পূর্বস্থলী ২ ব্লকের পারুলিয়ার মহিলাদের পুজো। নিজস্ব চিত্র
বেশ কয়েকটি মহিলা পরিচালিত পুজোর আয়োজন এ বার নজর কেড়েছে কালনা মহকুমায়। চাঁদা তোলা থেকে শুরু করে পুজোর সমস্ত আয়োজন করছেন তাঁরাই। ঘর সামলে এই ক’দিনের পরিশ্রম যেন হার মানে তাঁদের আনন্দের কাছে।
কালনা শহর থেকে কিছুটা দূরে রয়েছে হাটকালনা পঞ্চায়েতের গোয়াড়া গ্রাম। ১৭ বছর ধরে এ গ্রামে মহিলা সমিতির পুজো করে আসছেন মহিলারাই। এত দিন গ্রামের একটি মাঠে মণ্ডপ তৈরি করে হয়ে আসছিল সেই পুজো। এ বার গ্রামের কাঠা দুয়েক জমির উপরে মেয়েদের উদ্যোগেই তৈরি হয়েছে পাকা মন্দির। সোমবার দুর্গা মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমা চলে এসেছে। মন্দিরের সামনের অংশে পাঁচিল ঘেরা লম্বা চাতাল। উৎসব উপলক্ষে চাতালের চারপাশ বাঁশ দিয়ে ঘেরা হয়েছে।
পুজো কমিটির সদস্যরা জানান, পুজো শুরু হয়েছিল সাত জনকে নিয়ে। ধীরে ধীরে সদস্য সংখ্যা বাড়তে থাকে। মন্দির তৈরির জন্য এলাকার দাস পরিবারের তরফে ২ কাঠা জমি দান করা হয়। সে জমিতে ৭ লক্ষ টাকা খরচ করে তৈরি হয় মন্দির। এলাকাবাসীর পাশাপাশি পাশে পাওয়া যায় এলাকার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ এবং ব্যবসায়ী সুব্রত পালকেও। নিজেদের মণ্ডপের সামনে দাঁড়িয়ে সভাপতি কণিকা অধিকারী ও সম্পাদক স্মৃতি দাসরা বলেন, “বাড়িতে যত কাজ থাক না কেন গ্রামের মেয়েরা পুজোর আয়োজনে কোনও খামতি রাখে না। ঠাকুর বায়না, চাঁদা তোলা, মণ্ডপ পরিষ্কার, ভোগের আয়োজন, বিসর্জন— সব কাজ মেয়েরা করে। মেয়েরা চাইলে সব পারে। ভবিষ্যতে ইচ্ছে আছে মেয়েদের জন্য একটি ক্যারাটে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করা।”
কালনা শহরের কাঠিগঙ্গা মহিলা সমিতির পুজো হয়ে আসছে ২০০৮ সাল থেকে। এখানেও পুজোর যাবতীয় আয়োজনে থাকেন এলাকার মেয়েরাই। পুজো কমিটির সম্পাদক চন্দনা বিশ্বাস, সভাপতি কবিতা হালদারদের দাবি, পুজোর বাজার-সহ যাবতীয় পরিকল্পনা সেরে ফেলেছেন কমিটির ৩৬ জন। ঠাকুর বায়নাও দেওয়া আছে, ষষ্ঠীর দিন মণ্ডপে বসবে। পূর্বস্থলী ২ ব্লকের উমা সর্বজনীন মহিলা সঙ্ঘের পুজো এ বার ৩ বছরে পা দিল। এখানে পুজোর আয়োজনে আছেন এলাকার ২৫ জন মহিলা। কমিটির তরফে পুতুল সরকার জানান, পারুলিয়া নতুনপাড়া চিলড্রেনস পার্কে ষষ্ঠীর দিন পুজোর উদ্বোধন হবে।
পূর্বস্থলী ১ ব্লকের জাহান্নগড় পঞ্চায়েতের পরানপুর মহিলা বারোয়ারি দুর্গোৎসব কমিটির পুজো এ বার ৯ বছরে পা দিল। পুজো কমিটির সদস্য নুপুর রায়, যূথিকা অধিকারীরা বলেন, “পুরুষেরা কেউ গেঞ্জির কারখানায়, কেউ পাওয়ারলুমে কাজে ব্যাস্ত থাকেন। এলাকায় কোনও পুজো ছিল না। মেয়েরা তাই পুজোর আয়োজনে এগিয়ে আসেন। পুরুষেরা কেউ কেউ পুজোর আয়োজনে পিছন থেকে সহযোগিতা করেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy