Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Small Industries

শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ, দাবি পুরনো শিল্পতালুক নিয়েও

নতুন শিল্প-সম্ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েও, জেলায় থাকা পুরনো শিল্পতালুকগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন জরুরি বলে মনে করছে বণিক সংগঠনগুলি।

শিল্পোদ্যোগীদের জন্য ১৯৩ একর জমি অধিগ্রহণ করল রাজ্য সরকার।

শিল্পোদ্যোগীদের জন্য ১৯৩ একর জমি অধিগ্রহণ করল রাজ্য সরকার। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৫৫
Share: Save:

অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগীদের জন্য সুলভে জমির ব্যবস্থা করতে আসানসোলের সূর্যনগর ও ঢাকেশ্বরীতে প্রায় ১৯৩ একর জমি অধিগ্রহণ করল রাজ্য সরকার। সেখানে শিল্প গড়ার প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে বলে দাবি। বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েও, পশ্চিম বর্ধমানের পুরনোশিল্পতালুকগুলির অবস্থা নিয়ে পদক্ষেপ করার আর্জি জানাচ্ছে বিভিন্নবণিক সংগঠন।

জেলার বণিক সংগঠনগুলি অনেক দিন ধরেই এমএসএমই ক্ষেত্রে উন্নত পরিকাঠামো-সহ জমির ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছে। রাজ্যের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার আয়োজিত আসানসোলের শিল্প-বাণিজ্য সম্মেলনে যোগ দিয়ে রাজ্যের শ্রম এবং আইন ও বিচার দফতরের মন্ত্রী তথা আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটক বলেন, “সূর্যনগর ও ঢাকেশ্বরীতে সরকার প্রায় ১৯৩ একর জমি অধিগ্রহণ করেছে। রাজ্য ক্যাবিনেটের বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত করে সেই জমি শিল্প দফতরকে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেখানে কী শিল্প হবে, সে বিষয়ে ওই দফতর সিদ্ধান্ত নেবে।” রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি এবং বস্ত্র শিল্প চন্দ্রনাথ সিংহ জানান, মূলত এমএসএমই ক্ষেত্রে উৎসাহ দিতেই এই পদক্ষেপ। এই উদ্যোগকে সফল করতে নগর পরিকল্পনা দফতরের কাছে বিষয়টি অনুমোদনের জন্য পাঠানো-সহ যাবতীয় প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, দক্ষিণবঙ্গের আটটি জেলার এমএসএমই শিল্পোদ্যোগীদের যাবতীয় সমস্যা এক ছাদের তলায় সমাধানের জন্য দুর্গাপুরে একটি কাউন্সিল তৈরি করা হচ্ছে।

তবে নতুন শিল্প-সম্ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েও, জেলায় থাকা পুরনো শিল্পতালুকগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন জরুরি বলে মনে করছে বণিক সংগঠনগুলি। ‘ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর সাধারণ সম্পাদক শচীন রায় এ দিন বলেন, “নতুন শিল্পতালুক হোক, ভাল কথা। কিন্তু পুরনোগুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ভীষণ জরুরি।” জামুড়িয়ার শিল্পোদ্যোগী অজয় খেতান জানাচ্ছেন, এই ধরনের শিল্পক্ষেত্রে অর্থের সংস্থান ও উৎপাদিত সামগ্রী বাজারজাত করাটাই সব থেকে সমস্যার। শিল্পতালুক তৈরির সঙ্গে এই দু’টি বিষয়ে সরকারের নজর দেওয়া দরকার বলে মনে করছেন তিনি। তা না হলে, শিল্পতালুক তৈরির উদ্দেশ্যটাই সফল হয় না বলে অজয়ের দাবি।

এ দিকে, সরকারেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ঢাকেশ্বরীতে বন্ধ হওয়া বহু পুরনো একটি কটন মিলের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ১৯৫২-য় মিলটি তৈরি হয়। ১৯৬৩-র ১৬ অগস্ট সেটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকেই মিলের অধীনে থাকা প্রায় ৩৬০ একর জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ওই জমিরই ১৯৩ একর অধিগ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার।

পাশাপাশি, পুরো বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন বাসিন্দাদের একাংশ। বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় গিয়ে মিলের প্রাক্তন কর্মী, রামনাথ সাউয়ের সঙ্গে দেখা হয়। তিনি বলেন, “১৯৫৮-য় এই মিলে মাসিক ৩২ টাকা বেতনে চাকরি পেয়েছিলাম। পাঁচ বছর চাকরির পরে মিল বন্ধ হয়ে যায়। তার পরে খনিতে চাকরি নিই। এখন নতুন শিল্প হলে, প্রাণ ফিরে পাবে এলাকা।” স্থানীয় বাসিন্দা সুনীল মান্ডি জানাচ্ছেন, তাঁর বাবা এই মিলের কর্মী ছিলেন। তখন থেকে এখানেই মিলের আবাসনে থাকতেন। মিল বন্ধ হওয়ার পরেও এলাকা ছাড়েননি। তিনি বলেন, “এখানে নতুন কোনও শিল্প হলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মখেয়ে-পরে বাঁচবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Small Industries Asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE