অনুব্রত মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র
ভরা এজলাস। চলছে সওয়াল-জবাব। তার মধ্যেই নিজের ‘অনুগামীদের’ ইশারায় চুপ করার নির্দেশ দিলেন গরু পাচার মামলায় ধৃত বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল! বুধবার অনুব্রতকে ওই আদালতে তোলার পরে এজলাসে এমন দৃশ্যই দেখা গিয়েছে বলে আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ দিন অনুব্রতের আইনজীবীরা সওয়াল সবে শেষ করেছেন। তার পরে, সওয়াল শুরু করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমার। তাঁর বক্তব্যে তিনি অনুব্রতকে গত কয়েকটি সওয়ালের মতো এ বারও ‘প্রভাবশালী’ বলে উল্লেখ করেন। আর তা শুনেই এজলাসে উপস্থিত অনুব্রত-‘ঘনিষ্ঠদের’ মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়। একটা সময় দেখা যায়, তাঁদের দিকে তাকিয়ে অনুব্রত মুখে আঙুল দিয়ে চুপ করতে বলেন। মুহূর্তে থেমেও যায় সে গুঞ্জন!
এ দিকে, অনুব্রতকে আদালতে পেশ করার আগে মঙ্গলবার থেকেই পুলিশের তৎপরতা ছিল নজরে পড়ার মতো। কিন্তু জনতা এবং আইনজীবীদের মধ্যে তাঁকে নিয়ে গত কয়েক বার যে উৎসাহের ছবিটা দেখা গিয়েছিল, এ বার তা দেখা যায়নি।
এ দিন সকাল ১১টা ৫-এ গোলাপি ফতুয়া ও সাদা পাজামা পরিহিত অনুব্রতকে সংশোধানাগার থেকে বার করা হয়। তাঁকে কারও সাহায্য ছাড়াই পুলিশের গাড়িতে উঠতে দেখা যায়। তবে কলপ করার অনুমতি না মেলায়, চুল সাদা হয়ে গিয়েছে।
অনুব্রতকে সংশোধানাগার থেকে মাত্র ৩০০ মিটার দূরে আদালত চত্বরে নিয়ে আসার রাস্তার দু’পাশ পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারে ছয়লাপ ছিল। রাস্তার দু’দিকে দড়ি দিয়ে ব্যারিকেড করা হয়। নিরাপত্তার পুরো বিষয়টি দেখভাল করেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) কুলদীপ সেনাওয়ানে। সিবিআই আদালতের গেট পর্যন্ত পুলিশের তরফে গার্ডরেল দেওয়া হয়েছিল। সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। সিবিআই আদালতে অনুব্রতের ঢোকা থেকে বেরোনো পর্যন্ত আইনজীবী, পুলিশ ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি ছাড়া কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
তবে, অনুব্রত আদালতে পৌঁছতেই দেখা যায়, বীরভূমের নানা এলাকার কয়েক জন তাঁর ‘অনুগামী’ও ঢুকে পড়েছেন। ১১টা ৪৫-এ শুরু হয় শুনানি। তাঁর আইনজীবীদের বক্তব্য পেশ করার সময় অনুব্রতকে বার বার মাথা নাড়াতে দেখা যায়। একটা সময় তিনি দীর্ঘক্ষণ চোখ বন্ধ করে ছিলেন।
আইনজীবীদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওই অনুগামীরাই সিবিআইয়ের আইনজীবী প্রভাবশালী-তত্ত্ব সামনে আনতেই গুঞ্জন শুরু করেন। তাঁদেরকে স্রেফ এক অঙ্গুলি-নির্দেশে অনুব্রত যে ভাবে চুপ করান, তা দেখে তাঁর এক অনুগামীর বক্তব্য, “দাদা বিপদে। কিন্তু তেজটা একই রকম আছে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy