Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৩
Mamata Banerjee

বরাদ্দে কুলোবে তো! প্রশ্ন পথশ্রী প্রকল্পে

জেলা প্রশাসনেরও দাবি, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রাস্তার কাজ হবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২০ ০৩:০৮
Share: Save:

প্রতিদিন জেলা জুড়ে নানা গ্রামীণ রাস্তার পুনর্গঠন ও সংস্কারের কাজের উদ্বোধন হচ্ছে। নির্দেশ অনুযায়ী, ডিসেম্বরের মধ্যে সব রাস্তা শেষ করতে হবে। কিন্তু জেলায় পথশ্রী প্রকল্পের ৭৩৯টি রাস্তার জন্য যে ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে, তাতে কাজ কতটা হবে, উঠেছে সে প্রশ্ন। বিরোধীদের দাবি, ওই টাকায় প্রস্তাবিত সব রাস্তার সংস্কার ও পুনর্গঠন এক কথায় অসম্ভব। বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে শাসক দল ‘ছেলে ভোলানো’ খেলায় মেতেছে, অভিযোগ তাঁদের। যদিও বিরোধীদের অভিযোগকে পাত্তা দিতে নারাজ তৃণমূল।

জেলা প্রশাসনেরও দাবি, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রাস্তার কাজ হবে। সেই মতো পরিকল্পনা ‘নবান্ন’-এ পাঠানো হয়েছে। জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, “অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রাস্তার কাজ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ করব।’’ তিনি জানান, গ্রামের মানুষ যে সব রাস্তা বেশি ব্যবহার করেন, যে রাস্তায় স্কুল, অঙ্গনওয়াড়ি, স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে, যে রাস্তা ধরে মানুষ কৃষক বাজার, হাট, খেতজমি, হিমঘর, চালকলে যান সেই সব রাস্তাকেই ‘অগ্রাধিকার’ দেওয়া হচ্ছে।

১ অক্টোবর এই প্রকল্পের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পূর্ব বর্ধমানের ৭৩৯টি রাস্তা রয়েছে তাতে। যার মধ্যে জেলা পরিষদেরই ৮৮টি রাস্তা, যাদের মিলিত দৈর্ঘ্য ৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি। জেলার বিভিন্ন ঠিকাদারদের দাবি, এক কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার করতে অন্তত ১০-১২ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। তবেই কয়েক মাসের জন্য রাস্তা চলাচলের উপযুক্ত হবে। সেখানে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ১২ কোটি টাকায় কার্যত কোনও কাজই হবে না, দাবি তাঁদের।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ‘নবান্ন’-এর সঙ্গে একটি বৈঠকে জেলার তরফে কয়েকটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এক) নতুন রাস্তার তালিকা পথশ্রী প্রকল্পে আনতে হবে। দুই) মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে রাস্তা সংক্রান্ত অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রয়োজন। তিন) এই প্রকল্পে পাঁচ কিলোমিটারের বেশি রাস্তা নেওয়া উচিত নয়। চার) জেলা পরিষদ থেকে পূর্ত দফতরের হাতে যে সব রাস্তা চলে গিয়েছে, সে সব রাস্তা এই তালিকায় আনা ঠিক হবে না। পাঁচ) যে সব রাস্তা দিয়ে প্রচুর পরিমাণ বালির গাড়ি যায়, সে সব রাস্তাগুলিকে চিহ্নিত করে ‘পিপিপি’ মডেলে করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে কেতুগ্রাম ২ ব্লকের রসুই থেকে ভুলকুড়ি, এই রাস্তার কথা বিশেষ ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ছয়) পঞ্চায়েত যে সব রাস্তায় টোল আদায় করে, সেই সব রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের দায় পঞ্চায়েতের নেওয়া উচিত। প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, ওই টাকার সঠিক ‘ব্যবহার’ করার জন্য পরিকল্পনা করে এগোতে হচ্ছে।

বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সন্দীপ নন্দীর কটাক্ষ, “উদ্বোধন-শিলান্যাসের ছড়াছড়ি। অথচ, বরাদ্দের বেলায় লবডঙ্কা!’’ তৃণমূলের জেলা কমিটির চেয়ারপার্সন, প্রাক্তন সাংসদ মমতাজ সঙ্ঘমিতার দাবি, “মানুষ উন্নয়ন দেখতে পান, তাতে সামিলও হন। বিরোধীরা সেই উন্নয়নের পথেই হাঁটেন, কিন্তু স্বীকার করতে কষ্ট পান।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE