Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Education

অ্যাক্টিভিটি টাস্ক তৈরি নিয়ে ‘সমস্যা’, ক্ষুব্ধ শিক্ষকেরা

স্কুলগুলিতে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, আগের বার অভিভাবকদের মাধ্যমে পড়ুয়াদের যে ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ দেওয়া হয়েছিল তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য এ বার মিড-ডে মিলের সামগ্রী বিলির সময়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে জমা নিয়ে নিতে হবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২০ ০০:৫৪
Share: Save:

মিড-ডে মিলের সামগ্রী বিলি হবে আজ, শুক্রবার থেকে। অভিভাবকদের হাতে মিড-ডে মিলের সামগ্রী দেওয়ার পাশাপাশি, ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ তৈরি করে স্কুলগুলিকেই দিতে হবে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর থেকে স্কুলগুলিকে পাঠানো এই নির্দেশিকার জেরে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

স্কুলগুলিতে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, আগের বার অভিভাবকদের মাধ্যমে পড়ুয়াদের যে ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ দেওয়া হয়েছিল তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য এ বার মিড-ডে মিলের সামগ্রী বিলির সময়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে জমা নিয়ে নিতে হবে। একই সঙ্গে নতুন ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ তুলে দিতে হবে তাঁদের হাতে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানিয়েছেন, আগের দু’বার যে ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ দেওয়া হয়েছে, তা শিক্ষা দফতর থেকে সরবরাহ করা হয়েছিল। ফলে, সমস্যায় পড়তে হয়নি। কিন্তু এ বার তা প্রস্তুত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্কুলগুলিকেই। এই মর্মে ২৭ জুলাই জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর থেকে ই-মেলের মাধ্যমে নির্দেশিকা জারি হয়। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের অভিযোগ, কিন্তু সেই ই-মেল সম্ভবত সময়ে স্কুলের হাতে আসেনি। সংশ্লিষ্ট হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে তাঁরা সেই নির্দেশিকার কথা জানতে পেরেছেন ২ অগস্ট। মিড-ডে মিলের সামগ্রী বিলি শুরু হচ্ছে আজ, শুক্রবার থেকে। এত কম সময়ের মধ্যে সব বিষয়ের সব পড়ুয়ার জন্য ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ তৈরি করা সমস্যার, বলে জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

সমস্যা কোথায়? শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানিয়েছেন, অনেকেই বহু দূর থেকে স্কুলে আসেন। তাঁদের অনেকের কাছে বিষয়ভিত্তিক পাঠ্যপুস্তক নেই। ফলে, তাঁরা বাড়িতে ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ তৈরি করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন। স্কুলে গিয়ে এক দিনে সব শ্রেণির জন্য ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ তৈরি করে ফেলা সম্ভব নয়। আবার এক-এক জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে তিন-চারটি করে শ্রেণির ক্লাস নিতে হয়। ‘সেকশন’ ভাগ থাকলে ক্লাসের সংখ্যা আরও বাড়ে। বহু স্কুলেই এক একটি শ্রেণিতে দু’শোর বেশি পড়ুয়া রয়েছে। এত অল্প সময়ে এত শ্রেণির এত জন পড়ুয়ার জন্য ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ কী ভাবে তৈরি করা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন ‘নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতি’র জেলা সম্পাদক অমিতদ্যুতি ঘোষ বলেন, ‘‘হাতে নির্দিষ্ট সময় না থাকায় চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। এক দিকে, মিড-ডে মিলের কিছু সামগ্রীর ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। অন্য দিকে, আবার ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ তৈরির কাজ। পর্যাপ্ত সময় পেলে সুষ্ঠু ভাবে কাজ করতে পারতেন তাঁরা।’’ ‘তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি’র জেলা সভাপতি রাজীব মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘অসুবিধা হলেও পড়ুয়াদের কথা ভেবে নিজেদের উদ্যোগী হয়ে কাজ শেষ করে ফেলতে হবে।’’

এত দেরিতে কেন নির্দেশিকা পাঠানো হল? সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অজয় পাল। তিনি বলেন, ‘‘পড়ুয়ারা যাতে বঞ্চিত না হয় সে জন্য করোনা-পরিস্থিতিতে সবাইকে একটু বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। নির্দিষ্ট দিনে কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকা যদি ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ অভিভাবকদের হাতে তুলে দিতে না পারেন, তা হলে তিনি যেন যত দ্রুত সম্ভব তা করে দেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education Mid-Day Meal School
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE