উদ্বোধন হবে এই সুইমিং পুলের। ছবি: শৈলেন সরকার।
শেষমেশ চালু হতে চলেছে আসানসোলের সুইমিং পুল। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের প্রায় ছ’বছর পরে আজ, বুধবার সেটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। তার পর থেকেই পুলটি সাধারণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে আসানসোল স্টেডিয়াম কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু, পুলটির রক্ষণাবেক্ষণের খরচ আসবে কোথা থেকে, সে নিয়েই এখন চিন্তায় পড়েছেন স্টেডিয়াম কমিটির কর্তারা।
সরকারি উদ্যোগে আসানসোলে একটি সুইমিং পুল তৈরি করার দাবি উঠেছিল বছর দশেক আগে। সেই দাবি মেনে ২০০৮ সালের ২২ ডিসেম্বর রাজ্য সরকারের উদ্যোগে একটি সুইমিং পুলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। সে দিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও তৎকালীন ক্রীড়া ও যুবকল্যাণমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। তার কিছু দিন পরে সুইমিং পুল তৈরির কাজ শুরুও হয়। কিন্তু বছর দুয়েক আগে অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে, সেটি তখন চালু করা যায়নি।
কাজ বন্ধ হয়ে পড়েছিল কেন? আসানসোল স্টেডিয়ান কমিটির সম্পাদক অমল সরকার জানান, মূল সমস্যা ছিল জল। তৎকালীন আসানসোল পুরবোর্ডের কাছে নিয়মিত জল সরবরাহের আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষের তরফে তখন সে ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। তাই পুল চালু করার ব্যাপারে এগোনো সম্ভব হয়নি। তা ছাড়া সুইমিং পুলে নিয়মিত সাঁতার প্রশিক্ষণ বা অভ্যাস করতে কিছু কারিগরি বিষয় থাকে যা এত দিন এখানে তৈরি হয়নি। তাই এটি চালু করা যায়নি।
অমলবাবুর দাবি, সেই ত্রুটিগুলি এখন আর নেই। তিনি জানান, এটি দেখভালের জন্য একটি স্থায়ী কমিটি তৈরি করা হবে। যত দিন সেই কমিটি তৈরি না হচ্ছে তত দিন তাঁকেই আহ্বায়ক করে একটি অস্থায়ী কমিটি গড়ে সুইমিং পুলের কাজ চালানোর ভার দেওয়া হয়েছে। অমলবাবু বলেন, ‘‘সম্প্রতি রাজ্য সরকারের কাছ থেকে প্রায় ১৬ কোটি টাকা অনুমোদন পাওয়ায় এখানে কাজ শেষ করা গিয়েছে।’’ আজ, বুধবার সেটির উদ্বোধন করবেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা শহরের বিধায়ক মলয় ঘটক। অমলবাবু জানান, শুরুর দিকে পুলটি নির্মাণের জন্য আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বংশোগোপাল চৌধুরী তাঁর তহবিল থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা খরচ করেছিলেন।
সুইমিং পুলের নির্মাণ শেষ হলেও পুরোপুরি সমস্যা মুক্ত হতে পারছে না স্টেডিয়াম কমিটি। কারণ, পুলের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে খরচ হবে তা কোথা থেকে আসবে, ভেবে কূল পাচ্ছেন না কমিটির সদস্যেরা। অমলবাবু জানান, সুইমিং পুলে যাঁরা প্রশিক্ষণ নিতে আসবেন তাঁদের জন্য অন্তত দু’জন প্রশিক্ষক ও দু’জন সহকারী নিয়োগ করতে হবে। সব সময়ের জন্য নিরাপত্তারক্ষী রাখতে হবে। তাঁদের বেতন, জলের পরিচর্যার খরচ, বিদ্যুতের বিল-সহ নানা আনুষঙ্গিক খরচের জন্য প্রতি মাসে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা লাগবে।
অমলবাবু বলেন, ‘‘এই টাকা কোথা থেকে আসবে, তা ভেবে আমরা মুশকিলে পড়েছি।’’ তিনি জানান, অন্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মতো এই সুইমিং পুল লাভজনক ভাবে চালানো সম্ভব নয়। ন্যূনতম অর্থের বিনিময়ে আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তিনি জানান, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) কাছে আবেদন জানানোর কথা ভাবা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy