জাহের শেখ। ফাইল চিত্র
শত্রু বাড়ছিল, ছায়াসঙ্গীরাও বদলে যাচ্ছিল ক্রমাগত। আত্মবিশ্বাসে তাই চি়ড় ধরেছিল জাহের শেখের। কিন্তু, পুলিশের কাছ থেকে নিরাপত্তারক্ষী পাওয়ার পর থেকে অনেকটাই গা-ছাড়া হয়ে গিয়েছিলেন কেতুগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির ওই তৃণমূল সভাপতি। ঘোরাফেরাও বেড়েছিল। রাতের অন্ধকারে সেই একা রক্ষীর ভরসায় যাতায়াতই কাল হল জাহেরের বলে মনে করছেন তাঁর পরিজনেরা।
বুধবার সন্ধ্যায় খুন হন জাহের শেখ। তার আগে দুপুরে এক সময়ের ঘনিষ্ঠ, ওই পঞ্চায়েত সমিতিরই পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ জাহাঙ্গির শেখের সঙ্গে তাঁকে কাটোয়া আদালতে এক মামলায় হাজিরা দিতে দেখা যায়। বাড়ি ফিরে বিকেল ৫টায় গিয়েছিলেন সেলুনে। সেখান থেকে মোটরবাইকে রক্ষীকে নিয়েই রায়খা পার্টি অফিস ঘুরে বাড়ি ফিরছিলেন। বাদশাহি রোডে রায়খা মোড়ের কাছেই জাহাঙ্গিরের বাড়ি। ওই বাড়ি ছাড়িয়ে ২০০ মিটার যেতেই হঠাৎ সামনে চলে আসে একটি মোটরবাইক। জাহেরের বাইক ধাক্কা মারে দু’টি গাছের মাঝে। পিছনের বাইকটি থেকে তিন জন নেমে তাঁকে ছ’টি গুলি করে বলে পুলিশ জেনেছে।
জাহেরের খুড়তুতো ভাই বাদশা শেখ কর্মাধ্যক্ষ জাহাঙ্গির, তৃণমূল নেতা সাউদ মিঞা, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য উজ্জ্বল শেখ-সহ ১২ জনের নামে খুনের অভিযোগ করেছেন। খুনের পরেই জাহাঙ্গির ও তাঁর এক আত্মীয়ের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘দু’জনকে গ্রেফতার এবং কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে।’’
যেখানে খুনের ঘটনা ঘটেছে, সেটি বরাবর জাহেরের খাসতালুক হিসাবেই পরিচিত। ফলে, কাছের লোক ছাড়া এই কাজ সম্ভব নয় বলে দাবি জাহেরের পরিবারের। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেও দায়ী করেছেন তাঁরা। সম্প্রতি একশো দিনের প্রকল্পে পুকুর কাটায় দুর্নীতির অভিযোগকে ঘিরে জাহাঙ্গির শেখের সঙ্গে ঝামেলা বাধে জাহেরের। নিহত নেতার স্ত্রী নূরনেসা বেগম বলেন, ‘‘রক্ষী আসার পরে আত্মবিশ্বাস বেড়েছিল স্বামীর। দু’দিন ধরে মোটরবাইকে বেশি ঘোরা শুরু করেছিল। নিষেধ করলেও শোনেনি। জেদে চলতে গিয়ে আমাদের অথৈ জলে ফেলে দিয়ে গেল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy