Advertisement
E-Paper

খুদেকে যেতে মানা, অভিযুক্ত স্কুল

ঈশান অবস্থির মতো তার ডিসলেক্সিয়া জাতীয় রোগ নেই। কিন্তু, ‘তারে জমিন পর’-এর ছোট্ট ইশান্তের মতোই রণবীরের (নাম পরিবর্তিত) পড়ায় মন বসে না এবং সে আর পাঁচটা ছেলের মতো ‘স্বাভাবিক’ নয়—এমনই দাবি দুর্গাপুরের এক বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৬ ০১:৫৩

ঈশান অবস্থির মতো তার ডিসলেক্সিয়া জাতীয় রোগ নেই। কিন্তু, ‘তারে জমিন পর’-এর ছোট্ট ইশান্তের মতোই রণবীরের (নাম পরিবর্তিত) পড়ায় মন বসে না এবং সে আর পাঁচটা ছেলের মতো ‘স্বাভাবিক’ নয়—এমনই দাবি দুর্গাপুরের এক বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের।

নিজের বছর পাঁচেকের ছেলের বিরুদ্ধে স্কুলের এমন অভিযোগে সায় ছিল না মায়ের। তিনি স্কুলে গিয়ে প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, এর পর থেকেই ছেলেকে আর স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। উল্টে ছেলেকে অন্যত্র ভর্তি করাতে বলা হয়েছে। এই অবস্থায় ছেলের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে দুর্গাপুরের মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন এই শহরেরই বাসিন্দা রণবীরের মা। প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা।

তিনি জানান, কয়েক সপ্তাহ ধরে স্কুলের নাম শুনলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছিল রণবীর। জোরাজুরি করে তিনি জানতে পারেন, স্কুলের দুই শিক্ষিকা ও এক সহকারী (অ্যাটেন্ডেন্ট) তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। ইতিমধ্যে স্কুলের পক্ষ থেকেও তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ছেলের পড়াশোনায় মন নেই। রবিবার মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগে রণবীরের মা দাবি করেছেন, তিনি স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানালে পাল্টা তাঁকে তাঁর ছেলে ‘স্পেশাল চাইল্ড’ হিসাবে লিখে দেওয়ার জন্য জোর করা হয়। তিনি রাজি না হওয়ায় তাঁকে স্কুল থেকে কার্যত বের করে দেওয়া হয়। ‘‘পর দিনও আমার ছেলেকে স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তার পর থেকে ও বাড়িতেই রয়েছে।’’— বলেন তিনি।

ওই মহিলার আরও দাবি, তাঁর ছেলেকে এক দিন স্কুলে স্কেল দিয়ে মারা হয়। আর এক দিন টানা মাথা নিচু করে বসে থাকার শাস্তিতে ওর ঘাড়ে ব্যথা হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘‘অবিলম্বে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছি।’’ লোয়ার কেজির ছাত্র রণবীর তা হলে বাড়িতে কী করছে? মা জানালেন, কখনও স্কুলের ব্যাগ বের করে নিজেই বই নিয়ে বসছে। কখনও টিভিতে কার্টুন চ্যানেল দেখছে। কিন্তু, ওই স্কুলে যাওয়ার নাম নিচ্ছে না। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও স্কুল তার ছাত্রকে ঢুকতে বাধা দিতে পারে না। শিক্ষার অধিকার থেকে কোনও পড়ুয়াকে বঞ্চিত করা যায় না।’’ বিশেষ শিশু বা স্পেশ্যাল চাইল্ডদের নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের কর্তা শম্ভুনাথ জাজোদিয়া বলেন, ‘‘বিশেষ শিশুদের জন্য আলাদা কোনও স্কুল হয় না। স্কুলেই বিশেষ শিক্ষক বা শিক্ষিকা নিয়োগ করে পড়ানোর কথা। তা না করে অনেক সময়ে একটু অমনোযোগী পড়ুয়াকে নানা স্কুল ‘বিশেষ শিশু’ তকমা দিয়ে দেয়, যা অনুচিত।’’

ওই ছাত্রের মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্কুলটির অধ্যক্ষা সহিদা সুলতানা। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘উনি লোকজন নিয়ে স্কুলে এসে অশান্তি পাকান। আমরা বিষয়টি নিয়ে শান্ত ভাবে আলোচনা করতে চাই। কিন্তু তিনি চেঁচামেচি করেন। তার পরেই আমরা তাঁকে ছেলেকে অন্যত্র নিয়ে যেতে বলি। তিনি যত তাড়াতাড়ি তা করবেন, স্কুলের পরিবেশও তত দ্রুত স্বাভাবিক হবে।’’

School Reject Child
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy