E-Paper

কাজ এগোতে দিচ্ছে না, মোদীর মন্তব্যে তরজা

দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না দেওয়ায় এক বছর আগে কাজ বন্ধ করতে হয়েছিল। ২০২৩-র শেষ দিকে দ্বিতীয় দফায় ৩০০ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্র।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৪ ০৯:২৭
অন্ডাল বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে ধানবাদের উদ্দেশে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

অন্ডাল বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে ধানবাদের উদ্দেশে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র ।

ঝরিয়া, রানিগঞ্জ কোলফিল্ড প্রজেক্টের কাজ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জন্য এগোচ্ছে না। শুক্রবার হুগলির আরামবাগের সভা থেকে এমনই অভিযোগ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লোকসভা ভোটের মুখে মোদীর এই মন্তব্য আদতে জেলার ধস কবলিত এলাকার পুনর্বাসন নিয়েই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে তরজাও।

এ দিন মোদী বলেন, “ঝরিয়া, রানিগঞ্জ কোলফিল্ড প্রজেক্ট প্রায় ছ’বছর আগে শুরু হয়। কিন্তু এই সরকার (পশ্চিমবঙ্গ) এটি এগোতে দিচ্ছে না।”

ঘটনা হল, ১৯৯৮-এ অবিভক্ত বর্ধমানের সিটুর জেলা সম্পাদক প্রয়াত হারাধন রায় ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের জন্য পুনর্বাসনের আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন। ২০০৫-এ আদালত কেন্দ্রীয় সরকারকে পুনর্বাসনের নির্দেশ দেয়। পরে ২০০৯-এ ঝাড়খণ্ডে কোল ইন্ডিয়ার ‘বিসিসিএল’-এর অন্তর্গত ঝরিয়া ও পশ্চিমবঙ্গে ইসিএলের রানিগঞ্জ কয়লাঞ্চলকে পুনর্বাসনের জন্য দু’টি পৃথক প্রকল্প বরাদ্দ করে। রানিগঞ্জ প্রকল্পে ২,৬৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। ১২৬টি এলাকার ২৯ হাজার পরিবারকে পুনর্বাসনের উপযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

ইসিএল সূত্রে জানা যায়, ২০১২-য় কেন্দ্র কোল ইন্ডিয়ার মাধ্যমে প্রথম দফায় রাজ্য সরকারকে ৫৮১ কোটি টাকা পাঠায়। কাজটির নোডাল এজেন্ট ‘আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ’ (এডিডিএ) সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-র শেষে সালানপুরের দাসকেয়ারির দু’টি জায়গা, জামুড়িয়ার বিজয়নগর ও অন্ডাল বিমানবন্দর এলাকায় ১০,১৪৪টি আবাসন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এডিডিএ-র দাবি, এ সব আবাসনের মূল কাঠামো তৈরি হয়ে গিয়েছে। বিজয়নগরে ১৫৬ জনকে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। অন্ডাল বিমানবন্দর এলাকায় ৪৮০টি আবাসনের কাজ শেয হওয়ার পরে, সেখানে পুনর্বাসন দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এডিডিএ কর্তৃপক্ষের দাবি, মূল পরিকাঠামো বছর দুয়েক আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না দেওয়ায় এক বছর আগে কাজ বন্ধ করতে হয়েছিল। ২০২৩-র শেষ দিকে দ্বিতীয় দফায় ৩০০ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্র। তাতে নির্মিত আবাসনগুলির ভিতরে ও বাইরে বাকি কাজ শেষ করার প্রক্রিয়া চলছে। এর পরে বাকি আবাসন কী ভাবে তৈরি করতে হবে, তা সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর ঠিক করবে।

যদিও, মোদীর মন্তব্যের সূত্র ধরে এডিডিএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীর অভিযোগ, “ছ’বছর নয়। বারো বছর টাকা ফেলে রেখেছে এই রাজ্য সরকার। ছ’বছর পরে কাজ শুরু করেছে। টাকা নয়ছয় হওয়ায় অর্ধেক আবাসন তৈরি করতে পারেনি।” তাঁর আরও অভিযোগ, “বাকি বাড়ি তৈরির জন্য জমি খুঁজে পাচ্ছে না। কারণ, জমি মাফিয়ারা সরকারি ও বেসরকারি মালিকানাধীন জমি দখল করে বিক্রি করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।” বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইও বলেন, “এ দিন প্রধানমন্ত্রী বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে রেলপথ থেকে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় পুনর্বাসন প্রকল্প কী ভাবে রাজ্য সরকার আটকে রেখেছে, সে কথা বলেছেন। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বও তা বার বার বলছেন।” তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন অবশ্য দাবি করেন, “দ্বিতীয় কিস্তি টাকা দিয়েছে অনেক দেরিতে। এরই মধ্যে প্রথম দফার কাজ রাজ্য সরকার শেষ করেছে। ঠিক সময়ে টাকা না দেওয়াতেই এক সঙ্গে কাজ করা
যাচ্ছে না।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Narendra Modi Raniganj

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy