Advertisement
E-Paper

সেচ-সংস্কারে ৫৬০ কোটি

এ বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু হবে। সেচ দফতর সূত্রে জানা যায়, দামোদরের নিম্ন অববাহিকা জামালপুরের বেগুয়াহানা থেকে মুন্ডেশ্বরীর শাখা বেরিয়েছে। মুন্ডেশ্বরী দিয়ে যাতে এক লক্ষ কিউসেক জল যেতে পারে, ৬০ কোটি টাকা খরচ করে সেই ব্যবস্থা করে বন্যা-নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৯ ০১:৫০
সংস্কৃতি লোকমঞ্চে চলছে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র।

সংস্কৃতি লোকমঞ্চে চলছে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র।

জেলা জুড়ে সেচ খাল রয়েছে বহু। তবে বেশির ভাগই মজে যাওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই ভাসে দু’পাশের জমি। আবার জল বয়ে যেতে না পারায় নিচু এলাকায় চাষ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন বিভিন্ন ব্লকের চাষিরা। সোমবার বর্ধমানের সংস্কৃত লোকমঞ্চে প্রশাসনিক বৈঠকে পূর্ব বর্ধমানের সেচ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজার বিশেষ পরিকল্পনার কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “জেলার সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণে প্রায় ৫৬০ কোটি টাকা খরচ করা হবে।’’

কর্তাদের আশা, সব ঠিক থাকলে আগামী অর্থবর্ষ থেকেই সেচখাল সংস্কারের কাজ শুরু হয়ে যাবে। তার আগে এ বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু হবে। সেচ দফতর সূত্রে জানা যায়, দামোদরের নিম্ন অববাহিকা জামালপুরের বেগুয়াহানা থেকে মুন্ডেশ্বরীর শাখা বেরিয়েছে। মুন্ডেশ্বরী দিয়ে যাতে এক লক্ষ কিউসেক জল যেতে পারে, ৬০ কোটি টাকা খরচ করে সেই ব্যবস্থা করে বন্যা-নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

ডিভিসি সূত্রে জানা যায়, দামোদরের দুই পাড় থেকে একেবার অজয়ের ডান অববাহিকা পর্যন্ত সমস্ত ব্লকেই সেচ খাল সংস্কারের কাজ হবে। সেচ দফতরের এক কর্তার কথায়, “ডিভিসি জলাধার তৈরির পরেই সেচখালগুলি কাটা হয়েছিল। গত ৬০ বছর ধরে সংস্কারের অভাবে সেগুলি শুধু মজেই যায়নি, পাড় দখলের মতো সমস্যাও দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় সেচখালগুলির আমূল পরিবর্তন হলে চাষিরা উপকৃত হবেন। এর জন্য ৫০০ কোটি টাকা খরচ করা হবে।’’ জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লক, কাঁকসা, আউশগ্রাম ১ ও ২, গলসি ১ ও ২, বর্ধমান ১ ও ২, মঙ্গলকোট, ভাতার, কাটোয়া ১ ও ২, কালনা ১ ও ২, মেমারি, জামালপুর, রায়নার দু’টি ব্লক ও খণ্ডঘোষ মিলে প্রায় ২৫০০ কিলোমিটার সেচখাল সংস্কার করা হবে।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার জমিতে খরিফ মরসুমে চাষ হয়। তার মধ্যে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার হেক্টর জমি সেচ এলাকাভুক্ত। সেচখালের মাধ্যমে জল পায় ২ লক্ষ ৫ হাজার হেক্টর জমি। বাকি জমির চাষ সাবমার্সিবল পাম্প বা গভীর নলকূপের নির্ভরশীল। কিন্তু ‘খাতায়-কলমে’ জল পেলেও সেচখাল মজে থাকায় বাস্তবে ওই জল জমিতে পৌঁছয় না, দাবি চাষিদের।

সম্প্রতি বর্ধমান ২, মেমারি, কাটোয়া ১ ও আউশগ্রামের ভেদিয়ায় সেচখালের মাধ্যমে জলের দাবিতে চাষিরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। আবার গলসি, রায়নায় চাষিদের অভিযোগ, সেচখাল মজে যাওয়ায় জল ঠিকমতো যেতে পারছে না, ফলে পাড় উপচে দু’দিক ভাসাচ্ছে। আবার নিকাশি ব্যবস্থা ভাল না থাকায় জল বেরিয়েও যেতে পারছে না। ফলে, জেলার তিন শতাংশ জমিতে এখনও আমন ধান বোনা হয়নি বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার।

জানা গিয়েছে, খাল সংস্কারের পাশাপাশি জল-নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে প্রায় ৫০০টি ‘রেগুলেটেড গেট’ সংস্কার করা হবে অথবা প্রয়োজন মতো বসানো হবে। কাঞ্চননগর, সন্ধিপুরের মত একশোটি জায়গায় নদী ও সেচখাল যেখানে মিলছে, সেই জায়গাগুলিও সংস্কার করা হবে। সেচখাল থেকে মাঠ পর্যন্ত জল যেতে সমস্যা রয়েছে, এমন ২০০টি জায়গাও বেছে নিয়ে কাজ করা হবে।

জানা গিয়েছে, ২০০ কিলোমিটারের মতো পাড় ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আবার খালের পাশে রাস্তার অবস্থাও অনেক জায়গায় বেহাল। বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় পাড়া ভাঙা, রাস্তাও ঠিক করে দেবে সেচ দফতর।

Irrigation CM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy