Advertisement
E-Paper

প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেই এগোতে চান ওঁরা

কাঁকসার পিয়ারিগঞ্জ চারুচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীই তফসিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত। অনেকেই পরিবারের প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া।

বাঁ দিকে, দেবতি মুর্মু। শৌভিক মণ্ডল। ডান দিকে, আর্য প্রামাণিক। নিজস্ব চিত্র

বাঁ দিকে, দেবতি মুর্মু। শৌভিক মণ্ডল। ডান দিকে, আর্য প্রামাণিক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২০ ০৫:৪৮
Share
Save

কারও ইচ্ছে শিক্ষকতা করে নিজের সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েদের কাছে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়া। আবার কেউ চান পরিবারের আর্থিক মন্দা দূর করতে। কিন্তু আর্থিক প্রতিবন্ধকতা স্বপ্নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না তো, এমনই আশঙ্কা করছেন এ বার উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিকে ভাল ফল করা দেবতি মুর্মু, আর্য প্রামাণিক, শৌভিক মণ্ডলরা। সকলেই পরিবারের একমাত্র সন্তান।

কাঁকসার পিয়ারিগঞ্জ চারুচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীই তফসিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত। অনেকেই পরিবারের প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। তেমনই একজন দেবতি। পিরায়িগঞ্জের বাসিন্দা দেবতি এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৭১ নম্বর পেয়েছেন। তিনি জানান, মা রাসমণিদেবী দিনমজুরের কাজ করেন। পড়ার ফাঁকে মা’কেও সাহায্য করতে হয় তাঁকে। জঙ্গল থেকে শালপাতা তুলে এনে পাতা তৈরির কাজও করতে হয় তাঁকে। রাসমণিদেবী জানান, তাঁদের সম্প্রদায়ের বহু ছেলেমেয়ে শিক্ষার আলো পান না। দেবতি শিক্ষিকা হয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে চান। মাধ্যমিকের পরে বিশ্বভারতীতে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছিলেন দেবতি। কিন্তু টাকার অভাবে সেখানে যাওয়া সম্ভব হয়নি তাঁর। রাসমণিদেবী বলেন, ‘‘আমাদের সংসারে আর্থিক টান আছে। কিন্তু মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ হতে দেব না।’’

আর্থিক প্রতিকূলতা কাটিয়ে শিক্ষক হতে চান রানিগঞ্জের পুরাতন এগারার বাসিন্দা শৌভিক মণ্ডল। পুরাতন এগারা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র শৌভিক উচ্চ মাধ্যমিকে ৩৯৮ নম্বর পেয়েছেন। শৌভিক জানিয়েছেন, দু’জন শিক্ষক ন্যূনতম বেতনে টিউশন পড়িয়েছেন। স্কুলের শিক্ষকেরা বই দিয়ে সহায়তা না করলে তাঁর পক্ষে পড়াশোনা চালানো সম্ভব ছিল না। ভূগোলের অধ্যাপক হওয়ার স্বপ্ন তাঁর। বাবা দীনবন্ধুবাবু হোটেলে রান্না করেন। তাঁদের তিন জনের সংসার। তিনি বলেন, “আশা করি ছেলে নিজের চেষ্টাতেই সফল হবে।’’ এগারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অশোক গড়াই বলেন, “স্কুলের তরফে শৌভিককে সাধ্যমতো চেষ্টা করা হবে।’’

অন্য দিকে, মানকর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিকে ৬৭৫ নম্বর পেয়েছে আর্য প্রামাণিক। মানকের বাসিন্দা বাবা গণেশবাবু গানের শিক্ষক। কিন্তু বাইপাস সার্জারির পরে সে কাজও বন্ধ। মা যমুনাদেবী জীবনবিমার এজেন্ট। সেখান থেকেই চলে সংসার। আর্যর ইচ্ছে বায়োলজিতে গবেষণা করার। মা যমুনাদেবী বলেন, ‘‘সামান্য রোজগার। তাতে করে সংসার চালাব না ছেলের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করব, জানি না।’’

HS Students Kanksa

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}