Advertisement
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Sand Price

বিপাকে আবাস-প্রাপকেরা, বালির দাম বাঁধল প্রশাসন

প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলায় ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের উপভোক্তার সংখ্যা ৭৯,৩০৯। তাঁদের মধ্যে ৭৫ হাজারের মতো প্রাপকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তির টাকা ঢুকেছে।

বালির চড়া দাম।

বালির চড়া দাম। —ফাইল চিত্র।

কাজল মির্জা
শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ০৭:৪২
Share: Save:

তিন মাসের মধ্যে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে বাড়ির কাজ শেষ করার কথা। সেই হিসেব অনুযায়ী মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে ওই প্রকল্পে বাড়ি তৈরি করে ফেলবেন উপভোক্তারা। কিন্তু বালির দাম লাগাম ছাড়া হওয়ায় ঘোর সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। এই প্রেক্ষিতে বালিঘাটের ইজারাদার নিয়ে বৈঠক শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। বেঁধে দেওয়া হয়েছে বালির দর।

জেলায় বালির আকাল নেই। কলকাতা অভিমুখে সে ভাবে বালি বোঝাই ট্রাক যাচ্ছে না। বেআইনি অনেক খাদান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বৈধ খাদান থেকেই বালি নিতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। সেই বালি স্থানীয় এলাকাতেই কাজে লেগে যাচ্ছে। কলকাতার পথে বালি বোঝাই ট্রাক যাচ্ছে না। এই সুযোগে এক দল ব্যবসায়ী বালির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। ফলে, মাত্র ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা অনুদান পেয়ে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে ঘর তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন যাঁরা, তাঁরা পড়েছেন মহা চিন্তায়। বাড়ির কাজ আটকে গেলে দ্বিতীয় কিস্তির ৬০ হাজার টাকা তাঁরা পাবেন না। সরকার নির্ধারিত ৯০ দিনের সময়সীমার মধ্যে বাড়ি তৈরিও করতে পারবেন না।

প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলায় ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের উপভোক্তার সংখ্যা ৭৯,৩০৯। তাঁদের মধ্যে ৭৫ হাজারের মতো প্রাপকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তির টাকা ঢুকেছে। অনেকে কাজও শুরু করেছেন। উপভোক্তাদের একাংশের দাবি, জেলা প্রশাসন প্রতি ঘনফুট বালির জন্য ২১ টাকা দিচ্ছে। অথচ তাঁদের বাজার থেকে দ্বিগুণেরও বেশি দামে (৪০-৪২ টাকা প্রতি ঘনফুট) বালি কিনতে হচ্ছে। বিডিও-র কাছে তাঁরা এ নিয়ে অভিযোগ করছেন। উপভোক্তাদের একাংশের দাবি, “বালির বেশি দামের কারণেই ঘরের কাজ শুরু করতে পারছি না। এই দামে কিনতে হলে নির্মাণ খরচের অর্ধেক টাকা বালিতেই লেগে যাবে।”

জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের দাবি, “বিডিও-রা বালিঘাটের ইজারাদারদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। বালির আকাল রয়েছে, এমন অভিযোগ নেই। বালির দাম কমতে শুরু করেছে।” বৃহস্পতিবার বিডিও (গলসি) মৈত্রেয়ী ভৌমিক বলেন, “আবাস-প্রকল্পের প্রাপকেরা ঠিক মূল্যে যাতে বালি পান, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।” বালিঘাটের ইজারাদারদের নিয়ে ব্লক প্রশাসন বৈঠক করেছে। সেখানে প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, প্রতি ঘনফুট বালির দাম যাতে কোনও ভাবেই ২০-২৫ টাকার বেশি নেওয়া না হয়, সে দিকে নজর দেওয়া হবে। এক জন উপভোক্তা ৬০০ ঘনফুট বালি কিনতে পারবেন। গলসি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি হেমন্ত পাল বলেন, “বালির চড়া দাম নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। সেই কারণে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে কুপন চালু করা হতে পারে।”

প্রশসানের বেঁধে দেওয়া দরে উপভোক্তারা বালি পাবেন কি না, সে প্রশ্ন অবশ্য থেকেই যাচ্ছে। ইজারাদারদের একাংশ জানান, ৪০ হেক্টর এলাকায় পাঁচ বছর বালি তোলার জন্য ১৫০ কোটি টাকা দিতে হবে। বালি বিক্রি করে রাজস্ব দিতে হয়। এ ছাড়া অন্য খরচও রয়েছে। সে কারণেই বালির দাম বেড়েছে।’’ আর ট্র্যাক্টর চালকদের একাংশের দাবি, “গত দু’-তিন মাস ধরে বালি নিয়ে প্রশাসনের কড়াকড়ি চলছে। নদীর যত্রতত্র বালি পাওয়া যাচ্ছে না। নির্দিষ্ট ইজারাদারের থেকেই বালি কিনতে হচ্ছে। সে কারণেই দামে বাঁধন নেই।” প্রশ্ন উঠছে, বালি থেকে সরকার মোটা টাকা আয় করছে। তবে বালির দাম নিয়ন্ত্রণে তাদের নিয়ন্ত্রণ কেনথাকবে না।

অন্য বিষয়গুলি:

Galsi Awas Yojana
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy