—প্রতীকী চিত্র।
ভর্তির এক মাসের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন, সাত মাসের মধ্যে প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকস্তরে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আট মাস কেটে গেলেও পরীক্ষা তো দূর, এখনও রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শেষ হয়নি।
সম্প্রতি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম ও হুগলি জেলার ৭৩টি কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে গঠিত সংগঠন উপাচার্য, সহ-উপাচার্যকে ই-মেল করে প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা দ্রুত নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনও একই দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। অধ্যক্ষ থেকে ছাত্র সংগঠনের আশঙ্কা, রেজিস্ট্রেশন শেষ হওয়ার পরে ফর্ম পূরণ করতে হবে পড়ুয়াদের। তারপরে পরীক্ষা দেওয়া যাবে। ততদিনে লোকসভা নির্বাচনের জন্য কলেজগুলির ‘দখল’ নিয়ে নেবে প্রশাসন। ফলে, প্রথম আর দ্বিতীয় সিমেস্টারের মাঝে ঠিকমতো সময় পাবেন না পরীক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “পুরো পদ্ধতিটাই নতুন। আমাদের মতো বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৬ হাজার পরীক্ষার্থীর জন্য পোর্টাল তৈরি হয়েছে। যার মধ্যে দিয়ে একজন পরীক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন থেকে শেষ সিমেস্টার পর্যন্ত সব তথ্য হাতের মুঠোয় পাবে। সেই কারণে কিছুটা দেরি হয়েছে।” এখনও পর্যন্ত ৪৯ হাজারের বেশি পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। কয়েক দিন বন্ধ থাকার পরে কাল, শনিবার থেকে ফের রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। অধ্যক্ষদের সংগঠনের দাবি, পুজোর ছুটির আগেই সাধারণত রেজিস্ট্রেশন শেষ হয়ে যায়। মার্চে প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এ বার পুরো প্রক্রিয়াটাই দেরিতে শুরু হল।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, অনেকগুলি কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রথমত, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে চার বছরের স্নাতক স্তর ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে শুরু হতে চলেছে। তাতে নতুন নতুন কোর্স যুক্ত হয়েছে। প্রতিটি বিভাগকে আলাদা করে পোর্টাল তৈরি করতে হয়েছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে একটি আন্তর্জাতিক মানের সংস্থার। কিন্তু তারা দীর্ঘদিন টাকা না পাওয়ায় পোর্টাল তৈরি ঢিমেতালে চলায় রেজিস্ট্রেশন করাতে গিয়ে দেরি হচ্ছে। অধ্যক্ষদের সংগঠনের দাবি, একাধিক পাঠক্রম নিয়ে কলেজগুলির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সংঘাত দেখা দিয়েছিল। এ ছাড়াও এগজ়িকিউটিভ কমিটির বৈঠক পাঁচ মাস ধরে হচ্ছে না ফলে জাতীয় শিক্ষা নীতি মেনে পরীক্ষাবিধি অনুমোদন হয়নি। সবমিলিয়ে প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা নিয়ে টালবাহানা দেখা দিয়েছে।
অধ্যক্ষদের সংগঠনের সভাপতি, হুগলির বেঙাইয়ের একেপিসি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পরমার্থ ঘোষ বলেন, “কলেজগুলিতে সাধারণ কোর্সে পড়ুয়ারা ভর্তি হচ্ছে না। এখন পরীক্ষা ঠিক সময়ে না হলে পড়ুয়ারা তো আরও বিমুখ হয়ে পড়বে।” ওই সংগঠনের সম্পাদক, মানকর কলেজের সুকান্ত ভট্টাচার্য বলেন, “দ্রুত পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দু’বার চিঠি দিয়েছি।” বীরভূম মহাবিদ্যালয়ের সদ্য-প্রাক্তন অধ্যক্ষ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় বলেন, “এ ধরনের অচলাবস্থা একদমই কাম্য নয়।”
ছাত্র সংগঠনগুলিও সরব হয়েছে। জেলা টিএমসিপির সভাপতি স্বরাজ ঘোষ বলেন, “দ্রুত পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বলেছি।”
এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায়চৌধুরীরও দাবি, “পরীক্ষার্থীদের নিয়ে ছেলেখেলা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় করেই চলেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy