আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল চিত্র
শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী নিয়োগ থমকে রয়েছে। রয়েছে পরিকাঠামোর অভাবও, অভিযোগ আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশের। এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে কী ভাবে, সে বিষয়ে তোড়জোড় চলছে, দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।
শিক্ষকদের একাংশের আশঙ্কা, ধারাবাহিক ভাবে অভাব-অভিযোগ সামনে আসায় মেধাবী পড়ুয়াদের এই বিশ্ববিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্ত ২৬টি কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হতে পারে। যদিও এ যুক্তি মানতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬টি বিভাগে হাজার হাজার পড়ুয়া ভর্তি হচ্ছেন। বছরভর আয়োজিত হচ্ছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আলোচনাসভা, কর্মশালা। সেখানে যোগ দিচ্ছেন দেশ-বিদেশের বিশিষ্টরা। যেমন, চলতি বছরেই ভগিনী নিবেদিতাকে নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাসভা আয়োজন করেছিল ইংরেজি বিভাগ। সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ আয়োজন করেছিল আলোচনাসভার। তাতে আইআইটি-র শিক্ষকেরাও যোগ দিয়েছিলেন।
তা ছাড়া ফি বছর, ঘটা করে সমাবর্তন উৎসব আয়োজিত হচ্ছে। সেখানে কখনও যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো ব্যক্তিত্বেরা।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল বিভাগের পড়ুয়ারা লাগাতার বিক্ষোভ শুরু করেছেন। তাঁরা জানান, এই বিষয়ে এক জনও স্থায়ী শিক্ষক নেই। নেই পরীক্ষাগার। ফলে উচ্চশিক্ষায় তাঁরা অসুবিধায় পড়ছেন। এমনকি, ওই বিভাগের পড়ুয়ারা সন্ধ্যা পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান। সমস্যার পথ খুঁজতে প়়ড়়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন স্বয়ং উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী। কিন্তু তাতেও লাভ কতটা হয়েছে, তা নিয়ে সন্দিহান বিভাগের পড়ুয়াদের একাংশ। তা ছাড়া সম্প্রতি একাধিক কলেজের পরীক্ষার্থীরা দেরি করে পরীক্ষার ফল প্রকাশের অভিযোগে ঘণ্টা দুয়েক জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে এ যাবৎ ছাত্রাবাসও তৈরি হয়নি।
উপাচার্য জানান, কন্ট্রোলার বিভাগে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আসলে স্থায়ী কন্ট্রোলার না থাকায় সমস্যা বাড়ছে। উচ্চশিক্ষা দফতরকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। আশা করি, দ্রুত সমস্যা মিটবে। তবে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে বলেই জানান সাধনবাবু। তিনি জানান, ইউজিসি-র মাপকাঠি অনুযায়ী শিক্ষক পাওয়াটা সমস্যার। বার বার বিজ্ঞাপন দিয়েও লাভ হচ্ছে না। অস্থায়ী শিক্ষকদের দিয়ে কাজ চালানোর চেষ্টা হচ্ছে, কিন্তু সেখানেও ঘাটতি থাকছে। শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ব্যাপারে উপাচার্যের দাবি, ‘‘উচ্চশিক্ষা দফতরে অনেকগুলি পদের অনুমোদন চেয়ে চিঠি লেখা হয়েছে। সেগুলি এখনও পাওয়া যায়নি।’’
যদিও ডিন ঠিক করার মতো কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ করা হয়েছে বলেই জানান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সাধনবাবু বলেন, ‘‘আমার বিশ্বাস আগামী ছ’মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সমস্যাগুলির স্থায়ী সমাধান হয়ে যাবে।’’ (শেষ)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy