Advertisement
E-Paper

বধূর মৃত্যুতে ফের সিবিআই তদন্ত, নির্দেশ

পুলিশ, সিআইডি, সিবিআই— এই ঘটনায় তদন্তকারী সংস্থার বদল হয়েছে বারবার। এ বার রানিগঞ্জের বধূ পুষ্পা ভালোটিয়ার অপমৃত্যুর ঘটনায় ফের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০০

পুলিশ, সিআইডি, সিবিআই— এই ঘটনায় তদন্তকারী সংস্থার বদল হয়েছে বারবার। এ বার রানিগঞ্জের বধূ পুষ্পা ভালোটিয়ার অপমৃত্যুর ঘটনায় ফের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আইনজীবীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক সিবিআই-এর কলকাতার যুগ্ম আধিকারিককে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তভার গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

৫ অক্টোবর, ২০১৭, দুপুরবেলা। রানিগঞ্জের নেতাজি সুভাষ বসু রোডের অদূরেই এক অভিজাত বাড়ি থেকে গুলির আওয়াজ শোনেন এলাকাবাসী। খানিক বাদে পুলিশ এসে বাড়ির রান্নাঘরের কাছে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভালোটিয়া পরিবারের বধূ পুষ্পার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে।

এই ঘটনায় গত বছরের ১৯ নভেম্বর চার্জশিট জমা করে সিআইডি। কিন্তু বধূর দাদা গোপাল আগরওয়ালের আইনজীবী পার্থসারথি সেনগুপ্ত ও সোমপ্রিয় চৌধুরী জানান, ময়না-তদন্তের রিপোর্টের সঙ্গে চার্জশিটে ঘোরতর অসঙ্গতি রয়েছে। এর পরেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন গোপাল। তিনি নিরপেক্ষ কোনও সংস্থাকে দিয়ে পুষ্পার মৃত্যুর তদন্তের আর্জি জানান। সরকারি আইনজীবী শীর্ষণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় যদিও আদালতে জানান, ইতিমধ্যেই মামলার চার্জশিট পেশ হয়েছে। নতুন করে তদন্তের প্রয়োজন নেই।

গোপালের আইনজীবীরা অবশ্য জানান, এ দিন বিচারপতি বসাক তাঁর রায়ে উল্লেখ করেছেন, যে বাড়িতে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে, সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল বলে সিআইডি-র নথিতে উল্লেখ রয়েছে। তার ফুটেজ পরীক্ষার জন্য ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতেও পাঠানো হয়। কিন্তু ফরেন্সিক রিপোর্ট আসার আগেই সিআইডি তড়িঘড়ি মামলার

চার্জশিট দিয়েছে।

এই ঘটনায় একাধিক বার তদন্তকারী সংস্থার বদল ঘটেছে। ঘটনার পরে গোপালবাবু ভগ্নিপতি মনোজ, মনোজের দাদা ও বৌদির বিরুদ্ধে রানিগঞ্জ থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ২০১৭-র ডিসেম্বরে তদন্তভার যায় সিআইডি-র কাছে। কিন্তু তার পরেও পুলিশ ও সিআইডি-র বিরুদ্ধে ‘নিষ্ক্রিয়তা’র অভিযোগ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন গোপালবাবু। আইনজীবীরা জানান, ওই মামলায় গত বছর ২১ অগস্ট বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা সিবিআইকে এই ঘটনার তদন্তভার দেন। তার পরে রাজ্য সরকার বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে ‘আপিল মামলা’ করে। ২৭ অগস্ট ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি মান্থার নির্দেশ খারিজ করে রাজ্যকে নির্দেশ দেয়, ঘটনার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি-কে আগামী দু’মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে। ডিভিশন বেঞ্চ অভিযুক্ত মনোজ সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসারের কাছে গত বছর ৬ সেপ্টেম্বর হাজির হবেন ও তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করার জন্যও নির্দেশ দেয়। তিনি কলকাতার বাইরে যেতে পারবেন না। পরে মনোজকে গ্রেফতার করে সিআইডি। কিছু দিন জেলে থাকার পরে গত ডিসেম্বরে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ মনোজের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করলেও পর্যবেক্ষণ করে, চার্জশিট থেকে বোঝা যাচ্ছে না পুষ্পাকে খুন করা হয়েছিল কি না।

এ দিন আদালতের নির্দেশ জেনে গোপালবাবু বলেন, “সিআইডি-র জমা করা চার্জশিটে ‘খুনে’র অভিযোগ বাদ দেওয়া হয়েছে। মনোজের দাদা ও বৌদিকেও মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এতেই পরিষ্কার তদন্ত ঠিক পথে হয়নি। তাই সিবিআই তদন্তের আর্জি জানায়। হাইকোর্ট সেই আর্জি মঞ্জুর করায় আমরা খুশি। এ বার তদন্ত ঠিক পথেই হবে বলে আশাবাদী।”

Crime Violence Murder Gender Issue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy