবার সকালে সেই মিলনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জিতের দেহের খোঁজ মেলে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ডিভিসি সেচখালের পাশে গলসির দয়ালপুর এবং সারুলের মাঠে একটা ঝোপের পাশে জিতের উলঙ্গ দেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জিতের দেহ যেখান থেকে পাওয়া গিয়েছে, তার পাশেই একটি কালীমন্দির রয়েছে। বছরে এক বার সেখানে পুজো হয়।

জিতের বাবা সমীর দানা পেশায় পুরুলিয়ার একটি চালকলের কর্মী। তিনি বলেন, “আমার স্ত্রী শারীরিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন। বছর খানেক আগে স্ত্রীকে মিলন তান্ত্রিকের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম তন্ত্রসাধনার জন্য। সেই থেকে ওর সঙ্গে পরিচয়। তারপর থেকে আমাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করত মিলন।”

জিতের মা মিতা বলেন, “ওই তান্ত্রিকের চালচলন ঠিক মনে হয়নি। তাই বাড়িতে আসাতে নিষেধ করেছিলাম। ছেলেকেও মেলামেশা করতে বারণ করা হয়েছিল। আমার ছেলেকে ওই তান্ত্রিক খুন করে দিতে পারে স্বপ্নেও ভাবিনি।”

মৃতের মাসি রূপা গড়াই বলেন, “রবিবার সকাল পর্যন্ত জিৎ বাড়ি না ফেরায় সন্দেহ হয়। ওই তান্ত্রিকের কাছেই আমরা গিয়েছিলাম। ওর কথায় সন্দেহ হয় আমাদের। তান্ত্রিকের সঙ্গে যে মহিলা ছিলেন, তাঁর মোবাইল যাচাই করে জানতে পারি শনিবার রাতে জিতকে তিনি ছ’বার ফোন করেছিলেন। এর পরেই ওদের চেপে ধরার পর খুনের ঘটনা জানতে পারি।”

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা সুভাষ পালিতের কথায়, “সবাই চাপ দিতেই তান্ত্রিক জানিয়ে দেয় জিতের দেহ কোথায় পড়ে রয়েছে। আমরা ছুটে গিয়ে প্রথম পোশাকগুলি দেখতে পাই। খোঁজাখুঁজি করে দেহ মেলে।”

Tantrik Boy Killed By Tantrik Galsi Bardhaman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy