Advertisement
E-Paper

শিক্ষকের অসম বণ্টনে সমস্যায় বহু স্কুল

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের টেট পরীক্ষার ফল প্রকাশে আদালতের স্থগিতাদেশে দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন জেলার বহু প্রাথমিক স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের অভিযোগ, এমনিতেই পড়ুয়ার তুলনায় শিক্ষক সংখ্যা কম থাকায় স্কুল চালাতে নাজেহাল দশা। তারপর নতুন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে গিয়েছে।

অর্পিতা মজুমদার

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৬ ০১:০২
শিক্ষক থাকলেও পড়ুয়ার দেখা মেলে না। —নিজস্ব চিত্র।

শিক্ষক থাকলেও পড়ুয়ার দেখা মেলে না। —নিজস্ব চিত্র।

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের টেট পরীক্ষার ফল প্রকাশে আদালতের স্থগিতাদেশে দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন জেলার বহু প্রাথমিক স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের অভিযোগ, এমনিতেই পড়ুয়ার তুলনায় শিক্ষক সংখ্যা কম থাকায় স্কুল চালাতে নাজেহাল দশা। তারপর নতুন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে গিয়েছে। যদিও জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের এক আধিকারিকের দাবি, স্কুলে শিক্ষকের অসম বন্টনেই এই অবস্থা।

খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, জেলার গ্রামীণ এলাকার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি। অথচ তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা কম। আবার শহরাঞ্চলে ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের দিকে অভিভাবকদের ঝোঁক বেশি। ফলে প্রাথমিক স্কুলগুলির অধিকাংশই পড়ুয়ার আকালে ভুগছে। শিক্ষকদের শহর বা শহরঘেঁষা এলাকায় থাকার প্রবণতা বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলেছে বলেও অনেকের দাবি। আবার অভিভাবকদের একাংশের দাবি, শিক্ষকেরা নিজের ছেলেমেয়েদের ভালো পড়াশোনা করানোর তাগিদে শহরের নামী স্কুলে ভর্তি করতে চাইছেন। ফলে বদলি হয়ে এক বার শহরে এসে গেলে কেউই আর শহরতলি বা গ্রামের দিকে ফেরার আগ্রহ দেখান না। ফলে গ্রামের স্কুলগুলি ফাঁকাই রয়ে যায়।

যেমন উখড়া আর্দশ প্রাইমারি স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ন’শো। জাতীয় শিক্ষা নীতি অনুযায়ী ৪০ জন পড়ুয়া পিছু একজন শিক্ষক থাকার কথা। সেই হিসেবে এখানে অন্তত ২৩ জন শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু আছেন মাত্র ৬ জন। স্বাভাবিক ভাবেই স্কুল চালাতে হিমসিম দশা শিক্ষকদের। এক জন অসুস্থ হলে বা প্রয়োজনে ছুটি নিলে সমস্যা আরও বাড়ে। এই ছবি জেলার বহু স্কুলেই। আবার দুর্গাপুর শহরের বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলে দেখা গিয়েছে উল্টো ছবি। যেমন, বেনাচিতির বিদ্যাসাগর পল্লি প্রাথমিক স্কুলে একসময়ে পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল বহু। শিক্ষক ছিলেন তিন জন। এখন শিক্ষক সংখ্যা এক থাকলেও পড়ুয়া দিন-দিন কমছে। গত কয়েক মাসে দিনে ১০-১৫ জন করে পড়ুয়া আসে বলে জানান ওই স্কুলের এক শিক্ষিকা। একই অবস্থা দুর্গাপুরের নবপল্লি আদর্শ বিদ্যালয় বা শালবাগান প্রাথমিক স্কুলেও।

জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের আধিকারিকেরাও মেনে নিয়েছেন, পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় বহু স্কুলেই পঠন-পাঠন ব্যহত হচ্ছে। সমস্যা হচ্ছে থেকে মিড-ডে চালু রাখাতেও। অথচ গ্রামের দিকে প্রধান ভরসা এই সব স্কুল। এই পরিস্থিতিতে কম পড়ুয়া রয়েছে এমন একাধিক প্রাথমিক স্কুলকে মিশিয়ে একটি ‘ইউনিট’ করে দেওয়ার দাবি উঠেছে। যদিও নিয়মের গেরোয় সেখানেও সমস্যা রয়েছে। কারণ বসতির এক কিলোমিটারের মধ্যে প্রাথমিক স্কুল থাকতেই হবে। যতদিন পর্যন্ত একজন পড়ুয়াও থাকবে ততদিন স্কুল চালাতেই হবে। একেবারে পড়ুয়া শূন্য হলে তবেই স্কুল বন্ধ করা যেতে পারে। সর্বশিক্ষা মিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রতি ৪০ জন পড়ুয়া পিছু এক জন করে শিক্ষক ধরলে বর্তমানে জেলায় ১৬ হাজার ২২৫ জন শিক্ষকের প্রয়োজন। অথচ শিক্ষক ও পার্শ্বশিক্ষকের মোট সংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার। কাজেই সুষম বণ্টন হলে স্থায়ী শিক্ষকের অভাব পূরণ না হলেও পার্শ্বশিক্ষক দিয়ে পঠন-পাঠন চালিয়ে নেওয়া যায় অনায়াসে। কিন্তু সেদিকে নজর না দেওয়াতেই পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। সমস্যার সমাধানে শিক্ষক ও পার্শ্বশিক্ষকদের সুষম বণ্টনের আর্জি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও ওই আধিকারিকের দাবি।

state news primary teacher recruitment primary schools
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy