E-Paper

অতিথিকে দেখতে ভিড় বাড়ছে ছাড়িগঙ্গায়, নজরে শব্দতাণ্ডব

কালনা-কাটোয়ার বেশ কিছু জলাশয়ে শীত পড়তেই দেখা মেলে প্রচুর পরিযায়ী পাখির। এ বার তাদের সংখ্যা আহামরি নয়।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:০১
পূর্বস্থলীর চুপিতে পরিযায়ী পাখি।

পূর্বস্থলীর চুপিতে পরিযায়ী পাখি। নিজস্ব চিত্র।

কালনার ছাড়িগঙ্গায় দেখা মিলল রাডি শেলডাক বা চখাচখি নামে পরিযায়ী পাখির। রবিবার থেকে এক ঝাঁক এই প্রজাতির পাখিকে ছাড়িগঙ্গার জলে ভেসে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে। পক্ষীপ্রেমীদের দাবি, সংখ্যায় কম হলেও শীতে কিছু চখাচখির দেখা মেলে চুপির পাখিরালয়ে। ছাড়িগঙ্গায় তাদের আসা এই প্রথম।

শীতের শুরুতে এই জলাশয়ে দেখা মেলে ব্ল্যাক উইংড স্টিল্ট নামে এক পরিযায়ী পাখির। লম্বা লম্বা লাল রঙের পায়ের জন্য যাকে অনেকে লালঠেঙ্গি নামে ডাকেন। রবিবার দেখা মেলে চখাচখির। পক্ষী বিশেষজ্ঞদের দাবি, তিন দশক ধরে এদের সংখ্যা কমছে। শীতে এরা পরিযায়ী হয়ে আসে। কালনা শহরের বাসিন্দা পক্ষীপ্রেমী নব্যেন্দু পাল জানান, ছাড়িগঙ্গায় ৩০-৩৫টি চখাচখির একটি দলকে দেখা যাচ্ছে। এরা সাধারণত জোড়ায় জোড়ায় অথবা ঝাঁকে ঘোরাফেরা করে। তাদের দেখতে, ছবি তুলতে আসছেন পর্যটকেরা। হুগলি থেকে আসা রূপনারায়ণ মণ্ডল বলেন, ‘‘ছাড়িগঙ্গায় কিছু চখাচখির দেখা মিলেছে। কালনায় এই প্রথম এদের দেখলাম। ভাল লাগছে। ওদের ছবি তুলেছি।’’

কালনা-কাটোয়ার বেশ কিছু জলাশয়ে শীত পড়তেই দেখা মেলে প্রচুর পরিযায়ী পাখির। এ বার তাদের সংখ্যা আহামরি নয়। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের বাঁশদহ বিলে গত বছর কম-বেশি ২৮টি প্রজাতির ৬৭০০ পাখির সন্ধান পেয়েছিল বন দফতর। সম্প্রতি দফতরের কর্তাদের পর্যবেক্ষণ, এখনও পর্যন্ত এই জলাশয়ে এসেছে হাজার পাঁচেক পাখি। তাদের বড় অংশই লেজ়ার হুইসলিং ডাক। দুই মহকুমার মধ্যে সব থেকে বেশি পরিযায়ী পাখির দেখা মেলে চুপির ছাড়িগঙ্গায়। এখানে দেখা যায় প্রায় ৬০টি প্রজাতির দশ হাজারেরও বেশি পাখি। এ বার এই জলাশয়ে পাখিদের বিচরণে বাধা কচুরিপানা। সম্প্রতি মাঝিদের উদ্যোগে সে সব পরিষ্কার হয়।

মাঝিদের দাবি, পাখির সংখ্যা বাড়ছে। চুপি পাখিরালয় পর্যটকদের কাছে বিখ্যাত রেড ক্রেস্টেড পোচার্ড-এর জন্য। এদের সংখ্যা বেড়েছে। ফলে পর্যটকদের ভিড়ও বাড়ছে। কাটোয়া মহকুমায় ক্ষীরগ্রাম, করজগ্রাম, দাঁইহাটের বিলে পরিযায়ী পাখিদের দেখা মেলে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, করজগ্রাম বিলে দেখা মিলেছে কিছু লেজ়ার হুইসলিং ডাক-এর।

শীতের কামড় তীব্র হলেও পরিযায়ীদের সংখ্যা এ বার কম কেন? তারা কি তবে অন্য কোথাও যাচ্ছে?

বন দফতরের দাবি, গত বছর থেকেই পরীযায়ী পাখির আগমনে বিলম্ব হচ্ছে। সেই কারণে গত বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল পাখি গণনা। এ বার ২৫ ডিসেম্বর-১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বিশেষ নজরে রাখা হচ্ছে। বন দফতরের কাটোয়ার রেঞ্জ আধিকারিক শিবপ্রসাদ সিংহ বলেন, ‘‘গত বছর থেকে নয়াচর-সহ নদীর চর এলাকায় বেশ কিছু পরিযায়ী পাখি আসতে শুরু করেছে। এ বারও শব্দের তাণ্ডব না থাকায় কয়েকটি চরে পরিযায়ীদের দেখা যাচ্ছে বলে জেনেছি। এই সব পাখিদের এখনও পর্যন্ত গণনার মধ্যে আনা হয়নি।’’ তিনি জানান, গণনার পরেই বোঝা যাবে পরিযায়ীরা ঠিকানা বদলাচ্ছে কিনা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kalna

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy