উদ্ধার হওয়া কচ্ছপ। নিজস্ব চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুর থেকে কলকাতার দিকে ছুটছিল কন্টেনারটি।
রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে যাওয়ার কথা যে গাড়ির, লোহার শাটার নামাতেই তা থেকে বেরিয়ে পড়ল বস্তাবন্দি হাজারেরও বেশি সফট সেল টার্টেল বা কাউটা কচ্ছপ! মঙ্গলবার গভীর রাতে, মেমারি থানার পুলিশ জাতীয় সড়কে নজরদারি চালানোর সময়ে পালশিট থেকে কচ্ছপগুলিকে উদ্ধার করে। আপাতত তাদের বর্ধমানের রমনাবাগানে রাখা হয়েছে। তবে, দীর্ঘক্ষণ বস্তাবন্দি থাকায় বেশ কয়েকটি কচ্ছপ মারা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
মুখ্য বনপাল (দক্ষিণ-পূর্ব সার্কেল) কল্যাণ দাস বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে তিন মহিলা-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জেরা করে ওই পাচারকারী চক্রটার হদিস পেতে চাইছি আমরা।’’ বর্ধমানের ডিএফও বিজয়কুমার সালিমাথও জানান, বিপন্ন প্রজাতির ওই কচ্ছপ এ ভাবে পাচার হওয়ার নজির বিশেষ নেই। পুলিশ জানিয়েছে, ৩৭টি বস্তায় ১৮৫০টি কচ্ছপ ছিল।
পুলিশ জানায়, পালশিটের কাছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর তল্লাশি চলে নিয়মিত। সেই সময়েই ওই ছোট ট্রাকটি ধরা হয়। হাত দেখানো সত্ত্বেও ট্রাকটি দাঁড়াতে চায়নি। তা দেখেই সন্দেহ হয় পুলিশের। শুরু হয় তল্লাশি। ট্রাকে ৪২টি বস্তা ছিল। তার ৩৭টিতেই ছিল কচ্ছপ। পুলিশ ওই ট্রাক থেকে মহেন্দ্রকুমার কানজার, বাহাদুর কানজার, কিষানিয়া কানজার, মঞ্জু কানজার এবং মায়া কানজার নামে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। জেরায় তারা জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুরের পিপরাপুর এলাকার পরকি গ্রামের বাসিন্দা তারা। ধৃতেরা পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁরা একই পরিবারের। ওই গাড়ির চালক ও খালাসি বিনা ভাড়ায় কলকাতা পৌঁছে দেবে বলায় তাঁরা গাড়িতে চেপে বসেছিলেন। তাঁদেরকে শুধু বলা হয়েছিল, বস্তাগুলির উপর নজর রাখতে। রাস্তার মধ্যে পুলিশ টহল দিচ্ছে দেখে গাড়ি ফেলেই পালিয়ে যায় চালক-খালাসি।
সপ্তাহ কয়েক আগে বর্ধমান স্টেশনে হাওড়ামুখী দূরপাল্লার একটি ট্রেন থেকে বস্তাভর্তি কচ্ছপ উদ্ধার করেছিল রেল পুলিশ। তখনও পুলিশ বস্তার গায়ে থাকা লেখা দেখে জানিয়েছিল, ওই কচ্ছপগুলি উত্তরপ্রদেশ থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশ থেকে এত কচ্ছপ কী ভাবে ও কলকাতার কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কারা ওই কচ্ছপ কিনছে—সে সব জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। ডিএফও বলেন, “আমরা খুব গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করছি।” এ দিন অভিযুক্তদের ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy