E-Paper

অভীকের সূত্রেই অবাধ গতি টিএমসিপি নেতার

আর জি কর কাণ্ডে তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনার তিন সপ্তাহ পার। গোড়া থেকেই আন্দোলনে বসেছেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজর জুনিয়র চিকিৎসকেরা।

সৌমেন দত্ত , সুপ্রকাশ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২৬
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

রাজ্য মেডিক্যাল কলেজ কাউন্সিলের সদস্য, এসএসকেএমের পিজিটি অভীক দে-র হাত ধরে বর্ধমান মেডিক্যালে অবাধ যাতায়াত ছিল পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি স্বরাজ ঘোষের, এমনই দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের অভিযোগ, রাজ কলেজে টিএমসিপির দুই গোষ্ঠীর মারামারি বাধলে বর্ধমান মেডিক্যাল থেকে স্বরাজ-গোষ্ঠীর হয়ে জুনিয়র চিকিৎসকেরা যেতে বাধ্য হতেন। আবার মেডিক্যাল কলেজের ক্যান্টিন ও প্রতিলিপি কেন্দ্র স্বরাজ ঘনিষ্ঠরাই চালাতেন। অভিযোগের শিকড় খুঁজতে গিয়ে জানা গিয়েছে, অভীক না কি টিএমসিপির রাজ্য স্তরের পদেও ছিলেন।

এ নিয়ে বিতর্ক বাড়ায় সোমবার রাতে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, যত দিন ওই বিষয়টির তদন্ত শেষ হচ্ছে, তত দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হচ্ছে অভীককে।

আর জি কর কাণ্ডে তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনার তিন সপ্তাহ পার। গোড়া থেকেই আন্দোলনে বসেছেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজর জুনিয়র চিকিৎসকেরা। স্বাস্থ্য প্রশাসনের দুর্নীতিতে বর্ধমান-শাখার নাম উঠে এসেছে। অভীকের সঙ্গে স্বরাজের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, মেডিক্যাল কলেজের ভিতরে অভীকের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন স্বরাজ। পাশে দাঁড়িয়ে কেক কেটেছেন, মোমবাতি জ্বালিয়েছেন। অন্য জায়গার একাধিক ছবিতেও অভীকের সঙ্গে স্বরাজকে দেখা গিয়েছে।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, অভীকের দৌলতে হাসপাতালে অবাধ যাতায়াত ছিল স্বরাজের। কলেজে ‘রাতের আড্ডা’তেও তাঁকে দেখা গিয়েছে। সেই কারণেই রাজ কলেজে টিএমসিপির দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল হলে স্বরাজ-গোষ্ঠীর হয়ে মেডিক্যালের চিকিৎসক-পড়ুয়ারা ছুটে গিয়েছেন। গোষ্ঠী-রাজনীতির শিকার হতে হয়েছে চিকিৎসক-পড়ুয়াদের।

বিরোধীদের অভিযোগ, কয়েক দিন আগে পিস্তল (লাইসেন্স থাকা) হাতে নবাবহাটের একজনকে দেখা গিয়েছিল। তিনি মেডিক্যালের ক্যান্টিন চালান। স্বরাজের ‘ঘনিষ্ঠ’ হওয়ার সুবাদেই তিনি ক্যান্টিন পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন বলে দাবি। বিজেপির চিকিৎসক-নেতা সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “অভীকের মতো প্রভাবশালীর মাথায় হাত ছিল স্বরাজের। তাঁর পরামর্শেই মেডিক্যালের ইউনিট পরিচালনা করতেন স্বরাজ। ওই ইউনিটই তো আসলে ‘বর্ধমান শাখা’র একটা অংশ। এর শিকড় অনেক দূর।”

স্বরাজ এই সব অভিযোগককে খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁর কথায়, “অভীক টিএমসিপির রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সংগঠনের সূত্রেই তাঁর সঙ্গে আলাপ। সংগঠনের নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকবে না তো অন্য সংগঠনের লোকের সঙ্গে থাকবে না মাফিয়াদের সঙ্গে থাকবে? মেডিক্যালের ইউনিট নিয়ে কথা বলতে অভীকের কাছে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি, কেক কাটা হচ্ছে। সেখান থেকে চলে আসলে কি সৌজন্য থাকত!” তিনি মনে করেন, আর জি কর কাণ্ডে বিচারের দাবির অভিমুখকে ঘুরিয়ে দিতে রাজনৈতিক-অভিসন্ধি করা হচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

East Bardhaman TMCP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy