Advertisement
E-Paper

প্লাস্টিকের পতাকায় অনীহা বিক্রেতাদেরই

শুধু কাপড়ের পতাকা বিক্রিই নয়, এসেছে ব্যাজ, ব্যান্ড, স্টিকার, বেলুনের মধ্যেও তেরঙ্গা। দুর্গাপুরের ব্যবসায়ীরা জানান, শহরের অধিকাংশ ব্যবসায়ী পতাকার নানা সামগ্রী নিয়ে আসেন কলকাতা থেকে।

বিপ্লব ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৭ ০৬:০০
কেনাকাটা: বাঁ দিকে, বর্ধমানের কাছারি রোডে ও ডান দিকে, দুর্গাপুরের হাটতলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে পতাকা। ছবি: উদিত সিংহ ও বিশ্বনাথ মশান।

কেনাকাটা: বাঁ দিকে, বর্ধমানের কাছারি রোডে ও ডান দিকে, দুর্গাপুরের হাটতলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে পতাকা। ছবি: উদিত সিংহ ও বিশ্বনাথ মশান।

স্বাধীনতা দিবসে সকাল-সকাল অফিস, ক্লাব, বাড়িতে টাঙানো হয় পতাকা। অনেকে গাড়িতেও আলাদা করে ঝোলান। কেউ হাতে ব্যান্ড, কাপড়ে ব্যাজে তেরঙ্গা এঁটে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেন। আর যে দু’টি দিনের অপেক্ষায় সারা বছর অরেক্ষা করেন পতাকা ব্যবসায়ীরা, তার একটি স্বাধীনতা দিবস। বিভিন্ন বাজারে দু’তিন দিন আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল পতাকা কেনার ধুম। তবে দুর্গাপুরে ভোট থাকায় কিছুটা থমকে থাকলেও, ভোট শেষ হতেই ফের ব্যবসায় জোয়ার পতাকা ব্যবসায়ীদের। তবে দূষণের জন্য অনেক ব্যবসায়ীই প্লাস্টিকের পতাকা বিক্রি থেকে বিরত রয়েছেন এ বার।

শুধু কাপড়ের পতাকা বিক্রিই নয়, এসেছে ব্যাজ, ব্যান্ড, স্টিকার, বেলুনের মধ্যেও তেরঙ্গা। দুর্গাপুরের ব্যবসায়ীরা জানান, শহরের অধিকাংশ ব্যবসায়ী পতাকার নানা সামগ্রী নিয়ে আসেন কলকাতা থেকে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, স্বাধীনতা দিবসেই চাহিদা থাকে সবথেকে বেশি। কোথাও কাপড়ের তৈরি বড় জাতীয় পতাকার চাহিদা বেশি, তো আবার কোথাও পতাকার পাশাপাশি স্ট্যান্ড, ব্যাজের চাহিদাও যথেষ্ট বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

দুর্গাপুরের হাটতলা বাজারে প্রদীপ রক্ষিতের দশকর্মার দোকান। তিনি জানান, স্বাধীনতা দিবস ও প্রজাতন্ত্র দিবসের পাশাপাশি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনেও জাতীয় পতাকার চাহিদা ভাল থাকে। তবে স্বাধীনতা দিবসের সময়ে বাজার খুব ভাল হয়। তিনি জানান, তিন পুরুষ ধরে এই ব্যবসায় রয়েছেন তাঁরা। এই বছর প্রায় তিরিশ হাজার টাকার পতাকার নানা সামগ্রী তুলেছিলেন দোকানে। তাঁর কাছে জানা গিয়েছে, ৮ ফুটের পতাকার দাম ৪০০-৪২০ টাকা। ছোট মাপের পতাকার দাম ১০০-১২০ টাকা। পতাকার পাশাপাশি হাতে পরার ব্যান্ড, উত্তরীয়, স্টিকারের চাহিদাও রয়েছে। প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘প্রতি বছর প্রায় সব পতাকা বিক্রি হয়ে যায়। এ বছর চাহিদা অনেকটাই বেড়েছে।’’

একই মত দুর্গাপুর বাসস্ট্যান্ডের ব্যবসায়ী বিশ্বনাথ দত্তের। তিনি জানান, এই বছর পতাকার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ব্যাজ, তেরঙ্গা বেলুন, চেন পতাকা বিক্রি করছেন তিনি। তিনি জানান, এ বছর এখনও পর্যন্ত পতাকার চাহিদা ভালই রয়েছে। স্বাধীনতা দিবসের দিন এগিয়ে আসার সঙ্গে বিক্রিও বেড়েছে। ১০ থেকে ২০ টাকার মধ্যে মিলছে বিভিন্ন ধরনের তেরঙ্গা ব্যাজ। বিশ্বনাথবাবু বলেন, ‘‘খুদেদের মধ্যে পতাকা বা ব্যাজ কেনার ধুম খুব বেশি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আগে প্লাস্টিকের পতাকাও প্রচুর বিক্রি হতো। কিন্তু প্লাস্টিক বন্ধে প্রশাসনের তরফে নানা সচেনত করা হয়েছে। তাই আমরা অনেকেই এ বছর প্লাস্টিকের পতাকা বিক্রি করছি না।’’ ব্যবসায়ীরা জানান, অনেকে প্লাস্টিকের পতাকা রাখলেও ক্রেতারা কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

পতাকা কিনতে আসা বেনাচিতি এলাকার এক খুদে সৌম্যক দত্ত বলে, ‘‘আমি বাড়িতে একটা বড় জাতীয় পতাকা টাঙাব। হাতের ব্যান্ড আর ব্যাজও নিয়েছি।’’

শুধু পতাকা বিক্রি করতেই বেশ কিছু অস্থায়ী দোকান বসেছে বিভিন্ন বাজারে। বেনাচিতি বাজার, মামরা বাজারের বিভিন্ন জায়গায় তেরঙ্গার নানা সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। এমনই এক বিক্রেতা অনিমেষ মাহাতো বলেন, ‘‘বছরে এই এক বারই তেরঙ্গার প্রচুর চাহিদা থাকে। প্রতি বছর আমরা অস্থায়ী দোকান করি। দুর্গাপুরে সে ভাবে কাপড়ের জাতীয় পতাকা তৈরি না হওয়ায় বেশির ভাগ বড় ব্যবসায়ীই কলকাতা থেকে পতাকা কিনে আনেন। তবে অনেক ছোট ব্যবসায়ী দুর্গাপুরের বিভিন্ন পাইকারি বিক্রেতার কাছ থেকেও পতাকা-সহ নানা জিনিস কেনেন।’’ দুর্গাপুর স্টেশন বাজারের সুশীল অগ্রবাল পাইকারি দরে বিভিন্ন ছোট ব্যবসায়ীকে পতাকা বিক্রি করেন। তিনি বলেন, ‘‘এ বছর চাহিদা অনেকটাই বেড়েছে।’’

pollution plastic Plastic pollution দুর্গাপুর Durgapur Independence Day
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy