চলছে উদ্ধারের চেষ্টা। রবিবার ব্যারাজে। নিজস্ব চিত্র
চাকরির সূত্রে দিন কয়েক আগে এসেছিলেন দুর্গাপুরে। কালীপুজোর দিন সকালে দুর্গাপুর ব্যারাজে দামোদরে স্নান করতে নেমে তলিয়ে গেলেন খড়্গপুরের দুই তরুণ। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চালিয়েও তাঁদের খোঁজ পায়নি বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের দল ও পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি বেসরকারি সংস্থার বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রির কাজে দুর্গাপুরে এসেছিলেন বছর একুশের রাহুল বাগমার ও বছর কুড়ির মহম্মদ মহসিন। আরও কয়েক জন যুবকের সঙ্গে দুর্গাপুরের কোকআভেন থানা এলাকার রবীন্দ্রপল্লিতে ভাড়া থাকছেন তাঁরা। এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ জনা আটেক যুবক ব্যারাজের কাছে দামোদরে স্নান করতে যান। টানা বৃষ্টির পরে দামোদর এখন জলে ভরা। ওই দুই যুবকের সঙ্গীরা জানান, স্নান সেরে তাঁরা উঠে এলেও রাহুল ও মহসিন তলিয়ে যান।
খবর পেয়ে দুর্গাপুরের কোকআভেন থানা ও বাঁকুড়ার বড়জোড়া থানার পুলিশ পৌঁছয়। কিন্তু ডুবুরি না থাকায় সঙ্গে-সঙ্গে উদ্ধারকাজ শুরু করা যায়নি। খবর দেওয়া হয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে। তারা আসার পরে শুরু হয় তল্লাশি। কিন্তু হদিস মেলেনি দু’জনেরই। রবীন্দ্রপল্লিতে ওই যুবকদের সঙ্গেই থাকেন রোহিত ভগত। তিনি অভিযোগ করেন, খবর দেওয়ার অনেক পরে পুলিশ আসে। উদ্ধারকাজ শুরু হয় আরও পরে। যদিও দেরিতে আসার কথা পুলিশ মানতে চায়নি। আজ, সোমবার ফের উদ্ধারকাজ চালানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খড়্গপুর শহরের ট্রাফিক এলাকায় রেল আবাসনে বাস রাহুলের পরিবারের। তাঁর বাবা দেবিদীন বাগমার পেশায় রেলকর্মী। এ দিন খবর পেয়েই তিনি দুর্গাপুর রওনা হন। মা ফুলোচনাদেবী ও কিশোরী বোন কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। পরিজনেরা জানান, ১৪ অক্টোবর দুর্গাপুরে চাকরিতে যোগ দিতে গিয়েছিলেন রাহুল। তাঁর জেঠতুতো দাদা অনিল বাগমার বলেন, “ভাই বিষ্ণুপুর পলিটেকনিক থেকে পড়া শেষ করে এই চাকরিতে গিয়েছিল। খারাপ কিছু হলে কাকা-কাকিমাকে কী ভাবে সামলাব জানি না!”
খড়্গপুরের পাঁচবেড়িয়ার রহমাননগরের বাসিন্দা মহম্মদ হুসেন ও সালমা বেগমের দুই ছেলের মধ্যে মহসিন বড়। দুর্গাপুর রওনা হয়েছেন পেশায় দর্জি হুসেনও। মহসিনের মাসি আলিমা বেগম বলেন, “খবর পেয়ে আমি কেশপুর থেকে ছুটে এসেছি। আমার ছেলেও দুর্গাপুরে ওই সংস্থায় কাজ করে। খড়্গপুর কলেজে প্রথম বর্ষে পড়ার সময়েই চাকরি পেয়ে যাওয়ায় দুর্গাপুরে গিয়েছিল মহসিন। স্নান করতে নেমে আমার ছেলে নদী থেকে উঠে এলেও ওদের দু’জনের খোঁজ নেই। সবাই খুব চিন্তায় আছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy