শক্তিগড়ে জলখাবারের দোকানে ঢোকার পথে অনুব্রত মণ্ডল। — নিজস্ব চিত্র।
দোলের দিনই দিল্লি পৌঁছে যাচ্ছেন। তার আগে বর্ধমানের শক্তিগড়ে কনভয় থামিয়ে প্রাতরাশ সারলেন বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতি জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল। দোলের দিন সকালেই তাঁকে আসানসোল সংশোধনাগার থেকে বার করে কলকাতা রওনা হন জেল কর্তৃপক্ষ। পথে শক্তিগড়ে থামে কেষ্টর কনভয়। সেখানে প্রাতরাশ সারেন তিনি। তার পর আবার কনভয় দৌড়য় জোকা ইএসআই হাসপাতালের উদ্দেশে।
শান্তিনিকেতন, বর্ধমান শহর বা পশ্চিম বর্ধমানের কোনও জায়গা থেকে কলকাতা আসতে হলে শক্তিগড় দিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। ল্যাংচার জন্য বিখ্যাত শক্তিগড়ে খাওয়াদাওয়া সারতে নামাটাই দস্তুর। দোলের দিন সকালে অনুব্রতকে কলকাতার জোকা ইএসআই হাসপাতালে যখন নিয়ে যাচ্ছেন জেল আধিকারিক এবং কর্মীরা, তখনও তার ব্যতিক্রম হল না। শক্তিগড়ের একটি খাওয়ার দোকানে দাঁড়িয়ে যায় কেষ্টর গাড়ি। পুলিশি নিরাপত্তায় দোকানের ভিতরে চলে যান অনুব্রত। কিছু ক্ষণের মধ্যেই চলে আসে খাবার। চারটি করে কচুরি, সঙ্গে ঘন ছোলার ডাল। শেষপাতে ল্যাংচা এবং রাজভোগ। জল খেয়ে, মুখ মুছে কেষ্ট আবার গিয়ে বসেন পুলিশের গাড়িতে। কনভয় রওনা দেয় কলকাতার উদ্দেশে। ওই দোকানের কর্মী শেখ আমরুল হক বলেন, ‘‘অনুব্রতকে চারটি কচুরি এবং ছোলার ডাল দেওয়া হয়েছিল। তার পর স্পেশাল ল্যাংচা এবং রাজভোগ। আমাদের দোকানে উনি আগেও এসেছেন। ঝালমুড়ি আর লাল চা খেতে ভালবাসেন। কিন্তু আজ আর চা খাননি। সুগার বেশি তো!’’ যে দাপুটে অনুব্রতকে দেখতে তাঁরা অভ্যস্ত, দোলের সকালে সেই কেষ্টর সাক্ষাৎ মেলেনি বলে জানাচ্ছেন দোকানের কর্মীরা। তাঁকে মনমরা দেখাচ্ছিল বলে মনে করছেন কর্মীরা।
দোকান সূত্রে খবর, মোট বিল হয়েছিল ৯৯৫ টাকা। যদিও টাকা মেটানো নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। অনুব্রত যখন শক্তিগড়ের ল্যাংচার দোকানে প্রাতরাশ সারছিলেন, তখন তাঁর টেবিলে আরও দু’জন যুবক ছিলেন। ওই দু’জনের সঙ্গে অনুব্রতকে কথা বলতে দেখা যায়। অনুব্রতের খাবার টেবিলের সামনের চেয়ারে বসেছিলেন গেঞ্জি পরা এক যুবক। আর অনুব্রতের পাশে বসেছিলেন সবুজ পাঞ্জাবি পরা এক যুবক। ওই যুবকই দোকানের বিল মেটান। অনুব্রতের পাতে চারটে কচুরি থাকলেও তিনি তিনটে খান। আর একটি কচুরি সবুজ পাঞ্জাবি পরা যুবককের পাতে তুলে দেন। কে তিনি, তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে।
কলকাতায় অনুব্রতকে প্রথমে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করবেন। শারীরিক অবস্থার শংসাপত্র (ফিট সার্টিফিকেট) হাতে পাওয়ার পর ইডি তাঁকে আকাশপথে দিল্লি নিয়ে যাবে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে অনুব্রতের সঙ্গে এক জন চিকিৎসকও দিল্লি যাবেন। দিল্লি পৌঁছে রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে অনুব্রতকে হাজির করানো হতে পারে। দিল্লিতে রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে (আরএমএল) আবারও কেষ্টর শারীরিক পরীক্ষা করানো হবে বলে খবর। তার পর রাত ৮টা নাগাদ রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের বিচারকের বাড়িতে অনুব্রতকে হাজিরা দেওয়ানোর জন্য অনুমতি প্রার্থনা করেছে ইডি। সূত্রের খবর, ইডি অনুব্রতকে ১৪ দিনের জন্য হেফাজতে চাইতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy