Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Marriage

জেলে দেখা, জেলেই প্রেম, কারামন্ত্রীর ‘ছাড়পত্রে’ চার হাত এক করলেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ

জেলবন্দি আব্দুলের বাড়ি অসমের দোরাং জেলার দলগাঁও থানার রঙ্গনগারোপাথার গ্রামে। শাহানারা বীরভূমের নানুর থানার উচকারণ-বালিগড়ির বাসিন্দা। তাঁরা ৮ এবং ৬ বছর ধরে বন্দি রয়েছেন।

বিয়ের দিন আব্দুল হাসিম এবং শাহানারা খাতুন।

বিয়ের দিন আব্দুল হাসিম এবং শাহানারা খাতুন। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৩ ১২:৪৩
Share: Save:

প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে— সেই ‘ফাঁদ’ যে জেল পর্যন্ত বিস্তৃত তা বোঝালেন দুই বন্দি আব্দুল হাসিম এবং শাহানারা খাতুন। সংশোধনাগারে সহবন্দিকে জীবনসঙ্গী করতে চেয়েছিলেন আব্দুল। সহবন্দি শাহানারা রাজি ছিলেন আগেই। কারামন্ত্রী অখিল গিরি তাঁদের আবেদন মঞ্জুর করায় জেলেই দুই বন্দির প্রেম পেল পরিণতি। সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে দুই কয়েদির চার হাত এক হল। ঘটনাস্থল বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার।

জেলবন্দি আব্দুলের বাড়ি অসমের দোরাং জেলার দলগাঁও থানার রঙ্গনগারোপাথার গ্রামে। শাহানারা বীরভূমের নানুর থানার উচকারণ-বালিগড়ির বাসিন্দা। মানবাধিকার সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির প্রতিনিধিদের সূত্রে খবর, একটি ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত হাসিম ৮ বছর ধরে সংশোধনাগারে বন্দি। অন্য দিকে, খুনের মামলায় ৬ বছর ধরে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে রয়েছেন শাহানারা। জেলেই হাসিমের সঙ্গে পরিচয় শাহানারার। সেখানেই বন্ধুত্ব এবং প্রেম। তাঁদের এই সম্পর্কে কখনও বাধা হয়ে দাঁড়াননি জেল কর্তৃপক্ষ। বরং তাঁদের উদ্যোগেই কয়েক দিন আগে দম্পতির পরিচয় পেলেন দুই বন্দি। তাঁদের বিয়েতে সাহায্য করল পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি।

হাসিম এবং শাহানারা জানান, বন্দিদশাতেই তাঁদের প্রেম হয়। দু’জনেই বিয়ে করতে চান। খবর যায় দুই পরিবারের কাছে। সবাই রাজি। এর পর বিয়ের জন্য একটি মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন হাসিম। শাহানারার বাবা বন্দি মেয়ের ইচ্ছার কথা মানবাধিকার সংগঠনকে জানান। বিয়ের অনুমতি পেতে গত ১৬ জুন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরির দ্বারস্থ হন তাঁরা। সেই আবেদন মঞ্জুর হতেই শুরু হয় বিয়ের তোড়জোড়। তার পর গত বুধবার মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে আইনি ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন আব্দুল-শাহানারা। কয়েক দিনের জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বীরভূম বেড়াতে গিয়েছেন নবদম্পতি। তাঁদের কথায়, “কপাল দোষে শ্রীঘরবাসী হয়েছি। এখন আমরা মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছি। মুক্তি পেলেই সুখের সংসার গড়ব।’’ মানবাধিকার সংগঠনের পদস্থ কর্তা শামসুদ্দিন শেখ বলেন,“দুই বন্দি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চেয়েছিলেন। তা নিয়ে তাঁদের পরিবার কারামন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়। আবেদন মঞ্জুর হতে প্যারোলে মুক্তি পান দু’জন। আবার ১৬ জুলাই তাঁদের সংশোধনাগারে ফিরে যেতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Marriage Inmates correctional home Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE