Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Pradhan Mantri Awas Yojana

সমীক্ষার পরেও আবাস তালিকায় প্রশ্ন জামুড়িয়ায়

হিজলগড়া পঞ্চায়েতের বীরকুলটির তৃণমূল সদস্য সুকান্ত গড়াই জানান, তাঁরা দু’ভাই বাবার দু’কামরার বাড়িতে থাকেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৪৭
Share: Save:

কেউ পাকা বাড়িতে থাকেন। অথচ আবাস যোজনার তালিকায় নাম রয়েছে। কেউ অপরের পরিত্যক্ত ঘরে বাস করছেন। তবু এ বার তালিকায় নাম ওঠেনি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ব্লক প্রশাসনের তরফে আবাস যোজনার তালিকা পরীক্ষার পরেও কী ভাবে এমনটা হল, সে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে জামুড়িয়ায়।

হিজলগড়া পঞ্চায়েতের বীরকুলটির তৃণমূল সদস্য সুকান্ত গড়াই জানান, তাঁরা দু’ভাই বাবার দু’কামরার বাড়িতে থাকেন। তাঁর স্ত্রী ২০১৮ সালে সরকারি প্রকল্পে বাড়ির জন্য পঞ্চায়েতে লিখিত আবেদন করেছিলেন। তাঁর স্ত্রীর নাম নথিভুক্ত হয়। ব্লকের প্রতিনিধিরা ঘুরে যাওয়ার পরে তালিকা থেকে স্ত্রীর নাম বাতিল হয়ে যাবে বলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ তাঁকে জানিয়েছেন। সুকান্ত জানান, আর্থিক অবস্থা ভাল না হওয়া সত্ত্বেও, শুধু পঞ্চায়েত সদস্যের স্ত্রী হিসেবে নাম বাদ গেলে তাঁর আপত্তি নেই। কিন্তু বীরকুলটিতেই প্রায় ১৫ জনের পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও তাঁদের নাম তালিকায় রয়ে গিয়েছে, অভিযোগ তাঁর। আবার, এক দিনমজুর সস্ত্রীক বীরকুলটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে বাস করেন। চার বছর আগে রাজ্য সরকারের প্রকল্পে পাট্টায় জমি পেয়েছেন। কিন্তু এ বার তাঁর নামও আবাস যোজনায় তালিকাভুক্ত হয়নি বলে অভিযোগ। সুকান্তের দাবি, “দিদির দূত কর্মসূচিতে যাঁরা বাড়ি-বাড়ি যাবেন, তাঁরা পাড়ায়-পাড়ায় বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়তে পারেন।”

বিজেপির জামুড়িয়া ২ মণ্ডল সভাপতি রমেশ মণ্ডল দাবি করেন, তাঁরা দলের তরফে সমীক্ষা করে ইতিমধ্যে পাঁচটি পঞ্চায়েতে ২৫ জনকে খুঁজে পেয়েছেন, যাঁদের পাকা বাড়ি থাকলেও আবাস যোজনা থেকে নাম বাদ যায়নি। মদনতোড় পঞ্চায়েতের তালতোড় গ্রামের বৃদ্ধা নিভা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁর দুই ছেলে। তিনি মাটির দেওয়াল ও টিনের চালের পৃথক বাড়িতে থাকেন। পরপর দু’বার তাঁর বাড়িতে ব্লক প্রশাসনের প্রতিনিধিরা এসে সমীক্ষা করে গিয়েছেন। তার পরে তিনি জানতে পারেন, তাঁর নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। নিভার অভিযোগ, তালতোড়ে বেশ কিছু পাকা বাড়ির মালিকের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে চিঠি লিখেও বিষয়টি নিষ্পত্তির আবেদন জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।

বিরোধীশূন্য হিজলগড়া পঞ্চায়েতের সদস্য গোরা চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ব্লক প্রশাসন আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের কোনও প্রশিক্ষণ না দিয়েই বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষার কাজ করিয়েছে। তাড়াহুড়োয় কাজ করতে গিয়ে এই অবস্থা হয়েছে। গোরা বলেন, “আমরা ব্লক প্রশাসনকে আবেদন করেছি, কোনও রাজনৈতিক রং না দেখে অযোগ্যদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। তা না হলে পঞ্চায়েত ভোটের আগে বাসিন্দাদের রোষে আমাদের পড়তে হতে পারে।”

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পাকা ছাদ, বড় গাড়ি, এক লপ্তে অনেকটা জমি রয়েছে বা সরকারি চাকরি করেন, এ রকম উপভোক্তাদের নাম তালিকায় থাকছে না। এই ধরনের ১৫টি বিষয়ের নিরিখে আবাস যোজনায় যোগ্য হিসেবে বিবেচিত করা হয়েছে।বিডিও (জামুড়িয়া) জিষ্ণু দে জানান, সব বিষয় খতিয়ে দেখে নাম বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pradhan Mantri Awas Yojana Jamuria
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE