Advertisement
E-Paper

পাকা বাড়ি থাকতেও আবাসে আবেদন? তালিকায় তৃণমূল বিধায়কের মা-শাশুড়ির নাম থাকায় উত্তেজনা বর্ধমানে!

আবাস তালিকায় তৃণমূল বিধায়কের মা এবং শাশুড়ি নন, এক পঞ্চায়েত প্রধানেরও নাম না কি রয়েছে আবাস তালিকায়! যা কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:২১
TMC MLA\\\\\\\'s mother and mother-in-law\\\\\\\'s names are alleged to be in the housing scheme list in East Bardhaman

আবাস যোজনার তালিকায় তৃণমূল বিধায়কের মা এবং শাশুড়ির নাম। প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

গ্রামে তাঁদের পাকা বাড়ি আছে। অথচ, আবাস প্রকল্পে বাড়ির জন্য আবেদন করেছিলেন? আবাস তালিকায় তৃণমূল বিধায়কের মা এবং শাশুড়ির নাম থাকায় উঠছে এমনই প্রশ্ন। শুধু তাঁরা নন, এক পঞ্চায়েত প্রধানেরও নাম নাকি রয়েছে আবাস তালিকায়! যা কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষে। বিষয়টি জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন।

খণ্ডঘোষের তৃণমূল বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগের শ্বশুরবাড়ি খণ্ডঘোষের তাঁতিপাড়ায়। সেখানেই বিধায়কের শাশুড়ি এবং শ্যালকেরা থাকেন। স্থানীয়দের দাবি, তাঁদের সকলেরই গ্রামে পাকা দোতালা বাড়ি আছে। কিন্তু তার পরও নবীনের শাশুড়ি সুমিত্রা রায়ের নাম আবাসের তালিকায় জায়গা পেয়েছে। শুধু শাশুড়ি নয়, বিধায়কের মা নন্দরাণী বাগের নামও রয়েছে আবাস তালিকায়। সম্প্রতি তা জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়েরা। বিষয়টি জানতে পেরে ‘সুপার চেকিংয়ে’ নেমে পড়েছে ব্লক প্রশাসন।

এ ব্যাপারে বিধায়কের শাশুড়ি বলেন, ‘‘যখন আমাদের বাড়ি ছিল না, তখন আবাসের বাড়ির জন্য আবেদন করেছিলাম। এখন আমার ছেলেরা পাকা বাড়ি করেছে। আমার দুই ছেলে ওই পাকা বাড়িতে থাকলেও আমি মাটির বাড়িতেই থাকি।’’ যদিও বিধায়কের শ্যালক অভিজিৎ রায় বলেন, ‘‘আমরা নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করব।’’ তবে আবাস তালিকায় নাম থাকা নিয়ে বিধায়কের মায়ের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া

অন্য দিকে, আবাস তালিকায় মা এবং শাশুড়ির নাম থাকার বিষয় প্রকাশ্যে আসতেই ‘চাপে’ পড়েছেন খণ্ডঘোষের বিধায়ক। তাঁর মায়ের নাম আবাসের তালিকায় থাকা নিয়ে কিছু না বললেও শাশুড়ির নাম থাকার প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে আমার শ্বশুর বাড়ির কোনও সম্পর্ক নেই। আইনে যা হবে তাই হবে।’’

শুধু বিধায়কের মা কিংবা শাশুড়িই নয়, তৃণমূল পরিচালিত খণ্ডঘোষ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মালতি সাঁতরার নামও আবাস তালিকায় রয়েছে বলে খবর। স্থানীয় সূত্রে খবর, মালতির স্বামী হারু সাঁতরা খণ্ডঘোষ পঞ্চায়েতের আগের বোর্ডের প্রধান ছিলেন। সে সময় গীতাঞ্জলি প্রকল্পে আর্থিক অনুদান পেয়ে তিনি পাকা বাড়ি করেন। এখন নতুন যে আবাসের তালিকা প্রকাশ হয়েছে তাতে মালতির নাম কেন রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তাতেই অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক শিবির। এ বিষয়ে মালতি বলেন, ‘‘২০২২ সালে যে সমীক্ষা হয়েছিল তাতে তাঁদের নাম ছিল না। তা সত্ত্বেও নতুন তালিকায় কী ভাবে তাঁদের নাম উঠল তা জানি না। এখন আমার পাকা বাড়ি আছে, আমি আবাসের বাড়ি নেব না। আমার নামের বাড়ি অন্য কেউ পান, সেটাই আমি চাই।’’ মালতির স্বামী হারু বর্তমানে খণ্ডঘোষ অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি। তিনিও দাবি করেন, ‘‘আবাসের বাড়ির জন্য আমি আবেদনই করিনি। তবুও কী ভাবে নাম উঠল আমি জানি না। বিষয়টি জানতে পেরেই আমি বিডিওর কাছে নাম বাদ দেবার জন্য আবেদন করেছি।’’

এ ব্যাপারে জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “আবাসে অস্বচ্ছতা এ বারেও যে কাটেনি, এই সব ঘটনাই প্রমাণ। গরিবেরা নয়, তৃণমূলের রাজত্বে তারাই আবাসের ঘর ভোগ করবে। তাই আবাসের তালিকায় তৃণমূল বিধায়কের মা, শাশুড়ি এবং তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের নাম জায়গা পেয়েছে।’’ যদিও তৃণমূল মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘‘ভুলভ্রান্তি হয়তো কিছু রয়েছে। তার জন্যই তো এখনও সমীক্ষা হচ্ছে। বিষয়টি জানার পর জেলাশাসক আয়েশা রানী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কোন ব্যক্তি কী পদে আছেন, সেটা বিবেচ্য বিষয় হবে না। যেখানে অভিযোগ আছে, সেখানেই ‘সুপার চেকিং’ হচ্ছে। কারও পাকা বাড়ি থাকলে তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে।

Pradhan Mantri Awas Yojana TMC Bardhaman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy