‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি নেওয়ার পথে হাঁটতে পারে দল, শনিবার বৈঠকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। সে সূত্রে আলোচনায় এসেছে স্বপন দেবনাথের নাম, যিনি রাজ্যের মন্ত্রীর পাশাপাশি, রয়েছেন দলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি পদেও। এই বৈঠকের পরে স্বপনবাবুকে পদ থেকে সরানো হবে কি না, তা নিয়ে জেলা তৃণমূলের একাংশে জল্পনা শুরু হয়েছে।
স্বপনবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘দলের নীতি মেনে যদি আমাকে সরে যেতে হয়, যাব। তৃণমূল জেলার ১৬টি আসনেই জিতেছে, এই আনন্দটা থাকবে। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করব।’’
প্রায় দু’দশক ধরে দলের জেলা সভাপতি পদে রয়েছেন স্বপনবাবু। ২০০৬ সাল থেকে বিধায়কও রয়েছেন। ২০১১ সালে তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে, মন্ত্রিসভায় প্রথমেই ঠাঁই না পেলেও বছরখানেক পরে, প্রতিমন্ত্রী হন। তার পর থেকে মন্ত্রী রয়েছেন। এ বার তাঁর নেতৃত্বে বিধানসভা ভোটে পূর্ব বর্ধমানের সব আসনেই জিতেছে তৃণমূল। তবে দল ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি নিলে স্বপনবাবুকে দলীয় পদ ছাড়তে হতে পারে, শনিবার শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পরে মনে করছেন তৃণমূলের জেলা থেকে রাজ্য স্তরের নেতারা।
তৃণমূলের জেলা থেকে রাজ্য নেতাদের কারও-কারও দাবি, দীর্ঘদিন জেলা সভাপতি থাকার ফলে স্বপনবাবু দলের সংগঠন হাতের তেলোর মতো চেনেন। মেয়াদ ফুরনো পুরসভাগুলিতে অদূর ভবিষ্যতে ভোট হতে পারে। তাই এখনই শীর্ষ নেতৃত্ব জেলা সভাপতি পদে রদবদল করবেন কি না, তা নিয়ে তাঁরা সংশয়ে। তাঁদের মতে, রদবদল হলেও এমন কোনও বর্ষীয়ান নেতাকে পদে আনা উচিত, গোটা জেলার সংগঠন যিনি ভাল ভাবে চেনেন এবং দলের সর্ব স্তরে যাঁর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তৃণমূলের একটি অংশের আবার মত, দল এখন নবীন মুখকে নেতৃত্বে আনার দিকে ঝুঁকছে। স্বপনবাবুকে সরানো হলে, নবীন প্রজন্মের কাউকে আনা হতে পারে। আর একটি অংশ মনে করছে, ভোটের আগে ভোটকুশলী সংস্থা প্রার্থী নির্বাচনে যে ভাবে ভূমিকা নিয়েছিল, জেলা সভাপতি বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও তারা তেমন ভূমিকা নিতে পারে।
তবে রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, ‘‘কে পদে বসবেন, কেউ জানেন না। দলীয় নেতৃত্ব যখন ঘোষণা করবেন, তখনই জানা যাবে। তার আগে কোনও জল্পনা করা উচিত নয়।’’