Advertisement
E-Paper

রাস্তা কেটে অবরোধ, ভাঙচুর

ট্রাকের চাকা থেকে ছিটকে আসা পাথরের টুকরোয় দিন কয়েক আগে জখম হয়েছিল এক কিশোর। শনিবার সে ফের অসুস্থ হয়ে পড়ায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৪৮
লাঠি, রড হাতে চলছে অবরোধ। শনিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র

লাঠি, রড হাতে চলছে অবরোধ। শনিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র

ট্রাকের চাকা থেকে ছিটকে আসা পাথরের টুকরোয় দিন কয়েক আগে জখম হয়েছিল এক কিশোর। শনিবার সে ফের অসুস্থ হয়ে পড়ায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এর পরেই ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা মৃতদেহ রেখে বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন। অবরোধ চলাকালীন পাশের সিউড়ি বাইপাস রোডের মোড়ে রাস্তা কেটে দেওয়া হয়। তছনছ করা হয় অদূরে জেলা পরিষদের টোল আদায়ের অফিসও। ছবি তুলতে গিয়ে আক্রান্ত হন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। বর্ধমান ও দেওয়ানদিঘি থানা থেকে পুলিশের বড় বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ভাস্কর ঘোড়ুইয়ের (১২) বাড়ি বর্ধমানের পালিতপুর গ্রামে। বৃহস্পতিবার পালিতপুর মোড় থেকে সিউড়ি বাইপাস রোড দিয়ে বাড়ি যাওয়ার সময়ে একটি পাথর ছিটকে তার বুকে লাগে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে সে দিন তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ দিন সকালে সে ফের অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাসপাতালের পথে পালিতপুর মোড়ে তার মৃত্যু হয়। এলাকাবাসীর দাবি, বেশ কয়েক বছর ধরে এই রাস্তা খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। বড়-বড় পাথর বেরিয়ে পড়েছে। জেলা পরিষদের কাছ থেকে পূর্ত দফতর হাতে নেওয়ার পরেও রাস্তার হাল ফেরেনি। উল্টে, টোলের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। রাস্তা পূর্ত দফতরের হাতে গেলেও টোল আদায় জেলা পরিষদই করছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। খারাপ রাস্তার জন্যই ওই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে দাবি করে এ দিন এক দল বাসিন্দা বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করে।

অবরোধের জেরে বর্ধমানের দিকে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। কাটোয়ার দিকেও প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তায় গাড়ি আটকে থাকে। কাটোয়া, নতুনহাট, গুসকরা, বহরমপুর রুটের প্রচুর বাস আটকে যায় দু’দিকেই। বাসের যাত্রী শ্যামলকুমার রায়, শেখ আয়নালরা বলেন, ‘‘প্রায় ৪৫ মিনিট বাসে বসেছিলাম। অবরোধ উঠছে না দেখে আমরা হেঁটে অবরোধের জায়গা পেরিয়ে যাই। তখন উল্টো দিকে থাকা বাসগুলি আমাদের নিয়ে উল্টো মুখে যেতে শুরু করে।’’

পালিতপুর গ্রামের বাসিন্দা দেবাশিস কোনার, শেখ সুজলদের অভিযোগ, ‘‘প্রায়ই এ ভাবে পাথর ছিটকে কেউ না কেউ আহত হয়। প্রশাসন সতর্ক থাকলে ১২ বছরের একটি ছেলেকে এ ভাবে প্রাণ হারাতে হত না। প্রশাসনের টনক নড়াতেই অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছে এলাকাবাসী।’’ ক্ষুব্ধ জনতা টোল আদায়ের ঘরও তছনছ করে। তার পরেই জেসিবি যন্ত্র জোগাড় করে তালিত যাওয়ার বাইপাস রাস্তাটি কেটে দেওয়া হয়। অবরোধকারীদের একাংশ হাতে চেলা কাঠ, বাঁশ, লাঠি, গাছের ডাল নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। ছবি তুলতে গেলে সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের উপরে হামলা হয়। পরে ডিএসপি (ট্রাফিক) প্রদীপ মণ্ডলের নেতৃত্বে বর্ধমান ও দেওয়ানদিঘি থানার পুলিশ গেলে অবরোধকারীরা পালিয়ে যায়।

জেলা প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা অরিন্দম নিয়োগী বলেন, ‘‘পূর্ত দফতর গিয়ে রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছে। তার পরে পুলিশ যেতেই অবরোধ উঠে গিয়েছে। কাটা রাস্তা সংস্কারের জন্য পূর্ত দফতরকে বলা হয়েছে।’’ পূর্ত দফতরের বর্ধমান ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার ভজন সরকার জানান, রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে।

Death protest Teenage Boy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy