কয়েকদিন ধরেই দিনেদুপুরে চুরি বেড়ে গিয়েছিল এলাকায়। বাড়িতে লোক না থাকলেই হাপিস হয়ে যেত গয়নাগাঁটি, টাকা পয়সা যা আছে সব। এরই তদন্তে নেমে পুলিশ খোঁজ পেল এমন একটা দলের যারা দিনে চুরিতেই সিদ্ধহস্ত। রাজু শেখ ওরফে রজ্জাক নামে তাদের এক জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালনার সিঙেরকোণ, শিশিরতলা-সহ বেশ কিছু জায়গা থেকে পরপর এ ধরণের অভিযোগ মিলছিল। ৯ মে সিঙেরকোণের কুমোরপাড়া এলাকা থেকে চুরির শেষ অভিযোগটি মেলে। অভিযোগ ছিল, দুপুরে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে তালা ভেঙে ঢুকে দুষ্কৃতীরা সোনার গয়না, নগদ টাকা এমনকী হিমঘরের আলুর বন্ডও নিয়ে পালায়। এরপরেই তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, সিমলাগড়ের চার-পাঁচ জনের একটি দল এ ধরণের চুরির সঙ্গে যুক্ত। পুলিশ কয়েকদিন এলাকার কিছু বাড়িতে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে নিজেরা ভেতরে ঢুকে চোর ধরার ফাঁদও পাতে। যদিও সে ফাঁদে দুষ্কৃতীরা পা দেয়নি। এরপরেই মঙ্গলবার রাতে কুলটি থেকে রাজুকে ধরে কালনা থানার পুলিশ। তার কাছ থেকে একটি লোহার সরু রড, হাতুড়ি-সহ তালা ভাঙার কিছু সরঞ্জামও পেয়েছে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, জেরায় রাজু জানিয়েছে, সকালের দিকে হুগলির সিমলাগড় এলাকা থেকে মোটর ভ্যানে করে কালনা থানার বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে পড়ছে দুষ্কৃতীরা। তারপর রাস্তা, বাড়ির আশপাশে কাগজ কুড়োনোর অছিলায় লক্ষ্য রাখছে কোন বাড়ির তালা বন্ধ। তারপর সুযোগ বুঝে তালা ভেঙে ঢুকে পড়ছে বাড়ির ভিতরে। রাজুকে জেরা করে ওই দলের আরও কয়েকজনের নাম জানা গিয়েছে বলেও পুলিশের দাবি। কালনা থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘বাকিদেরও ধরার চেষ্টা চলছে।’’ এ দিন সিমলাগড় এলাকার বাসিন্দা রাজুকে কালনা আদালতে তোলা হলে চার দিনের পুলিশ হেফাজত হয়। তবে সাধারণ মানুষকেও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আধিকারিকরা।
দিনেদুপুরে চুরির সঙ্গে মোটরবাইকে এসে ছিনতাইও বেড়ে গিয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। কিছু দিন আগেই এক পথচলতি ব্যক্তির কাছ থেকে ও ভাবে ব্যাগ ছিনিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। পরে ব্যাগটি দূরে পড়ে থাকতে দেখা গেলেও টাকা মেলেনি। পুলিশের অনুমান, এই দুষ্কৃতীরা বিভিন্ন ব্যাঙ্কের সামনে ওঁত পেতে বসে থাকছে। সুযোগ পেলেই ব্যাঙ্ক থেকে বেরোনো লোকজনেদের পিছনে ধাওয়া করে ছিনিয়ে নিচ্ছে টাকার ব্যাগ। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, মাস দুয়েক আগে এই ধরণের দুষ্কর্মের অভিযোগে ওড়িশার কয়েকজন যুবককে গুসকরা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। নতুন একটি দল সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে তাঁদের অনুমান। পুলিশের দাবি, দলটিকে ধরার জন্য ছদ্মবেশে বাইক নিয়ে নজরদারি চালানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy