Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Chaos

পুরসভার বৈঠকে কাপ ছোড়াছুড়ি, আহত নেতা

পুরসভার বৈঠকে ধুন্ধুমার বাধল কালনায়। এক কাউন্সিলরের ছোড়া কাপের ঘায়ে মুখে আঘাত পেলেন আর এক জন।

আহত শহর সভাপতি।

আহত শহর সভাপতি। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:০৩
Share: Save:

পুরসভার বৈঠকে ধুন্ধুমার বাধল কালনায়। এক কাউন্সিলরের ছোড়া কাপের ঘায়ে মুখে আঘাত পেলেন আর এক জন। কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা তৃণমূলের শহর সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে। পুরপ্রধান আনন্দ দত্ত থানায় অভিযোগ করেছেন। দশ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিল বসু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানেননি।

বুধবার সন্ধ্যায় গোলমালের খবর ছড়াতেই তেতে ওঠেন দলের একাংশের নেতা-কর্মীরা। কালনা হাসপাতাল লাগোয়া এসটিকেকে রোডে অভিযুক্ত কাউন্সিলরের শাস্তি চেয়ে পথ অবরোধ হয়। বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ গিয়ে অবরোধ তোলেন। সাড়ে ৭টা নাগাদ ফের কালনা থানা চত্বরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কালনার বিষয়টি দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে দল ব্যবস্থা নেবে।’’

এ বার প্রথম কাউন্সিলর হয়েছেন অনিল। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের দিন পুরশ্রী মঞ্চের দ্বিতল ভবন থেকে লাফ দেওয়ার চেষ্টা করে বিতর্কে জড়ান তিনি। এ দিন পুরবোর্ডের বৈঠকে ১৮ জন কাউন্সিলর হাজির ছিলেন। পুরসভা সূত্রের খবর, বৈঠকের শেষ দিকে শুরু হয় চেঁচামেচি। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাপস দাসের দাবি, তাঁর ওয়ার্ডে বেশ কিছু গভীর নিকাশি নালা রয়েছে। পুরসভায় জানিয়েও সেগুলি পরিষ্কার না হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর দফতর এবং মহকুমাশাসককে অভিযোগ করেন তিনি। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ হন জঞ্জাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর অনিল। কথা কাটাকাটি থেকে একের পর এক চিনামাটির কাপ ছোড়া শুরু হয় বলে অভিযোগ। একটি কাপ লাগে শহর সভাপতির মুখে। জ্ঞান হারান তিনি। তাপসের অভিযোগ, ‘‘এর আগে বোর্ড অফ কাউন্সিলরদের বৈঠকে চেয়ারম্যানকেও মারতে গিয়েছিলেন ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তার ভিডিয়োও রয়েছে।’’

বিকেলে শহর সভাপতিকে দেখতে হাসপাতালে যান বিধায়ক, পুরপ্রধান। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ শুরু হয় অবরোধ। অভিযুক্ত কাউন্সিলরকে গ্রেফতারের দাবি ওঠে। অবরোধে যোগ দেওয়া জেলা পরিষদের সদস্য আরতি হালদার বলেন, ‘‘কাউন্সিলরদের কাজ মানুষকে পরিষেবা দেওয়া। অথচ বোর্ড গঠনের পর থেকে কয়েক জন কাউন্সিলর অভব্যতা করছেন। তাঁদের শাস্তি চাই।’’ বিধায়ক ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধ তোলেন। পরে থানা চত্বরে বিক্ষোভ দেখিয়ে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্দীপ বসুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলা হয়। বৈঠক চলাকালীন সন্দীপ গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। থানা থেকে বেরিয়ে বিধায়ক বলেন, ‘‘শহর তৃণমূল সভাপতি সজ্জন মানুষ। তিনি আক্রান্ত হয়েছেন। সিটি স্ক্যান করানোর পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। ঘটনা দলকে জানানো হয়েছে।’’

অনিল অভিযোগ মানেননি। তাঁর দাবি, ‘‘আমি ওঁকে সম্মান করি। মারতে যাব কেন? সম্প্রতি হাসপাতালে কেন্দ্রীয় দল আসবে বলে তড়িঘড়ি সাফাই করা হয়। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে কাজ করা যায়নি। ওই কাউন্সিলর অভিযোগ তোলায় বিষয়টি জানতে চাই। উনি টেবিল চাপড়ান। হাত লেগে কোনও ভাবে আঘাত পেতে পারেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chaos Municipality Councillor Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE