Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Ration Shop

রেশনের জিনিস পাচার দোকানের আড়ালে, ধৃত ৪

বিকেলে বাজেয়াপ্ত সামগ্রীগুলি রেশনের কি না, তা খতিয়ে দেখতে পুলিশের সঙ্গে পরিদর্শনে যান আউশগ্রাম ১ ব্লক খাদ্য পরিদর্শক দেবাশিস সরকার। দেবাশিসবাবু জানান, বাজেয়াপ্ত সামগ্রীগুলির কিছু রেশন সামগ্রী।

তদন্তে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

তদন্তে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আউশগ্রাম শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৫৭
Share: Save:

এক জন মুদির জিনিসের ব্যবসায়ী। আর এক জনের পেষাই কল রয়েছে। অভিযোগ, তার আড়ালেই এলাকা থেকে রেশনে পাওয়া জিনিস কিনে, মোড়ক বদলে বিক্রি করতেন তাঁরা। মঙ্গলবার রাতে ওই অভিযোগে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম থেকে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধরা হয়েছে তাঁদের দুই সঙ্গীকেও। উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ রেশনের জিনিসও।

পুলিশ জানায়, ধৃত দিলীপ মণ্ডল, তাঁর ছেলে পিনাকী মণ্ডল ও হাবল পালের বাড়ি আউশগ্রামের এড়াল পঞ্চায়েতের বিজয়পুরে। আর এক জন রমানাথ মণ্ডল ওই পঞ্চায়েতেরই কলাইঝুটির বাসিন্দা। তিনি হাবল পালের দোকানে কাজ করতেন। আউশগ্রাম থানার দাবি, দু’টি জায়গা থেকে ৬৮ বস্তা চাল, ১৫৭ বস্তা আটা এবং ৩৭৫ বস্তা গম (প্রতিটি বস্তা ৫০ কেজির) বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য ও খাদ্য সরবরাহ বিভাগের নাম লেখা প্রচুর ফাঁকা পলিথিনের প্যাকেটও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

বিডিও (আউশগ্রাম-১) চিত্তজিৎ বসু জানান, বিষয়টি নিয়ে খাদ্য পরিদর্শকের কাছে জানতে চাওয়া হবে। এর সঙ্গে যারা জড়িত তাঁদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই আউশগ্রামের আনন্দবাজারে দিলীপ মণ্ডলের পেষাই কল এবং হাবল পালের মুদির দোকান রয়েছে। সেই ব্যবসার আড়ালে দীর্ঘ দিন ধরে তাঁরা রেশনের জিনিস কেনা-বেচা করেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর একাংশের। তাঁদের দাবি, এলাকা থেকে চাল, গম, আটা কিনে রেশনের প্যাকেট থেকে বার করে আলাদা করে প্যাকেটজাত করে চড়া দামে খোলা বাজারে বিক্রি করা হত। মঙ্গলবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৮টা নাগাদ আউশগ্রাম থানার পুলিশ প্রথমে পেষাই কলে, পরে মুদির দোকানে অভিযান চালায়। পুলিশের দাবি, বিপুল পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী ও সরকারি ছাপ মারা পলিথিন মজুত করা থাকলেও তার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ দেখাতে পারেনি ধৃতেরা। গুসকরা ফাঁড়ির ওসি দেবাশিস নাগ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করেন। ধৃতদের বুধবার বর্ধমানে চিফ জুডিশিয়াল বিচারকের কাছে তোলা হরে তিন দিনের পুলিশ হেফাজত হয়।

বিকেলে বাজেয়াপ্ত সামগ্রীগুলি রেশনের কি না, তা খতিয়ে দেখতে পুলিশের সঙ্গে পরিদর্শনে যান আউশগ্রাম ১ ব্লক খাদ্য পরিদর্শক দেবাশিস সরকার। দেবাশিসবাবু জানান, বাজেয়াপ্ত সামগ্রীগুলির কিছু রেশন সামগ্রী। সেগুলি কী ভাবে ওই গুদামে এল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এর সঙ্গে রেশন ডিলারেরা জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান তিনি। তবে এলাকায় রেশনের জিনিস না পাওয়ার অভিযোগ নেই বলেও দাবি তাঁর।

রেশন ডিলারদের একাংশের দাবি, দোকান থেকে মালপত্র নিয়ে কেউ যদি ফড়েদের বা কোনও দোকানে বিক্রি করে দেন সে ক্ষেত্রে ডিলারদের কিছু করার থাকে না। যাতে রেশন সামগ্রী কেউ কিনতে না পারেন, সই ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তাঁরা। পুলিশের দাবি, ওই চক্রে আরও কেউ জড়িত কি না, জিনিস কোথায় বিক্রি করা হত তা ধৃতদের জেরা করে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ration Shop Smuggling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE