দুর্ঘটনার পরে গোলমাল। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
বাইপাসের আন্ডারপাস পারাপার করার সময়ে পথ দুর্ঘটনায় এক ছাত্রীর মৃত্যু হল। বৃহস্পতিবার পানাগড় বাইপাসের সোঁয়াই আন্ডারপাসের ঘটনা। এই ঘটনার পরে উত্তেজিত জনতার একাংশ সিভিক ভলান্টিয়ারকে মারধর এবং এক পুলিশকর্মীর মোটরবাইকে আগুন ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। প্রায় ঘণ্টা দু’য়েক জাতীয় সড়ক অবরোধও করা হয়।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা নাগাদ বুদবুদের পণ্ডালি গ্রামের বাসিন্দা প্রদীপ রায়ের বড় মেয়ে, দশম শ্রেণির ছাত্রী অনন্যা রায় (১৫) সাইকেলে করে পানাগড়ে টিউশন পড়তে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বার হয়। এলাকা সূত্রে জানা যায়, পানাগড় বাইপাসের সোঁয়াই আন্ডারপাস পার করার সময়ে সার্ভিস রোড ধরে আসা দুর্গাপুরগামী একটি ট্রাক অনন্যার সাইকেলে ধাক্কা মারে। লুটিয়ে পড়ে অনন্যা। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে এলাকাবাসী পানাগড় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানেই চিকিৎসকেরা ওই ছাত্রীকে মৃত বলে জানান।
ছাত্রীর মৃত্যুর খবর চাউর হতেই ঘটনাস্থলে চলে আসেন সোঁয়াই ও পণ্ডালি গ্রামের বহু মানুষ। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলে থাকা এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে মারধর করা হয়। বুদবুদ থানার এক পুলিশকর্মীর মোটরবাইকে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
পুড়ল বুদবুদ থানার এক পুলিশকর্মীর মোটরবাইকও। নিজস্ব চিত্র
দুর্ঘটনার পরেই এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, পানাগড় বাইপাসের বিভিন্ন মোড়ে পুলিশ মোতায়েন থাকে। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে অনেক ট্রাক চালকই সার্ভিস রোড ধরে দ্রুতগতিতে চলাচল করে। এ দিনের দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রাকটিও এই কারণেই এ পথে যাতায়াত করছিল বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, ঘটনার সময়ে আন্ডারপাসে কোনও সিভিক ভলান্টিয়ারকেও দেখা যায়নি বলে অভিযোগ।
দুর্ঘটনার পরেই ট্রাকটি দ্রুত গতিতে চম্পট দেয়। স্থানীয় বাসিন্দা সুব্রত ভট্টাচার্য, সুবোধ মণ্ডলদের অভিযোগ, ‘‘জায়গাটি খুবই দুর্ঘটনাপ্রবণ। অথচ, ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ বা সিভিক ভলান্টিয়ারকে সব সময় এখানে দেখা যায় না।’’ এই ঘটনার পরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’টি লেনই অবরোধ করেন এলাকাবাসী। কাঁকসা ও বুদবুদ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এলাকায় চলে আসেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী, এসিপি (কাঁকসা) কমল বৈরাগ্য, এসিপি (ট্র্যাফিক) স্বাতী সামন্ত। এলাকার বাসিন্দারা পুলিশকর্তাদের ঘিরে ধরেও বিক্ষোভ দেখান। এলাকাবাসীর দাবি, সার্ভিস রোডে বড় গাড়ির যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ট্র্যাফিক সামলানোর জন্য সর্বক্ষণের কর্মী রাখতে হবে। ডিসি অভিষেকবাবুর বক্তব্য, ‘‘এলাকাবাসীর দাবিগুলি আমরা খতিয়ে দেখছি।’’
কিন্তু পুলিশের নজর এড়ানো কেন? ট্রাক চালকদের একাংশের অভিযোগ, অনেক সময়েই অকারণে পুলিশ তাঁদের ‘হয়রান’ করে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। এ দিন অবরোধের জেরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’দিকেই বহু বাস, ট্রাক, ছোটগাড়ি আটকে পড়ে। প্রায় ঘণ্টা দুয়েক অবরোধের পরে পুলিশি আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy