সাত মাসের মাথায় আজ, বৃহস্পতিবার দুপুরে ফের মুখ্যমন্ত্রীর সভা রয়েছে বর্ধমান শহরের গোদার স্বাস্থ্যনগরীর মাঠে। গত বার সভা চলাকালীন দর্শক আসন থেকে দুই মহিলা পোস্টার নিয়ে চাকরির দাবি জানিয়েছিলেন। সভা শেষে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার যাতে কোনও অস্বস্তিকর পরিস্থিতি না হয়, তার জন্যে আগাম-সতর্ক থাকছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩০ হাজারের মতো লোক আনা হচ্ছে। তার মধ্যে আড়াই হাজারের কাছাকাছি উপভোক্তা আসছেন, যাঁরা বৃহস্পতিবার প্রতিটি ব্লকের স্টল থেকে সুবিধা ও পরিষেবা নেবেন। তাঁদের মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চের একদম সামনে বসানো হবে। তাঁরা যাতে প্রশাসনকে কোনও অস্বস্তিতে না ফেলেন, সে জন্য বাড়ি গিয়ে তাঁদের বোঝানো হচ্ছে। এ ছাড়াও সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর সভায় আসছেন, তাঁদের নাম-ঠিকানা তো বটেই, চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনে তাঁদের কেউ জড়িয়ে রয়েছেন কি না, সেই খোঁজও নিচ্ছেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। যে বাসে তাঁরা আসবেন সেখানে পুলিশের বন্দোবস্ত করার জন্যও জেলা প্রশাসনের তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে প্রতিটি বাসে পুলিশ রাখা যাবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট করে জানা যায়নি।
মালদা ও বীরভূমের প্রশাসনিক সভা সেরে আজ দুপুরে হেলিকপ্টারে গোদার স্বাস্থ্যনগরীর মাঠে নামার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। হেলিপ্যাডের পাশেই করা হয়েছে মঞ্চ। সেখান থেকেই তিনি ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পে সুবিধাপ্রাপ্ত ২৩ জন-সহ ৩৫ জনের হাতে পরিষেবা তুলে দেবেন। পূর্ব বর্ধমান ছাড়াও পশ্চিম বর্ধমানেরও কয়েকজনকেও সুবিধা দেওয়া হবে। দুই জেলার মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি, জেলাশাসক, আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার, পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার মঞ্চে থাকবেন বলে জানা গিয়েছে।
রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর সভার দায়িত্বে থাকা প্রদীপ মজুমদার বুধবার বলেন, ‘‘বর্ধমানে প্রশাসনিক জনসভার প্রস্তুতি ভাল ভাবেই নেওয়া হয়েছে।’’ জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা ও পুলিশ সুপার কামনাশিস সেনও দফায় দফায় সভার প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেছেন। জানা গিয়েছে, সভা শেষে হেলিকপ্টারে কলকাতায় ফিরে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন গোদার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মঞ্চ তৈরি, ম্যারাপ বাঁধার কাজ চলছে। ক্লোজ়ড সার্কিট ক্যামেরায় মুড়ে দেওয়া হয়েছে এলাকা। দর্শকদের আলাদা আলাদা ভাগে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি ভাগে সিভিক-ডিফেন্সের কর্মীরা থাকবেন। জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী জেলায় আসছেন। আমরা সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছি।’’
সভার জন্য জেলা পুলিশ বর্ধমান শহর ও দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করেছে। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভিন্ জেলার পুলিশ, সিভিক ভলেন্টিয়ার-সহ প্রায় তিন হাজার কর্মী নিরাপত্তা ব্যবস্থার দায়িত্বে থাকছেন। ডিজি (নিরাপত্তা), আইজি, ডিআইজি পদমর্যাদার আধিকারিকেরাও থাকবেন। এ ছাড়াও দু’জন এসপি, সাত জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গে ৩৩ জন ডিএসপি, ৬০ জন ইনস্পেক্টর নজরদারি করবেন। রাজ্য পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও যান চলাচলের জন্যও আলাদা করে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’’