ভাতার টাকা নিতে ব্যাঙ্কে অপেক্ষা। —নিজস্ব চিত্র।
সরকারি ভাতার জন্য সোমবার সকাল থেকেই ব্যাঙ্কে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের লম্বা লাইন। কিন্তু দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করেও মিলল না টাকা। প্রয়োজনীয় ই-মেল, ফোন করতে গিয়েও বিপাকে পড়লেন বহু মানুষ। বিএসএনএলের পরিষেবা ব্যাহত হওয়ায় দিনভর নাকাল হলেন কালনার বাসিন্দারা।
তাঁদের অভিযোগ, শুধু সোমবার নয়, সমস্যার শুরুটা হয় শুক্রবার সকালে। বিএসএনএলের মোবাইল, ল্যান্ডফোন, ইন্টারনেট পরিষেবা সকালে আচমকা বিকল হয়ে পড়ে। ফোন যাওয়া-আসা, ইন্টারনেট ব্যবহার, সব কার্যত থমকে যায়। বিভিন্ন সরকারি অফিস, ব্যাঙ্কে কাজ ব্যাহত হয়। দুপুরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও পরের দিন সকাল থেকেই ফের একই সমস্যা শুরু হয় বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। লিঙ্কের সমস্যার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলতে না পেরে ফিরে আসতে হয় বহু গ্রাহককে। সমস্যা চরম আকার নেয় সোমবার। কালনা শহর ও শহরতলিতে থাকা ব্যাঙ্কগুলিতে শুরু থেকেই লম্বা লাইন পড়ে যায় এ দিন। কিন্তু ইন্টারনেট পরিষেবা না থাকায় ব্যাঙ্কে লেনদেন বন্ধ হয়েযায়। বেশ কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ভাতার টাকা তুলতে না পেরে ফিরে যেতে হয় বহু বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে।
শহরের জাপট এলাকার বাসিন্দা ৬৫ বছরের সতীরানি সরকার জানান, শুক্রবার দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বসে থেকেও সরকারি ভাতার টাকা তুলতে পারেননি। আজও দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ফিরে গিয়েছেন। একই অভিযোগ কাঠিগঙ্গার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব প্রিয়বালারও। কয়েক ঘণ্টা লাইন দিয়েও টাকা না মেলায় বিরক্ত সাধারণ গ্রাহকেরাও। কন্যাশ্রী-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের টাকা এসেছে কি না, তা জানতে ব্যাঙ্কে এসেছিল বেশ কিছু স্কুল পড়ুয়া। তাদেরও ফিরে যেতে হয় শুকনো মুখে। ফোন, ইন্টারনেট পরিষেবা না পেয়ে অনেকে অভিযোগ জানাতে গিয়ে যান বিএসএনএলের কালনা মহকুমা কার্যালয়ে। কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা দেখেন, পরিষেবা নেই কার্যালয়েও। লিঙ্ক না থাকায় টেলিফোনের বিল জমা নিতে পারেননি বিএসএনএলের কর্মীরাই। লিঙ্ক না থাকায় ডাকঘরে গিয়েও হয়রান হতে হয় সাধারন মানুষকে।
তবে বিএসএনএলের এক আধিকারিক জানান, রেলের সেতু নির্মাণের কাজের সময় করতে গিয়ে বর্ধমান সদরে ও রাস্তার কাজ করতে গিয়ে মেমারির সাতগাছিয়া এলাকায় মাটির নিচে অপটিক্যাল ফাইবার কেটে যাওয়ায় জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। কর্তাদের দাবি, সোমবার কাটোয়া-সহ বেশ কিছু এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। বিএসএনএলের কালনা মহকুমা আধিকারিক রূপনাথ সরেনের আশ্বাস, মঙ্গলবারের মধ্যে কালনার পরিস্থিতিও স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy