বর্ধমানের মিষ্টির দোকান নেতাজির জন্মদিন পালন। নিজস্ব চিত্র।
১২৫তম জন্মদিনে নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে গোটা দেশ। বর্ধমানের বিসি রোডের নেতাজি মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে প্রায় ৮২ বছরের পরম্পরাকে সামনে রেখে পালিত হল এই দেশনায়কের জন্মদিন। এ রাজ্যে তো বটেই, গোটা দেশেই নেতাজির নামে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু এই দোকানের গল্প সম্পূর্ণ আলাদা। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে স্বয়ং নেতাজির স্মৃতি, স্বদেশি আবেগের উত্তরাধিকার।
নেতাজির ছবিতে ফুল দেওয়ার পাশাপাশি শনিবার পথচারীদের মধ্যে বিনামূল্যে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। নেতাজির জন্মজয়ন্তী উদ্যাপন নিয়ে দোকানের বর্তমান কর্ণধার সৌমেন দাস বলেছেন, তাঁর মাতামহ গোবিন্দচন্দ্র নাগ এই দোকানের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ছিলেন নেতাজির অনুগামী। নেতাজি যখন কলকাতার মেয়র, তখন বর্ধমানে এসেছিলেন। বর্ধমান পুরসভার একটি ভবন এবং ব্যাঙ্ক উদ্বোধনের কর্মসূচি ছিল তাঁর। সে সময় তরুণ সুভাষচন্দ্রের প্রভাব গোটা বাংলা জুড়ে। সে দিন নেতাজি বর্ধমান শহরের বি সি রোডে একটি পদযাত্রা করেন। সেই পদযাত্রায় অন্য অনেকের সঙ্গে ছিলেন তরুণ গোবিন্দচন্দ্র নাগ। এ ছাড়া শৈলেন মুখোপাধ্যায়, সুবোধ মুখোপাধ্যায়, বামাপতি ভট্টাচার্য-সহ সে সময়ের স্বদেশি অনুরাগীরাও অংশ নিয়েছিলেন সেই মিছিলে।
সে সময় স্বদেশি ভাবাবেগের অন্য মাত্রা ছিল। স্বদেশি ভাবনায় জারিত হয়ে স্বয়ং নেতাজির নামে এই দোকান খুলেছিলেন গোবিন্দচন্দ্র। পরবর্তীকালে দোকান অনেক বড় হয়েছে। শাখাও আছে দু’টি। এখনও নেতাজি স্মরণ একই ভাবে তাঁরা করেন বলে জানিয়েছেন সৌমেনবাবু। তিনি বলেছেন, ‘‘আগে অনেক বড় করে হত। নহবত বসত। সারাদিন অনুষ্ঠান চলত। লকডাউন-সহ নানা কারণে এ বারে অনুষ্ঠান তুলনায় অনেক ছোট করে হচ্ছে।’’ নেতাজির জন্মদিন পালন নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষেত্রনাথ কেশ বলেছেন, ‘‘২৮ বছর ধরে দেখে আসছি। খুব ভাল লাগে এই প্রয়াস।’’ ইতিহাসবিদ সর্বজিৎ যশ বলেছেন, ‘‘নেতাজির নানা কর্মসূচিতে এই রাজার শহরে এসেছি। কিন্তু এই দোকানের কাহিনিতে শহরের স্বদেশী ঘরানা জড়িয়ে আছে।’’ গোটা বর্ধমান এই দোকানের গল্প শোনে আজও। শোনে নেতাজি ও তাঁর এক স্বদেশি ভক্তের স্বনির্ভরতার কাহিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy