প্রতীকী চিত্র।
গ্রামীণ এলাকাতেও কি দূষণের কারণেই বাড়ছে বজ্রপাত, উত্তর খুঁজছে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। গত পাঁচ বছরে জামালপুরের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় কতগুলি বাজ পড়ার ঘটনা ঘটেছে কিংবা বজ্রপাতে কত জন মারা গিয়েছেন, সে তথ্য সংগ্রহ করতে নেমেছে প্রশাসন। গবেষকদের একাংশের দাবি, কোনও একটি দূষকের (পলিউট্যান্ট) মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি নির্দিষ্ট জায়গায় ক্রমবর্ধমান বাজ পড়াকে নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে গেলে তথ্য সংগ্রহের উপরে জোর দিতে হবে।
জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) প্রিয়াঙ্কা সিংলা বলেন, ‘‘জামালপুরে সচেতনতার প্রচার শুরু করার জন্য ব্লক প্রশাসনকে বলা হয়েছে। তথ্য সংগ্রহের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। তথ্য বিশ্লেষণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে পাঠিয়ে বিশেষজ্ঞের মতামত নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে জামালপুরে বজ্রপাতে চার জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০২০ সালে দু’জন মারা যান। এ বছর এখনও পর্যন্ত পাঁচ জন মারা গিয়েছেন। গবেষকদের দাবি, জামালপুরে অনেকগুলি হিমঘর রয়েছে। সে কারণেও নির্দিষ্ট জায়গায় বিশেষ মেঘ তৈরি হয়ে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বজ্রপাত নিয়ে গবেষণা করছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অ্যাটমস্ফেরিক সায়েন্স’ বিভাগ। ওই বিভাগের প্রধান সুব্রতকুমার মিদ্যা বলেন, ‘‘কোনও কোনও সময়ে নির্দিষ্ট জায়গায় এক ধরনের মেঘ তৈরি হয়ে চার্জিং (শক্তিসম্পন্ন মেঘ) হতে পারে। আবার ঠান্ডা হওয়ার জন্যও চার্জিং হয়ে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটতে পারে।’’ তবে নিশ্চিত হতে গেলে এলাকার বায়ুদূষণ সম্পর্কেও সঠিক তথ্য থাকা জরুরি, দাবি তাঁদের।
গবেষকদের একাংশের দাবি, সংগৃহীত তথ্যে ধারাবাহিকতা না থাকলে কেন ক্রমাগত বাজ পড়ছে, তার নির্দিষ্ট সূত্রে পৌঁছনো মুশকিল। রাজ্য সরকারের পরিবেশ দূষণ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানা যায়, রাজ্যের ১৬টি জায়গায় বিশেষ প্রযুক্তি (লাইটনিং ডিটেক্টর)-র মাধ্যমে আগাম বাজ পড়ার সঙ্কেত পাওয়া যায়। জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে তথ্য সংবলিত বিশ্লেষণ রিপোর্ট পাওয়ার পরে, পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে ওই প্রযুক্তি লাগানো যায় কি না দেখা হবে। ওই প্রযুক্তির মাধ্যমে আকাশ পথের ১০ কিলোমিটার এলাকার আগাম আভাস মিলবে।
জামালপুর ব্লক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিক ফাল্গুনি মুখোপাধ্যায়ের আশঙ্কা, ‘‘জামালপুরের ওই নির্দিষ্ট এলাকায় নানা কারণে গাছের সংখ্যা কমে গিয়েছে। উচ্চপরিবাহী বিদ্যুতের তার গিয়েছে। তার সঙ্গে বাতাসে মারাত্মক ধূলিকণা রয়েছে। সে কারণেও বজ্রপাত বাড়তে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy