ভাড়াটেদের সঙ্গে গোলমালের জেরে বাড়িওয়ালাকে মারধরের ঘটনা ঘটেছিল মাসখানেক আগে। দুই মহিলা গুরুতর আহত হয়েছিলেন বলেও অভিযোগ। পরে সাত ভাড়াটের নামে মারধর, ধারালো অস্ত্র নিয়ে আঘাত, খুনের চেষ্টা ইত্যাদির অভিযোগও দায়ের করেন ওই বাড়িওয়ালা, আনিসুর রহমান। অভিযুক্তদের মধ্যে চার জন আগাম জামিন পেলেও তিন জনের আবেজন নামঞ্জুর করেন বিচারক। তারপরে দু’সপ্তাহেরও বেশি পেরিয়ে গেলেও পুলিশ ওই তিন জনকে গ্রেফতার করে নি বলে তাঁর অভিযোগ।
জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল অবশ্য বলেন, ‘‘ওই তিন জনকে ধরার জন্য আমি ইতিমধ্যে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি। কেন এখনও ওই তিন জন গ্রেফতার হয়নি তার খোঁজ নেব।” অন্য দিকে বর্ধমান থানার আইসি আব্দুল গফ্ফর খান বলেন, “আমি যতদুর জানি ওই তিন অভিযুক্তকে ধরতে পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। তবে এখনও তাদের পাওয়া যায়নি।”
বর্ধমানের বীরহাটা পুলিশ ফাঁড়ির কাছে অবস্থিত ব্যারাকবাড়ি নামে ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে বাড়িওয়ালার গোলমাল চলছে। আনিসুর রহমানের অভিযোগ, গত ১ মার্চ তিনি ওই বাড়িতে ঢুকতে গেলে তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েকজনকে ওই ভাড়াটিয়ারা মারধর করেন। দুজ’ন গুরুতর আহতও হন। পরে তিনি অভিযোগে জানান, ওই এলাকায় যে ১৩টি ঘর রয়েছে, তার আটটি ঘরে ভাড়াটিয়ারা থাকলেও পাঁচটি বর্তমানে খালি। খালি ঘরগুলির দখল নিয়ে পরিষ্কার করতে গেলে তাঁকে ও তাঁর সঙ্গে থাকা লোকেদের ওই ভাড়াটেরা বাধা দেয়। বচসা বাধে। পরে তাঁদের মারধরও করা হয়। আহতদের বধর্মান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় বলেও তাঁর দাবি। তাঁর অভিযোগে মোট সাতজনের নাম ছিল। পুলিশ ওই অভিযোগ হাতে পেয়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১, ৩২৩, ৩২৫, ৩২৬, ৩০৭, ৩৭৯, ৩৫৪ বি, ৫০৬ ও ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করে। সাত জনই বর্ধমান জেলা জজ আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানান। গত ২৩ মার্চ চারজনের আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর হলেও, অভিযুক্ত অশোক দে, গণেশ দে ও অজয় সরকারের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে দেয় আদালত। তারপরেই পুলিশ তাঁদের ধরেনি বলে আনিসুরদের অভিযোগ। আনিসুরের আরও দাবি, ‘‘ওরা প্রতিদিন ভয় দেখাচ্ছে। বাড়িতে মদের বোতল পর্যন্ত ছোঁড়া হচ্ছে। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না।” অভিযুক্ত তিন জনের মধ্যে গণেশ দে তৃণমূলের পরিষদীয় সচিব উজ্জ্বল প্রামাণিকের গাড়ির চালক বলে অভিযোগ আনিসুরদের।
তবে উজ্বলবাবু বলেন, “গণেশ আমার গাড়ির চালক সে কথা ঠিক। কিন্তু ওই গোটা ব্যাপারটার সঙ্গে আমার কোনও যোগাযোগ নেই। পুলিশকে আমি গণেশকে ধরতে বারণও করিনি।’’