Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ডাকঘর খুলল চার ঘণ্টা পরে, হয়রান গ্রাহক

মাসের প্রথম দিন। কেউ এসেছিলেন পেনশন তুলতে। কেউ মাসিক প্রকল্পের টাকা তুলতে। আবার কেউ বাইরে থাকা আপনজনের কাছে মানি অর্ডার করে টাকা পাঠাতে। বেলা গড়িয়ে দুপুর হতে চলল। তবু ডাকঘরের দরজা খুলল না। এ দিকে গ্রাহকদের ভিড়ও বেড়ে চলল লাফিয়ে লাফিয়ে। মাথার উপরে চড়া রোদ উপেক্ষা করেও তাঁরা দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হলেন। শুধু তাঁরাই নন, বড় ডাকঘর থেকে চিঠির থলি নিয়ে আসা কর্মীও ঠায় বাইরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকলেন।

রোদেই অপেক্ষা।—নিজস্ব চিত্র।

রোদেই অপেক্ষা।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৫ ০১:১৭
Share: Save:

মাসের প্রথম দিন। কেউ এসেছিলেন পেনশন তুলতে। কেউ মাসিক প্রকল্পের টাকা তুলতে। আবার কেউ বাইরে থাকা আপনজনের কাছে মানি অর্ডার করে টাকা পাঠাতে।

বেলা গড়িয়ে দুপুর হতে চলল। তবু ডাকঘরের দরজা খুলল না। এ দিকে গ্রাহকদের ভিড়ও বেড়ে চলল লাফিয়ে লাফিয়ে। মাথার উপরে চড়া রোদ উপেক্ষা করেও তাঁরা দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হলেন। শুধু তাঁরাই নন, বড় ডাকঘর থেকে চিঠির থলি নিয়ে আসা কর্মীও ঠায় বাইরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকলেন। দিনের খরচ মেটানোর টাকা দিতে আসা ভ্যান ডাকঘরের দরজা বন্ধ দেখে ফিরেই গেল।

সোমবার এই ঘটনা আসানসোলের ধাদকা এলাকার উপ-ডাকঘরের। শেষমেশ কর্তৃপক্ষের সম্বিত ফিরল দুপুর দু’টো নাগাদ। তড়িঘড়ি বড় ডাকঘর থেকে অস্থায়ী দুই আধিকারিককে সেখানে পাঠিয়ে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু যে দরজা সকাল ১০টা থেকে খোলার কথা তা প্রায় চার ঘণ্টা পরে খোলায় যথেষ্ট হয়রান হয়ে গিয়েছেন গ্রাহকেরা। পরিষেবা না পেয়ে ফিরেও গিয়েছেন অনেকে। ডাকঘরের এমন পরিষেবা নিয়ে এ দিন এলাকায় যথেষ্ট ক্ষোভ তৈরি হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা এর তদন্ত দাবি করেছেন। তবে গ্রাহক হয়রানির এমন কারণ কী, সে নিয়ে একেবারে মুখ খুলতে চাননি ডাকঘর কর্তৃপক্ষ।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সত্তোরর্ধ্ব নরেশচন্দ্র রক্ষিত দাঁড়িয়ে আছেন রোদের মধ্যে। তিনি বলেন, ‘‘মাসিক প্রকল্পের টাকা তুলতে এসেছি। মাসের প্রথম দিন সংসারের খরচ আছে। কিন্তু কর্মীরা কেউই আসেননি।’’ রোদ-গরম থেকে বাঁচতে নাকে-মুখে রুমাল বেঁধেও পার পাচ্ছিলেন না তিনি। পেনশন তুলতে এসেছিলেন প্রাক্তন সরকারি কর্মী দুনিয়া রায়। তাঁরও এক অবস্থা। তিনি বলেন, ‘‘সকাল সকাল কাজ সেরে বাড়ি ফিরব ঠিক করেছিলাম। দুপুর গড়িয়ে গেল। টাকাও পেলাম না। ভিন্ রাজ্যে গ্রামের বাড়িতে পরিজনকে মানি অর্ডার করে টাকা পাঠাতে এসেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা অজয় গড়াই। তিনি বলেন, ‘‘ডাকঘর খোলেনি। তাই আজ কাজ হল না। আবার এক দিন আসতে হবে।’’ বন্ধ ডাকঘড়ের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ডাককর্মী মেঘনাদ টুডু। তিনি বলেন, ‘‘বড় ডাকঘর থেকে চিঠি বোঝাই থলি এনেছি। কেউ নেই, তাই দিতে পারছি না। ফিরিয়ে নিয়ে যেতেও পারছি না।’’

দুপুর ২টো নাগাদ দেখা গেল, বড় ডাকঘড় থেকে দুই আধিকারিক এসে পৌঁছলেন। তাঁদের হাতেই ডাকঘরের দরজার চাবির গোছা। এ দিনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সম্রাট সেনগুপ্তকে এ দিনের ঘটনা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এই ডাকঘরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক অগ্নিবাণ মণ্ডল অসুস্থ। তাই তিনি আসতে পারেননি।’’ কিন্তু, এই বিষয়টি কর্তৃপক্ষ আগে জেনে ব্যবস্থা নিলেন না কেন? সম্রাটবাবু জানান, এ নিয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না। যা বলার বড় ডাকঘরের সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট টি এন মজুমদার বলবেন। সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্টের সঙ্গে বড় ডাকঘরে গিয়ে দেখা করতে চাওয়া হলে তাঁর দফতরের তরফে জানানো হয়, তিনি বৈঠকে ব্যস্ত আছেন। এর পরে বিকেল ৬টা পর্যন্ত তাঁর দফতরে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ব্যস্ত রয়েছেন জানিয়ে ফোন কেটে দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

post office money summer asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE