Advertisement
E-Paper

স্ত্রীকে খুনের অস্ত্র দেখিয়ে দিল হায়দর

শনিবার রাত ১টা নাগাদ উত্তরপল্লির বাড়িতে হায়দরকে নিয়ে যায় পুলিশ। হায়দার তদন্তকারীদের জানায়, খুন করার পরে হাতুড়ি ও ছুরি ধুয়ে পলিথিনের প্যাকেটে মুড়ে সিঁড়ির ঘরে রেখে দিয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৭ ০৩:৩৭
আদালতে শেখ হায়দর। নিজস্ব চিত্র

আদালতে শেখ হায়দর। নিজস্ব চিত্র

যে বাড়ির উঠোন খুঁড়ে মিলেছিল রিনা বেগমের দেহ, শনিবার গভীর রাতে সেই বাড়ির সিঁড়ির ঘুপচি ঘর থেকে হাতুড়ি ও ছুরি উদ্ধার করল পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, মাথায় ওই হাতুড়ি বাড়ি মেরে ও পরে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রীকে খুন করেছে শেখ হায়দর। তাকে সঙ্গে নিয়ে ওই রাতেই পুলিশ বেনাচিতির উত্তরপল্লির ভাড়া বাড়িতে গিয়ে খুনের ঘটনার পুনর্নিমাণ করায়। ছিলেন বাড়ির মালিক তরুণ রায়ও।

বৃহস্পতিবার রাতে তরুণবাবুকে ফোন করে হায়দর দাবি করে, মঙ্গলবার রাতে স্ত্রীকে খুন করে দেহ পুঁতে দিয়েছে। শুক্রবার সকালে উঠোন খুঁড়ে দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিকেলে গ্রেফতার করা হয় নানুরের পোশলার বাসিন্দা হায়দরকে। পেশায় রাজমিস্ত্রি হায়দার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে নিয়ে কয়েক বছর ধরে ভাড়া ছিল ওই বাড়িতে। সম্প্রতি ছেলেমেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি নানুরের নিমড়া গ্রামে যান রিনা। গত রবিবার তিনি একাই ফেরেন দুর্গাপুরে। পুলিশের দাবি, জেরায় হায়দর দাবি করেছে, স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে অশান্তি থেকেই এই খুন। যদিও রিনার পরিবারের দাবি, হায়দারের একাধিক সম্পর্কের প্রতিবাদ করেই খুন হয়েছেন রিনা।

শনিবার রাত ১টা নাগাদ উত্তরপল্লির বাড়িতে হায়দরকে নিয়ে যায় পুলিশ। হায়দার তদন্তকারীদের জানায়, খুন করার পরে হাতুড়ি ও ছুরি ধুয়ে পলিথিনের প্যাকেটে মুড়ে সিঁড়ির ঘরে রেখে দিয়েছিল। সেখান থেকেই সে দু’টি উদ্ধার করে পুলিশ। একটি কোদালও পাওয়া যায়। কোদাল ও শাবল দিয়ে উঠোন খুঁড়েছিল সে। যে ঘরে রিনা খুন হয়েছেন, সেখানে বিছানায় শুধু তোশক ছিল। জেরায় হায়দার আগেই জানিয়েছিল, তার এক নাবালক সহকারীর মাধ্যমে সে বিছানার রক্তমাখা চাদর সরিয়ে দিয়েছে। সেই কিশোরের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে, বুধবার সকালে হায়দরের কথা মতো ছেলেটি একটি পলিথিনের ‘সিল’ করা প্যাকেট ডিএসপি টাউনশিপের এ-জোনে কনিষ্ক রোডের ধারে একটি ভ্যাটে ফেলে দেয়। পুলিশ যাওয়ার আগেই অবশ্য সাফাইকর্মীরা ভ্যাট পরিষ্কার করে ফেলায় পুলিশ তা পায়নি। সেটির খোঁজে পুলিশ যায় শঙ্করপুরে পুরসভার বর্জ্য জমা করার জায়গায়। তত ক্ষণে তা যন্ত্র চালিয়ে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এক পুলিশকর্তা জানান, হায়দার তদন্তে সহযোগিতা করছে। এখনও অবধি বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেনি বলেই মনে হচ্ছে। তবে খুনের পরে সে পালিয়ে যাওয়ার মতলবই এঁটেছিল বলে মনে করছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, দেহ চাপা দিয়ে বুধবার সকাল পর্যন্ত নিপুণ ভাবে উঠোনে মার্বেল বসিয়েছে সে। বাড়িওয়ালার বাজারও এনে দিয়েছে। রিনার বাড়ির লোকজন নিখোঁজ ডায়েরি করার সময় সে-ও ফাঁড়িতে গিয়েছিল। সে দিনই অবশ্য এলাকা ছাড়ে।

পুলিশ সূত্রের খবর, হায়দরের মোবাইল ট্র্যাক করে জানা গিয়েছে, প্রথমে সে বীরভূমের খয়রাশোলে গিয়েছিল। এর পরে কলকাতায় যায়। মাঝে তিন বার মোবাইলের সিম বদলায়। তা থেকেই পুলিশ মনে করছে, ভিন্ রাজ্যে পালানোর ছক কষেই সে এগোচ্ছিল। কোনও কারণে ভেঙে পড়ে সে বৃহস্পতিবার রাতে বাড়িওয়ালাকে ফোন করে জানায়, সে স্ত্রীকে খুন করে দেহ পুঁতে দিয়েছে। পরদিন বিকালে সে দুর্গাপুর ফিরতেই পুলিশ তাকে ধরে।

Murder Arms
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy