Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

শোভাযাত্রার দিন মুখভার পুরনো রুটের বাসিন্দাদের

শনিবার দুপুর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে কার্তিক লড়াইয়ের শোভাযাত্রা। আলোকসজ্জার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে অনেক আগে থেকেই। কিন্তু তারই মাঝে শোভাযাত্রার পুরনো রুটে গিয়ে দেখা যায়, মুখভার সেখানকার বাসিন্দাদের।

কার্তিক-লড়াই: কাটোয়ায় নতুন রুটে শোভাযাত্রা। শনিবার সন্ধ্যায়। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

কার্তিক-লড়াই: কাটোয়ায় নতুন রুটে শোভাযাত্রা। শনিবার সন্ধ্যায়। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৩৫
Share: Save:

এত দিন সন্ধে হলেই বাড়ির সামনে বা ছাদে দাঁড়িয়ে পড়তেন তাঁরা। এক এক করে শোভাযাত্রা যেত, বাড়িতে বসেই উপভোগ করতেন। বছর কুড়ির সেই অভ্যাসে এ বার ছেদ পড়তে চলেছে। কার্তিক লড়াইয়ের শোভাযাত্রা আর যাবে না তাঁদের বাড়ির সামনে দিয়ে। তাই শনিবার কার্তিক লড়াইয়ের দিন অনেকেরই মন খারাপ কাটোয়ার তাঁতিপাড়া, ডাবপট্টি, পসারিপট্টিতে।

শনিবার দুপুর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে কার্তিক লড়াইয়ের শোভাযাত্রা। আলোকসজ্জার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে অনেক আগে থেকেই। কিন্তু তারই মাঝে শোভাযাত্রার পুরনো রুটে গিয়ে দেখা যায়, মুখভার সেখানকার বাসিন্দাদের। কেউ বলছেন, ‘‘মাধবীতলা, এলআইসি মোড় অনেক দূর। অত দূরে যেতে পারব না।’’ কেউ আবার বলছেন, ‘‘এত দাবি জানিয়েও তো ঐতিহ্য ধরে রাখা গেল না!’’

শহরবাসীর বড় অংশের দাবি মেনে এ বার শোভাযাত্রার রুট বদলের সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। সরু রাস্তা ছেড়ে এলআইসি মোড়, টেলিফোন ময়দান, মাধবীতলা হয়ে কারালাতলা, সিদ্ধেশ্বরীতলার চওড়া রাস্তা বেছে নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের কর্তাদের মতে, বড় রাস্তায় শোভাযাত্রা দেখতে যেমন সুবিধা, তেমনই জরুরি কোনও পরিস্থিতিতে গাড়ি যাওয়া-আসারও সুবিধা। নতুন রুটে প্রতিমা ঢোকার ক্ষেত্রেও বেশ কয়েকটি পয়েন্ট রয়েছে। মণ্ডলপাড়ার দিকের প্রতিমা লেনিন সরণি, কাছারিপাড়ার প্রতিমা সংহতি মোড়, মাধবীতলা, সুবোধ স্মৃতি রোডের প্রতিমা সরাসরি কারবালাতলায় এসে রুটে মিশতে পারায় যানজট অনেকটা কম হবে বলে মত এলাকাবাসীর।

এত দিন ডাবপট্টি, পসারিপট্টি দিয়ে বেরিয়ে সব প্রতিমাকে কারবালাতলায় যেতে হত। ফলে, যানজটে আটকে পড়ত শোভাযাত্রা। এক জায়গায় একটি প্রতিমা তিন-চার ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রয়েছে, এমনও ঘটত। তবু নিজের বাড়িতে বসে শোভাযাত্রা দেখার আলাদা মজা ছিল, দাবি পুরনো রুট এলাকার বাসিন্দাদের। তাঁতিপাড়ার কলেজ পড়ুয়া তনুশ্রী দত্ত, সরস্বতী বসাকেরা বলেন, ‘‘অন্য পাড়ায় গিয়ে বেশিক্ষণ ঠাকুর দেখা সম্ভব হবে না।’’ বিশেষ ইচ্ছে না থাকলেও বাড়ির কচিকাঁচাদের জন্য নতুন রুটে ঠাকুর দেখতে যেতে হবে, জানালেন বধূ অর্চনা দত্ত। তবে প্রৌঢ়া মঞ্জু দত্ত, অঞ্জলি দাসেরা জানালেন, এ বার আর কার্তিক লড়াই দেখতে যাচ্ছেন না।

প্রতি বছর অন্য পাড়ায় ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে কার্তিক লড়াই দেখতেন মাধবীতলার সৈকত দাস, পর্ণা বসুরা। এ বার তাঁরা বলছেন, ‘‘নিশ্চিন্তে বাড়িতে বসে ঠাকুর দেখছি।’’ গঙ্গার ওপারে কালীগঞ্জ বা দাঁইহাট, শ্রীখণ্ড থেকে আসা শ্রীরাম ঠাকুর, প্রদীপ গুঁইদের কথায়, ‘‘স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড কাছে হওয়ায় মাধবীতলায় ঠাকুর দেখে সহজেই ট্রেন, বাস ধরে বাড়ি ফিরব।’’

পুলিশ জানায়, ৬৯টি ক্লাব শোভাযাত্রার অনুমতি পেয়েছে। সাড়ে সাতশো পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ার থাকবেন। নানা মোড়ে বসানো ৫০টি সিসিটিভির মাধ্যমে সরাসরি শোভাযাত্রার সম্প্রচার দেখতে পাবেন শহরের না থাকা মানুষজনও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kartik Puja Kartik Larai Procession
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE