E-Paper

ঠান্ডায় ভাটা, রস সংগ্রহে সমস্যায় শিউলিরা

প্রতি বছর শীত পড়ার অনেক আগেই কাঁকসা, বুদবুদ এলাকায় বহু শিউলি আসেন খেজুর রস সংগ্রহ করতে। কেউ আসেন মুর্শিদাবাদ থেকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ০৫:৪৯
খেজুর রস সংগ্রহ করতে ব্যস্ত এক ব্যক্তি।

খেজুর রস সংগ্রহ করতে ব্যস্ত এক ব্যক্তি। — ফাইল চিত্র।

শীতকাল এলেই নলেন গুড়ের হরেক রকমের মিষ্টিতে ভরে যায় দোকান। শীতের রাতে বাড়িতে বাড়িতে তৈরি হয় খেজুর গুড়ের নানা রকমের পিঠেপুলি। এই সময় ভাল মানের গুড়ের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। তবে বাজারে সময়ে খেজুর গুড় ও পাটালি পৌঁছে দিতে শীতের অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হয় শিউলিদের। ঠান্ডা যত বেশি হয়, গুড়ের স্বাদ ও পরিমাণ ততটাই ভাল হয়, জানাচ্ছেন শিউলিরা। কিন্তু এ বছর এখনও পর্যন্ত কনকনে শীত না পড়ায় খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের পরিমাণ কম হচ্ছে বলে দাবি কাঁকসা, বুদবুদ-সহ ভিন্‌ জেলার শিউলিদের।

প্রতি বছর শীত পড়ার অনেক আগেই কাঁকসা, বুদবুদ এলাকায় বহু শিউলি আসেন খেজুর রস সংগ্রহ করতে। কেউ আসেন মুর্শিদাবাদ থেকে। কেউ আসেন নদিয়ার মতো জেলা থেকে। মূলত নভেম্বর মাসের প্রথম দিক থেকে তাঁরা এ সব এলাকায় চলে আসেন। শিউলিদের সাথে কথা বলে জানা গিয়েছে, ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে শীত যখন পড়তে শুরু করে, তখন থেকে খেজুর রস সংগ্রহের কাজ শুরু করেন তাঁরা। সেই কাজ চলে মার্চের প্রথম দিক পর্যন্ত। মূলত চার মাস তাঁদের এই কাজ চলে।

শিউলিরা জানান, গত বছর ডিসেম্বর থেকে খুব বেশি ঠান্ডা পড়েনি এলাকায়। এ বার ডিসেম্বরের মাঝে কয়েক দিন খুব ঠান্ডা পড়লেও চলতি বছরের জানুয়ারির এখনও পর্যন্ত ঠান্ডা খুব একটা নেই। ঠান্ডা কম হলে খেজুর রস সাদা ফ্যানার মতো হয়ে যায়, যা গুড় তৈরির পক্ষে আদর্শ নয়। এখনও খুব ঠান্ডা না পড়ায় রস সংগ্রহের পরিমাণও কমে যাচ্ছে বলে দাবি নদিয়ার শিউলি হানাই শেখের। তিনি জানান, ঠান্ডা বেশি না হলে গাছে রসের পরিমাণ কমে যায়। আবার যে রস পাওয়া যায়, তার স্বাদ-গন্ধও ভাল হয় না। তা ছাড়া, গুড় তৈরি করলেও তাতে জমাট ভাব আসে না। তিনি বলেন, “চার মাসের এই কাজ। অনেক পরিশ্রম করতে হয়। কাজেই আবহাওয়া প্রতিকূল থাকলে আমাদের রুজি-রোজগারেও টান পড়বে।” কাঁকসার কুলডিহা এলাকায় প্রায় ১০০টি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন হাসিবুল মণ্ডল। তিনি জানান, প্রতিটি গাছের জন্য মালিকপক্ষকে এক কেজি করে খেজুর গুড় দেওয়া হয়। আবার অনেক জায়গায় প্রতি গাছ পিছু ১০০ টাকা করে দিতে হয় মালিককে। একটি গাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ বার রস সংগ্রহ করা যায়। গড়ে প্রতিদিন ২০ কেজির মতো খেজুর গুড় বিক্রি করেন তিনি। কেজি প্রতি ১২০ টাকা করে গুড় বিক্রি করা হয়। পাটালিও তৈরি করেন তিনি। তার কেজি ১০০ টাকা। বুদবুদের মানকরে নদিয়া থেকে এসেছেন রাজেশ শেখ। তিনি বলেনও, “ঠান্ডা যদি বেশি না পড়ে, তা হলে আমরা খুব সমস্যায় পড়ব।”

ক্রেতারাও জানিয়েছেন, আগের মতো স্বাদ-গন্ধ নেই গুড়ের।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kanksa

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy