Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

কয়লা চুরির সুড়ঙ্গে চাপা পড়ে মৃত ৩

খনিতে ঢুকে কয়লা কেটে নেওয়া হচ্ছে, কিছু দিন আগেই এমন অভিযোগ তুলেছিল রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা ইসিএল। এ বার তেমনই এক সুড়ঙ্গে ধস নেমে তিন যুবকের মৃত্যু হল আসানসোলের শ্রীপুর এরিয়ার ভানোড়া খনিতে।

মরণফাঁদ: এই রকম সুড়ঙ্গেই নেমেছে ধস। আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র

মরণফাঁদ: এই রকম সুড়ঙ্গেই নেমেছে ধস। আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ০০:৫৫
Share: Save:

নদীর দিক থেকে সুড়ঙ্গ খুঁড়েছে দুষ্কৃতীরা। সেই পথে খনিতে ঢুকে কয়লা কেটে নেওয়া হচ্ছে, কিছু দিন আগেই এমন অভিযোগ তুলেছিল রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা ইসিএল। এ বার তেমনই এক সুড়ঙ্গে ধস নেমে তিন যুবকের মৃত্যু হল আসানসোলের শ্রীপুর এরিয়ার ভানোড়া খনিতে।

শুক্রবার ভোরে কাজল বাউড়ি (৩২), নারায়ণ মির্ধা (২৩) ও গোবিন্দ মুর্মু (২৪) নামে এলাকার তিন জনের মৃত্যুর পরেই বাসিন্দারা খনির উৎপাদনের কাজে বাধা দিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, স্থানীয় যুবকদের খনিতে চাকরি দিতে হবে। যদিও ইসিএলের শ্রীপুর এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার শিউপূজন ঠাকুরের বক্তব্য, ‘‘এক দল দুষ্কৃতী সুড়ঙ্গ খুঁড়ে নিয়মিত খনিতে ঢুকে কয়লা চুরি করছে। এ দিন যা ঘটেছে তার সঙ্গে ইসিএলের কোনও সম্পর্ক নেই। এখানে স্থানীয়দের চাকরি আগেই হয়েছে।’’

বছরখানেক আগে ভানোড়া খোলামুখ খনিটি চালু করে ইসিএল। খনির কিছুটা দূর দিয়ে গিয়েছে নুনিয়া নদী। ইসিএল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, নদীর দিক থেকে খনি পর্যন্ত বেশ কিছু সুড়ঙ্গ খুঁড়েছে দুষ্কৃতীরা। এর ফলে যেমন কয়লা লুঠ হচ্ছে, তেমনই ওই সুড়ঙ্গ দিয়ে জল ঢুকে খনির নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কাও থাকছে। দিন কয়েক আগে কয়েকটি সুড়ঙ্গের মুখ বুজিয়ে দেন খনি কর্তৃপক্ষ। ফের সুড়ঙ্গ কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ।

জানা গিয়েছে, শুক্রবার এক দল লোক সুড়ঙ্গ দিয়ে কয়লা কাটতে ঢোকে। হঠাৎই মাটি ধসে অনেকে চাপা পড়ে যান। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এসিপি (‌সেন্ট্রাল) বরুণ বৈদ্য জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

কাজল এবং গোবিন্দের পরিবারের মুখে কুলুপ। তবে নারায়ণের শ্বশুর প্রদীপ তুরি বলেন, ‘‘ভোর ৪টে নাগাদ জামাই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। ঘণ্টা দু’য়েক পরে খনিতে চাপা পড়ার খবর পাই।’’ নারায়ণেরা সেখানে কী করতে গিয়েছিলেন জানতে চাওয়া হলে, মন্তব্য করতে চাননি প্রদীপবাবুও।

দুর্ঘটনার খবর রটতেই কিছু স্থানীয় বাসিন্দা খনি এলাকায় ভিড় করে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের দাবি, এলাকার অনেক গরিব যুবক পেটের দায়ে বেআইনি ভাবে কয়লা কাটতে যেতে বাধ্য হন। সে জন্যই এ ভাবে মৃত্যু হল তিন জনের। অবিলম্বে এলাকার যুবকদের খনিতে নিয়োগ ও অবৈধ খনন রুখতে রক্ষী রাখার দাবিতে টানা বিক্ষোভ চলে।

ইসিএল কর্তৃপক্ষের ধারণা, এ দিনের বিক্ষোভকারীদের একাংশের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের যোগ থাকা অস্বাভাবিক নয়। এক কর্তার টিপ্পনী, ‘‘আরও রক্ষী নিয়োগ হলে কয়লা চুরিতে বাধা বাড়বে। তখন আবার বিক্ষোভ না হয়!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coal Mine Tunnel Dead
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE