বিডিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। নিজস্ব চিত্র।
কাজ না করিয়ে বেআইনি ভাবে ঠিকাদার সংস্থাকে বরাত পাইয়ে দিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগ উঠল বিডিও-র বিরুদ্ধে। কিন্তু শাসক দলের একাংশের চাপে পড়ে অন্য সাফাই দিলেন গলসি ১ নম্বর ব্লকের বিডিও দেবলীনা দাস। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কাজ না করেই প্রকল্পের লক্ষ লক্ষ টাকা কী ভাবে পেলেন ঠিকাদার।
সূত্রের খবর, পূর্ব বর্ধমান জেলার ২০২১-’২২ আর্থিক বছরে এমডিএম বা মিড-ডে মিল প্রকল্পে ২,১৯০টি প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুলের রান্নাঘরের ভাঁড়ার মেরামতের জন্য বরাদ্দ হয় দু’কোটি ১৯ লক্ষ টাকা। সেখানে শুধু গলসি ১ নম্বর ব্লকের ১৪৪টি স্কুলের জন্য বরাদ্দ হয় ১৪ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা। অভিযোগ, অনলাইন টেন্ডার না ডেকেই বরাত দেওয়া হয় গলসি ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহকারি সভাপতি ঘনিষ্ঠ ঠিকাদার অভিজিৎ কোনারকে। কিন্তু তিনি কোনও কাজই করেননি। সব মিলিয়ে ১৩,৭১,৯০৫ টাকা তছরুপ হয়েছে। আর এই কাণ্ডে বিডিও-র বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন খোদ তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ এবং সভাপতি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করে সরব হয়েছেন এলাকার বিশিষ্ট মানুষজন। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই দুর্নীতির তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন।
গলসি পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষা ফজিলা বেগমের অভিযোগ, তাঁকে না জানিয়ে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে তাঁর হাতে ১৪৪টি স্কুলের একটি তালিকা এসেছে। তার মধ্যে কয়েকটি স্কুলে তদন্ত করে তিনি দেখেন যে, সেখানে কোনও কাজ হয়নি। অথচ, টাকা খরচ হয়েছে। তাই বাকি স্কুলগুলির কাজ ঠিকঠাক হয়েছে কি না তার তদন্তের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হচ্ছেন তিনি। গলসি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সেখ রোকেয়া জানান, বেশ কিছু স্কুলের তরফে তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। এ নিয়ে বিডিও-র কাছে তিনি জানতে চাইলে তিনি তা এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে তাঁর অভিযোগ।
অন্য দিকে, বিশ্বনাথ মণ্ডল নামে এক ঠিকাদার সংস্থার মালিকের অভিযোগ, শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় এক ঠিকাদারকে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে টাকা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ, তাঁদের বকেয়া টাকা কাজের তিন বছর পরেও তাঁরা হাতে পাচ্ছেন না।
তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গলসি ১ নম্বর ব্লকের বিডিও। তাঁর দাবি, ‘‘স্কুল ছুটি থাকার কারণে কাজ বন্ধ ছিল। আগামী এক মাসের মধ্যে সমস্ত কাজ হয়ে যাবে।’’ কিন্তু কাজ না করেও কী ভাবে একজন ঠিকাদার টাকা পেয়ে গেলেন? বিডিও-র উত্তর, ‘‘সবই নিয়ম মেনে হয়েছে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy