এই হাল জলাশয়ের। নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘ দিন সংস্কারের অভাবে মজে গিয়েছিল পূর্বস্থলী ১ ব্লকের মুড়িগঙ্গা। সেটি সংস্কারের জন্য ৩৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করেছে রাজ্যের সেচ ও জলপথ বিভাগ। প্রথম দফার কাজের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৮ কোটি ৭ লক্ষ ৮৪ হাজার ৭৭৭ টাকা। পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতি জানিয়েছে, কাজের জন্য দরপত্র ডাকা শুরু হয়েছে। পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক বলেন, ‘‘মুড়িগঙ্গা সংস্কার হলে এলাকার ভোল বদলে যাবে। পর্যটকের ভিড় বাড়াবে। অর্থনৈতিক উন্নতি হবে এলাকার।’’
সাত কিলোমিটার লম্বা জলাশয়টি শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের দোলগোবিন্দপুর থেকে শুরু হয়ে মিশেছে সমুদ্রগড়ের জালুইডাঙা এলাকায় ভাগীরথীতে। আদিগঙ্গা নামেও পরিচিত এটি। প্রাচীন জলাশয়টির জলধারণ ক্ষমতা বেশির ভাগ জায়গাতেই তলানিতে নেমে গিয়েছে। জলাশয়টি মজে যাওয়ায় আশেপাশের বেশ কিছু এলাকায় অতিবৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। বছর পাঁচেক আগে মুখ্যমন্ত্রী একটি সভার জন্য কাছাকাছি নদিয়া জেলার নবদ্বীপে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে মুড়িগঙ্গার কাছাকাছি পূর্ত দফতরের ডাকবাংলোয় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন তিনি। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীকে মুড়িগঙ্গা সংস্কারের আর্জি জানান পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, জলাশয়ের সংস্কার হলে মৎস্যজীবী, চাষিদের যেমন উপকার হবে। তেমনি পর্যটকদের কাছেও তুলে ধরা যাবে।
মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে জেলাশাসককে দেখতে বলেন। শুরু হয় মাপজোক। এই জলাশয়ের কিছুটা অংশ রয়েছে নদিয়াতেও। মাপজোকের পরে জলাশয়ের মাটি তোলা, পাড়ের রাস্তা তৈরি, আলো দিয়ে সাজানোর মতো নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়। পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির দাবি, মুড়িগঙ্গা সংস্কার হলে জলধারণ ক্ষমতা বাড়বে জলাশয়ের। ফলে শ্রীরামপুর, সমুদ্রগড় পঞ্চায়েত যে সমস্ত নিচু এলাকায় অতিবৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় তা বন্ধ হবে। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের বেশ কিছু এলাকার জলে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক রয়েছে। সারা বছর মুড়িগঙ্গায় জল পেলে জলাশয়ের উপরিভাগের জল শোধন করে স্থানীয় মানুষকে বিলিও করা যাবে। জলাশয়ের দু’পাশে রাস্তা, আলো, নৌকাভ্রমণের ব্যবস্থা করা গেলে পর্যটকদের কাছেও আকর্ষণ বাড়বে। জয়াশয়ে মাছ চাষ, হাঁস পালনের মতো সুযোগও পাবেন স্থানীয় মানুষজন।
স্বপন বলেন, ‘‘মুড়িগঙ্গা সংস্কার হলে অনেক দিক থেকে লাভ। সংস্কারের জন্য প্রথম দফার অর্থ বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে। আশা করছি, খুব শীঘ্র কাজ শুরু হয়ে যাবে। মুখ্যমন্ত্রীরকাছে কৃতজ্ঞ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy