আইবুড়োভাত খাওয়ানো হচ্ছে বিডিওকে। ছবি: ভিডিয়ো থেকে সংগৃহীত।
সামনের টেবিলে সাজানো রয়েছে নানা রকমের পদ। বিডিওকে আইবুড়োভাত খাওয়াচ্ছেন স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী। দিচ্ছেন চন্দনের ফোঁটাও। আর ওই নেত্রীকে প্রণাম করছেন বিডিও। পূর্ব বর্ধমানের এই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়াতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। শুক্রবারই এই ঘটনার ভিডিয়ো পোস্ট করে রাজ্যের শাসকদলকে আক্রমণ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, গোটাটাই ‘সৌজন্যের বিষয়’। আর বিডিও রজনীশকুমার যাদবের বক্তব্য, ওই তৃণমূল নেত্রী ‘মায়ের মতো’। তাই প্রণাম করেছেন।
পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান ১ নম্বর ব্লকের বিডিও রজনীশ। খুব শীঘ্রই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছেন তিনি। তার আগে ‘বিডিও সাহেব’-এর আইবুড়োভাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানের ভিডিও প্রথমে এক তৃণমূল কর্মী সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তার পর তা দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ে। শুভেন্দুর পোস্ট করা ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, টেবিলের সামনে বিভিন্ন খাবার মালা দিয়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। পাঞ্জাবি এবং গলায় মালা পরে তৃণমূল নেত্রী তথা বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদ (বিডিএ)-র চেয়ারম্যান কাকলি তা গুপ্তের কাছ থেকে চন্দনের ফোঁটা নিচ্ছেন বিডিও। তার পর ওই নেত্রীকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করছেন। উপস্থিত রয়েছেন এলাকার ‘দাপুটে নেতা’ বলে পরিচিত মানস ভট্টাচার্যও। (যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)
আইবুড়োভাত খাওয়ানোর ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই সরব হয়েছে বিরোধী শিবির। কী ভাবে সরকারি দফতরে এক জন প্রশাসনিক আধিকারিকের আইবুড়োভাতের অনুষ্ঠান করতে পারেন শাসকদলের নেতা-নেত্রীরা, সেই প্রশ্ন তুলছেন বিরোধী নেতারা। শুভেন্দু ভিডিয়োটি পোস্ট করে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লিখেছেন, “এটা অবাক করার মতো বিষয় নয় যে, রাজ্যের শাসকদল এবং প্রশাসনের মধ্যে থাকা সীমারেখাটা বরাবরই অস্পষ্ট। এ বার তা পুরোপুরি মুছে গিয়েছে।”
বিডিও অবশ্য জানিয়েছেন, সরকারি দফতরে আইবুড়োভাতের অনুষ্ঠান হয়নি। যদিও তৃণমূল নেত্রী কাকলির দাবি, কাজ শেষ হওয়ার পর সরকারি দফতরেই আইবুড়োভাত পর্বের আয়োজন করা হয়েছিল। শুভেন্দু লিখেছেন, পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে এই আয়োজন হয়েছিল। তৃণমূলের এক নেত্রীকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা প্রসঙ্গে বিডিও বলেন, “কাকলি তা সিনিয়র মানুষ। মায়ের মতো। তাই ওঁর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছি।’’ কাকলিও এর মধ্যে অন্যায়ের কিছু দেখেননি। তিনি বলেন, “ছোট ছেলেরা আয়োজন করেছিল।” স্থানীয় বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রের কটাক্ষ, “আসলে সরকারি আধিকারিকেরা দলদাসে পরিণত হয়েছেন। এটা তার জ্বলন্ত উদাহরণ।” রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাসের পাল্টা, “এটা তো সৌজন্যের বিষয়। এতে দোষের কী আছে?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy