আসানসোলে। —নিজস্ব চিত্র।
নিয়ম মেনে অটো চালকদের রুটের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলল আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশন। নিয়ম না মেনে অনুমোদন দেওয়ায় অটোর সঙ্গে মিনিবাসের ঝামেলা বাধতে পারে বলেও দাবি করেছে তৃণমূলের পরিবহণ কর্মী সংগঠন মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন। এ ব্যাপারে তারা সম্প্রতি মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছে।
আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের দায়ের করা একটি মামালার প্রেক্ষিতে ২০০৬ সালে মহকুমায় অটো চলাচলের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু তা সত্ত্বেও মহকুমার সর্বত্র রমরমিয়ে অটো চলেছে বলে অভিযোগ। মিনিবাস মালিকদের দাবি, মূলত আসানসোল-সহ আশাপাশের এলাকার বেকার যুবকেরা ঝাড়খণ্ড ও পুরুলিয়ার পরিবহণ দফতর থেকে নিবন্ধীকরণ করিয়ে এই শহরে অটো চালাচ্ছিলেন। শুধু তাই নয়, আসানসোল পরিবহণ দফতরের তৈরি করে দেওয়া মিনিবাসের রুটগুলিতেই বিনা বাধায় অটো চলছিল। এই অবস্থায় মিনিবাসের ব্যবসা লাটে উঠতে বসে। প্রায় দিনই বাসের কর্মীদের সঙ্গে অটো চালকদের বচসা থেকে মারামারি পর্যন্ত হয়। একাধিক বার শহরে মিনিবাস ধর্মঘটও হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মহকুমা প্রশাসন, পরিবহণ কর্মী সংগঠন, অটো চালকদের সংগঠন ও মিনিবাস মালিকপক্ষের সংগঠন একটি বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নেয়, যে সব রুটে মিনিবাস চলে না সেখানে অটো চলাচলের অনুমতি দেবে প্রশাসন। আসানসোল মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৮২ রুট চিহ্নিত করা হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই সব রুটে অটো চলাচলের অনুমোদন দেওয়া শুরু হয়।
তৃণমূলের পরিবহণ কর্মী সংগঠনের নেতা রাজু অহলুওয়ালিয়া দাবি করেন, ‘‘গোড়াতেই অভিযোগ ওঠে, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে রুটের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। তাই আমরা অনেক দিন থেকেই এই নিয়ম না মানার কথা জানিয়ে আসছি। কিন্তু কথা শোনা হচ্ছে না। এ বার যদি কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তবে প্রশাসনই দায়ী থাকবে।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অটো চালকেরা প্রথমে পরিবহণ দফতর থেকে জেনে নেবেন, কোন রুটে অটো চালানোর অনুমোদন মিলেছে। এর পরে সংশ্লিষ্ট অটো চালক সেই রুট অটোয় পরিষ্কার করে লিখবেন। সেই লেখা দেখে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পরীক্ষা করে পরিবহণ দফতরের সংশ্লিষ্ট আধিকারিক অটো চালককে রুটের অনুমোদনের কাগজটি দেবেন। রাজুবাবুর অভিযোগ, ‘‘অটো চালকেরা যে রুট পাচ্ছেন, তা অটোর গায়ে লিখছেন না। অথচ, পরিবহণ দফতর থেকে রুট অনুমোদনের কাগজপত্র বের করে নিচ্ছেন। ফলে, অটো চালকেরা মহকুমার যে কোনও প্রান্তে, এমনকী মিনিবাসের রুটেও অটো চালাচ্ছেন। আমরা মহকুমাশাসকের হস্তক্ষেপ দাবি করেছি।’’
আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায় বলেন, ‘‘মিনিবাসের রুটে অটো চলবে না— এই শর্তে আমরা অটো চালকদের রুট অনুমোদন দেওয়ার ব্যাপারে কোনও আপত্তি করিনি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘কিন্তু সেই শর্ত একেবারেই মানা হচ্ছে না। মহকুমার প্রতিটি মিনিবাস রুটেই রমরমিয়ে অটো চলছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে ফের আন্দোলনে নামব।’’ মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস জানিয়েছেন, এই বিষয়টি তাঁর জানা নেই। বিশদে খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy