পালিটায় জিরো টিলেজ পদ্ধতিতে চলছে গম চাষ। নিজস্ব চিত্র।
ধান তোলার পরে বেশ কিছু দিন সময় চলে যেত জমি তৈরিতে। তার পরে জমিতে শুরু হতো গম চাষ। এর ফলে অকারণে সময় নষ্ট হতো বেশ খানিকটা। সমস্যা সমাধানে এ বার কেতুগ্রামের ছ’জন চাষি বিজ্ঞানসম্মত ভাবে শুরু করলেন ‘জিরো টিলেজ’ বা বিনা কর্ষণ পদ্ধতিতে গম চাষ।
কেতুগ্রামের পালিটার উদয়ন ঘোষ, তিলডাঙার পরেশচন্দ্র পাল, দিলীপ দত্ত, সুশান্ত দাস, নাথন ঘোষ এবং নারেঙ্গার দীনেশ ঘোষ ২৬ বিঘা জমিতে গমের চাষ করছেন এই পদ্ধতিতে। এর আগে তাঁরা বেলুড়ের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ওই ছয় চাষি জানান, নভেম্বরের শেষে ধান ওঠার পরে জিরো টিলেজ মেশিনের মাধ্যমে ব্লক থেকে পাওয়া বিঘা পিছু ১৪ কেজি করে গম বীজ পোঁতা হয়।
এউ পদ্ধতিটি কেমন? জেলার এক কৃষি আধিকারিক জানান, ট্রাক্টরের সঙ্গে লাগানো ‘জিরো-টিলেজ’ যন্ত্রের নীচের দিকে ৬ থেকে ১১টি ফাল থাকে। উপরের দিকে দু’টি বাক্সের একটিতে ধান বা গমের বীজ ও অন্যটিতে থাকে সার। প্রতিটি বাক্স থেকে ফালের গা বারাবর দু’টি পাইপ যুক্ত থাকে। ট্রাক্টর জমিতে চলতে শুরু করলে ফালগুলি মাটি খুঁড়ে একটা গভীর দাগ দিয়ে যায়, আর সেই সঙ্গে পাইপ বেয়ে প্রয়োজনীয় বীজ ও সার জমিতে পড়তে থাকে।
এই পদ্ধতির প্রধান সুবিধা কী? দিলীপবাবুরা জানান, কর্ষণের মাধ্যমে চাষ করা হলে যেখানে বিঘা পিছু ন্যূনতম চার বার সেচ দিতে হয়। সেখানে এই পদ্ধতিতে দুই থেকে তিন বার সেচ দিলেই চলে। এই পদ্ধতিতে কোনও কৃষি শ্রমিকেরও প্রয়োজন হয় না। ওই চাষিদের দাবি, সাধারণ পদ্ধতিতে ২৬ বিঘায় চাষের খরচ প্রায় দেড় লাখ টাকা। সেখানে বিনা কর্ষণ পদ্ধতিতে খরচ মাত্র ১৮ হাজার টাকায়। পরেশবাবুদের আশা, ‘‘লিজ নেওয়া জমিগুলিতে ধান ছাড়া কোনও চাষ করতে পারতাম না। এ বার গম ফলিয়ে লাভের মুখ দেখব।’’
ব্লক কৃষি আধিকারিক বিপ্লব বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই জমিতে সব্জি চাষেরও চিন্তাভাবনা রয়েছে। এ বছর বেশি লাভ হলে অন্যান্য গ্রামেও জিরো টিলেজ পদ্ধতিতে চাষে উৎসাহ দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy