Advertisement
E-Paper

কাজের দেখভাল নেই, প্রশ্নে মন্ত্রী

মন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে মন্ত্রী। প্রথম বার কালনায় এসেই নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির কাজকর্ম নিয়ে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হল কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্তকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৬ ০০:৪৩
কালনা নিয়ন্ত্রিত বাজারে তৈরি হয়েও পড়ে মাছ বাজার। নিজস্ব চিত্র।

কালনা নিয়ন্ত্রিত বাজারে তৈরি হয়েও পড়ে মাছ বাজার। নিজস্ব চিত্র।

মন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে মন্ত্রী।

প্রথম বার কালনায় এসেই নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির কাজকর্ম নিয়ে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হল কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্তকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চুপ করে থাকলেন তিনি। কখনও আধিকারিকদের নির্দেশ দিলেন বিষয়গুলো দেখতে।

কাটোয়ায় আবার তাঁকেই দেখা গেল পুরপ্রধান, বিধায়ককের কাছে জবাব চাইতে। কেন দোকান বন্ধ, ঘর বিলি হয়নি কেন, এ ধরণের নানা প্রশ্ন তুললেন তপনবাবু।

মঙ্গবার বেলা ১১টা নাগাদ নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির কার্যালয়ের দ্বিতল ভবনে একটি বৈঠক করেন মন্ত্রী। ছিলেন প্রাণিসম্পদ দফতরের মন্ত্রী স্বপনবাবু, কালনার মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া, পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ, কালনা ১ ও ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্রাবণী পাল ও আলমগীর সাত্তার। প্রথমেই নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি সম্প্রতি কী কী কাজ করেছে এবং কী করতে চলেছে তার তালিকা নিয়ে বসেন স্বপনবাবু। তাঁর অভিযোগ, লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি উন্নয়ণনমূলক কাজ করে। অথচ কোথাও হোর্ডিং দিয়ে জানানো হয় না। আবার কাজ করার পরে প্রকল্পগুলি কী দশায় রয়েছে, সে খোঁজও দফতর নেয় না বলে তাঁর দাবি। তিনি জানান, সম্প্রতি বাড়ি বাড়ি শৌচাগার তৈরি করা নিয়ে সচেতনতা মিছিলে হাঁটার সময় তিনি দেখেন, একটি পানীয় জলের নলকূপের মাথা ভাঙা। অনেক খোঁজ করে জানা যায়, সেটি নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির। মন্ত্রীর দাবি, দফতর ওই নলকূপটি তৈরির পরে পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিকে হস্তান্তর করে দিলে দ্রুত সারানো যেত। এ ছাড়া ওই সমিতির কাজের খবর জনপ্রতিনধি এবং আধিকারিকদের কাছেও পৌঁছয় না বলে তাঁর দাবি। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘কালনার রানিবন্ধ গ্রামের হাট উন্নয়নে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি ২৫ লক্ষ টাকার বেশি বরাদ্দ করেছে। অথচ আমার বিধানসভা এলাকা হলেও সে খবর এখানে এসে পেলাম।’’

মন্ত্রীর মতোই সাধারণ মানুষও নানা দাবিদাওয়া নিয়ে সরব হন। তাঁদের অভিযোগ, এক দশক আগে মাছের বাজারের পাকা ঘর তৈরি হয়েছে। অথচ তা চালু হয়নি। এ ছাড়াও সমিতির কাছ থেকে অল্প টাকায় কেনা ঘর দোকানদারেরা অন্য ব্যবসায়ীকে চড়া দামে বিক্রি করছেন বলেও জানান তাঁরা। কিসান মান্ডিগুলিতেও এখই কারবার চলছে বলে তাঁদের দাবি। স্বপনবাবু কারা ঘর পেয়েছে সে তালিকা টাঙিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। বিষয়টি দেখতে বলেন তপনবাবুও। এক যুবক প্রশ্ন করেন, ‘‘পাঁচ বছর আগে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতিতে প্রায় ১০টি সোলার বাতি লাগানো হয়েছিল। মাস ছয়েক পরেই তা নষ্ট হয়ে যায়। ব্যবস্থা কী হবে না?’’ চক বাজারের পরিকাঠামো উন্নয়ন, মাছের বাজারের ছাউনির দাবিও ওঠে। তপনবাবু শুধু বলেন, ‘‘যে সমস্ত ত্রুটি রয়েছে তা খুব দ্রুত মেরামত করা হবে।’’

কাটোয়ায় তপন দাশগুপ্ত।

কাটোয়ায় অবশ্য গোড়া থেকেই অন্য মেজাজ ছিল মন্ত্রীর। দুটো নাগাদ কাটোয়া-কালনা রোডের উপর নিয়ন্ত্রিত বাজারে পৌঁছে ১২৫টি দোকানের অধিকাংশই বন্ধ দেখে ক্ষোভ জানান। পরিকল্পনাহীন ভাবে তৈরি দোকানগুলো গুদামে পরিণত হওয়ার কড়া সমালোচনা করে পুরপ্রধান অমর রাম ও বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে ঘরগুলো গরিব চাষিদের দেওয়ার পরামর্শ দেন। ১৫ একর জমির উপর নতুন বহুমুখী হিমঘর তৈরি ও অতিথি বিশ্রামশালা তৈরিরও প্রতিশ্রুতি দেন। সব্জিতে ক্ষতিকারক রং মেশানো নিয়ে সতর্ক করেন তিনি। বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী চান সবাই ভাল খান, ভালো থাকুন। রং দেওয়া সব্জি ক্যানসার জাতীয় রোগের কারণ হতে পারে। তাই সব্জিতে রং বরদাস্ত করা হবে না।’’ কাটোয়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্রের মাঠে হাজার বর্গফুট জায়গার উপর ‘সুফল বাংলার’ স্টল তৈরিরও প্রতিশ্রুতি দেন। ওই স্টলে তুলাইপঞ্জি চাল, ব্ল্যাক রাইস, রাঁধুনি চাল, ১৪টাকা কেজি আলুর পাশাপাশি কোয়েলের মাংস, ডিম, হাঁস-মুরগির ডিম-মাংস, প্যাকেট করা ঘোল, কাসুন্দি, দই বিক্রি হবে বলে জানান। পাঁচঘড়া মোড় থেকে পানুহাট ইঁদারাপাড় পর্যন্ত ৩ কিমি রাস্তার সংস্কারে ৫১ লক্ষ টাকা বরাদ্দের কথাও বলেন। এই রাস্তাটির এক দিক পুরসভার ও অন্য দিক খাজুরডিহি পঞ্চায়েতের হওয়ায় প্রশাসনিক টালবাহানায় দীর্ঘদিন ধরেই রাস্তাটি বেহাল। দাঁইহাট থেকে পলাশি,পলসোনা পঞ্চায়েত ও করুই পঞ্চায়েতের আরও ৪টি রাস্তা সংস্কারের জন্যও ৪৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেন। কেতুগ্রামেও পালিটা-নারেঙ্গা, বাদশাহি রোড-কাটারডিহি, গঙ্গাটিকুরি-অম্বলগ্রাম ও কেতুগ্রাম থেকে গোমাই পর্যন্ত চারটি রাস্তা তৈরির টাকা বরাদ্দ করেন। সপ্তাহখানেক আগে তৈরির আগেই ভেঙে পড় কান্দরা কিসান মান্ডির দেওয়াল দেখে বলেন, ‘‘বোঝা যাচ্ছে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হয়েছিল। তদন্ত করে কোনও ঠিকাদার বা সুপারভাইজার যুক্ত থাকলে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা হবে।’’

FishMarket Kalna Tapan Dasgupta Swapan Debnath
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy