Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

তবু জনসমাগমের দাবি

তৃণমূলের অভিযোগ, বেলা সওয়া ৯টা নাগাদ মেমারি-তারকেশ্বর রাজ্য সড়কে হুগলির নারায়ণপুরে জামালপুরের জাড়গ্রামের একটি বাসে রাস্তার দু’দিক থেকে ইট-ঢিল ছুড়তে শুরু করে বিজেপির লোকেরা।

বর্ধমান স্টেশনে ভিড় তৃণমূল কর্মী, সমর্থকদের। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

বর্ধমান স্টেশনে ভিড় তৃণমূল কর্মী, সমর্থকদের। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৯ ০০:৫৩
Share: Save:

শাসক দলের ২১ জুলাই সমাবেশের পথে যাওয়া তৃণমূল সমর্থকদের বাস ভাঙচুর, বাস আটকানোর চেষ্টা, পাড়ায় পাড়ায় হুমকি-সহ নানা কিছুর অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে সমাবেশে যাওয়ার পথে যাত্রিবাহী গাড়িগুলির জন্য দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে মালবাহী গাড়ি আটকে দেয় পুলিশ। অন্য দিকে, রবিবার বর্ধমান শহরের দু’প্রান্তের বাসস্ট্যান্ডে বেশ কিছু বাস দেখা গেলেও যাত্রী ছিল নগণ্য।

তৃণমূলের অভিযোগ, বেলা সওয়া ৯টা নাগাদ মেমারি-তারকেশ্বর রাজ্য সড়কে হুগলির নারায়ণপুরে জামালপুরের জাড়গ্রামের একটি বাসে রাস্তার দু’দিক থেকে ইট-ঢিল ছুড়তে শুরু করে বিজেপির লোকেরা। বাসে থাকা তৃণমূল কর্মী শম্ভু কোলে, যুব নেতা রফিকুল ইসলামদের অভিযোগ, “ঢিল ছোড়ার পরে বাস আস্তে করেন চালক। বিজেপি কর্মীরা গালাগালি দিলে আমাদের কয়েক জন প্রতিবাদ করেন। তা নিয়ে প্রথমে বচসা হয়। পরে বাসের ভিতরে ঢুকে মারধর করে বিজেপি। ভাঙচুর চালানো হয় বাসেও।’’ এর পরে সেই বাস ফিরে আসে জাড়গ্রামে। সকাল সওয়া ১০টা থেকে টানা এক ঘণ্টা মাধবপুর মোড়ে ওই রাস্তা অবরোধ করে তৃণমূল। জামালপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যবস্থার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। যদিও হামলা বা ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি।

এ ছাড়া শক্তিগড়ের রেলগেট, বড়শুলের কলতলা, জামালপুরের জৌগ্রাম-সহ কিছু জায়গায় সকালে বাসে লোকজন উঠতে বাধা দেয় বিজেপি, অভিযোগ তৃণমূলের। বিজেপি অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশ সব ক্ষেত্রেই দ্রুত ব্যবস্থা নেয় ও বাস কলকাতার উদ্দেশে রওনা না হওয়া পর্যন্ত ওই সব এলাকায় পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বাঁকুড়ার ওন্দায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সমাবেশগামী বাস আটকানোর ‘হুমকি’র কথা শোনার পরেই সতর্ক হয়ে পড়েন পুলিশকর্মীরা। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে, রাজ্য সড়ক, বিভিন্ন গ্রামের রাস্তায় বাস যাতে না আটকানো হয়, তার জন্য সতর্ক ছিল পুলিশ। বিভিন্ন রাস্তার গ্রামের মোড়ে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন রাখে থানাগুলি। জেলা পুলিশের ‘পরিকল্পনা’ মতো ঠিক হয়, প্রতিটি গ্রামে এক-দু’জন করে সিভিক রাত পাহারার দায়িত্বে থাকবেন। গ্রামের বাইরে বাজার লাগোয়া এলাকায় এক জন করে পুলিশ ও চার জন সিভিক ভলান্টিয়ার থাকবেন। নির্দিষ্ট এলাকায় যাতে তাড়াতাড়ি পৌঁছনো যায়, তার জন্য নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় পুলিশের গাড়িও থাকবে।

তবে রাজ্য বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের নেতা গোলাম জার্জিস বলেন, “দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে ৭৭টি বাসকে কলকাতার সমাবেশে যেতে দেখলাম। দু’-একটি বাস ছাড়া কোনও বাসেই লোক নেই। একটা বাসে তো ছ’জন ছিলেন! তার মধ্যেও কিছু জায়গায় বাস আটকানো নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে বচসা হয় আমাদের কর্মীদের। কিন্তু পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।’’ জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক খোকন দাস বলেন, “নানা জায়গাতেই বাস আটকানো, হুমকি দেওয়া হয়েছে। বিজেপির বাধা সত্ত্বেও মানুষের সমাবেশে যাওয়া আটকানো যায়নি। বর্ধমান শহর থেকেই কয়েক হাজার মানুষ ট্রেনে করে সমাবেশে যান।’’ হাওড়া স্টেশনে জেলা তৃণমূলের তরফে শিবির করা হয়। সেখানে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ। তিনি বলেন, “সমস্ত সংশয় দূর করে মানুষ মমতাদির পাশে রয়েছেন, এটাই ফের প্রমাণিত।’’

বেলকাশ পঞ্চায়েতের তেজগঞ্জে সকালের দিকে তৃণমূলের একটি পার্টি অফিস দখলের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। বিজেপি অভিযোগ অস্বীকার করে। যদিও স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা জানান, সমাবেশ থেকে ফিরে ওই কার্যালয়টি পুনর্দখল করা গিয়েছে। পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক জনকে আটক করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC TMC Martyr's Day BJP Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE