E-Paper

নিজেদের কাজ শেষ করে অন্য বিএলও-র পাশে

১৮৮ নম্বর বুথের বিএলও মৃন্ময় কর্মকার প্রায় সাতশো ভোটারের ফর্ম সংগ্রহ ও ‘ডিজিটাইজ়’ করার কাজ শেষ করেছেন বলে জানান।

সুব্রত সীট , নীলোৎপল রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:৩৭
আসানসোলে প্রশাসনের শিবির।

আসানসোলে প্রশাসনের শিবির। নিজস্ব চিত্র ।

কোথাও বিএলও কাজের চাপে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নানা জায়গায় অনেক বিএলও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলেও খবর মিলেছে। এসআইআর নিয়ে এমন আবহের মধ্যে অন্য রকম ছবি পশ্চিম বর্ধমানের কয়েকটি এলাকায়। পাণ্ডবেশ্বরে একাধিক বিএলও ইতিমধ্যে পুরো কাজ শেষ করে প্রশাসনের সংবর্ধনা পাচ্ছেন। কয়েক জন বিএলও আবার নিজের কাজ শেষ করে অন্য বিএলও-কে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা এলাকার ১৮৮ ও ১৯৪ নম্বর বুথে গণনাপত্র সংগ্রহ ও তা ‘ডিজিটাইজ়’ করার কাজ শেষ করে ফেলেছেন সংশ্লিষ্ট বিএলও-রা। এখন তাঁরা সহযোগিতা করছেন পাশের দুই বুথের বিএলও-কে। ১৯৪ নম্বরের বিএলও পিউ মণ্ডলের বুথে ভোটার সংখ্যা ৬৪৩ জন। তাঁদের সবার ফর্ম ফেরত নিয়ে ‘ডিজিটাইজ়’ করার কাজ তিনি শেষ করে ফেলেছেন জানিয়ে পিউ বলেন, ‘‘আমি শুরু থেকে কাজ করেছি মন দিয়ে। কোনও সমস্যা হয়নি। এ বার আমি ২০৬ নম্বর বুথের বিএলও সুচিত্রা সুরকে সাহায্য করছি।’’ সুচিত্রা জানান, তাঁর বুথে ভোটারের সংখ্যা ১,০৮৮। এখনও সবার ফর্ম সংগ্রহের কাজ শেষ হয়নি। ‘ডিজিটাইজ়’করার কাজও অনেক বাকি রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘উনি সাহায্য করায় সুবিধা হচ্ছে, দ্রুত কাজ এগোচ্ছে। দু’তিন দিনের মধ্যে হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’’

১৮৮ নম্বর বুথের বিএলও মৃন্ময় কর্মকার প্রায় সাতশো ভোটারের ফর্ম সংগ্রহ ও ‘ডিজিটাইজ়’ করার কাজ শেষ করেছেন বলে জানান। তিনি এ বার ১৯২ নম্বর বুথের বিএলও পলাশ প্রামাণিককে সাহায্য করছেন। ওই বুথে ভোটারের সংখ্যা ১,৩৬৭ জন। তার মধ্যে বুধবার পর্যন্ত প্রায় ৯০০ ভোটারের গণনাপত্রের কাজ শেষ হয়েছে। মৃন্ময় বলেন, ‘‘ওইবুথে ভোটার সংখ্যা একটু বেশি। তাই আমি সহযোগিতা করছি।’’ পলাশ বলেন, ‘‘দু’জনে মিলে কাজ করায় দ্রুত এগোচ্ছে।’’

পাণ্ডবেশ্বর ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানসভা এলাকার ১১৫, ১১৭ ও ১১৯ নম্বর বুথের বিএলও মৌমিতা চট্টোপাধ্যায়, তনুশ্রী গোস্বামী মুখোপাধ্যায় ও নারায়ণ সাউ কার্যত কুড়ি দিনের মধ্যে গণনাপত্র বিলি, জমা নেওয়া এবং ‘ডিজিটাইজ়’ করার কাজ শেষ করেছেন। বিডিও (পাণ্ডবেশ্বর) বৃষ্টি হাজরা জানান, বুধবার তাঁর কার্যালয়ে এই তিন জনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। অন্যেরা সহযোগিতা চাইলে তাঁরা পাশে দাঁড়াবেন বলেও জানিয়েছেন ওই বিএলও-রা।

আসানসোল উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের ৪৭ নম্বর বুথের বিএলও করুণা মাজি ২১ দিনে কাজ শেষ করে ফেলায়, মহকুমা প্রশাসনের তরফে সংবর্ধনা পেয়েছেন। রাধানগর রোডের শ্যামাদেবী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা করুণার বাড়ি আসানসোলের সারদাপল্লি এলাকায়। তিনি জানান, স্কুটি চালিয়ে প্রতিদিন বুথে যাতায়াত করেছেন। তাঁর বুথে মোট ভোটার ৬৭১ জন। এলাকার মানুষজনকে চেনা থাকায় এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় অল্প সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়েছে, জানান তিনি। করুণা বলেন, ‘‘প্রশিক্ষণ খুব ভাল হয়েছিল, তাই কাজে কোনও অসুবিধাই হয়নি। আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কার্যত খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে অধিকাংশ সময় এই কাজে ব্যয় করেছি।’’ ওই এলাকার বাসিন্দা তপনকুমার দেওঘরিয়া বলেন, ‘‘বিএলও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। কারও কোনও ভুল থাকলে ফোন করে বাড়িতে এসে সংশোধন করে দিয়েছেন।’’ (সহ-প্রতিবেদন: সৌমিত্র গঙ্গোপাধ্যায়)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bardhaman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy